E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টানা অবরোধ-হরতালেও সচল মংলা বন্দর

২০১৫ জানুয়ারি ২১ ১৮:৪২:৩৫
টানা অবরোধ-হরতালেও সচল মংলা বন্দর

বাগেরহাট প্রতিনিধি : দেশব্যাপী টানা অবরোধ-হরতালের মধ্যে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম সচল থাকলেও পণ্য আমদানী-রপ্তানী দারুন ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে আমদানী-রপ্তানীকারকরা মংলা বন্দরে পণ্য পরিবহনে সড়কের পথে-পথে বাধা ও প্রেট্রোল বোমার মুখে পড়ছে। হামলা ও ভাংচুরের ভয়ে অনেক আমদানী-রপ্তানীকারকের পক্ষে মংলা বন্দর থেকে পণ্যবাহি ট্রাক বা কন্টেইনার আনা নেয়া করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে বন্দরে কন্টেইনার জট লেগেছে। মংলা বন্দরে কর্তৃপক্ষের  ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, টানা অবরোধ ও হরতালের মধ্যেও দুইটি কন্টেইনারবাহী জাহাজ এ বন্দরে এসেছে ও পণ্য নিয়ে ছেড়ে গেছে। তবে এখনো বন্দরে হিমায়িত খাদ্যের ৮টিসহ ছোট বড় ৭৯টি কন্টেইনার রয়েছে। যা জানুয়ারী শেষ ভাগের মধ্যেই জাহাজীকরণের সময় নির্ধারিত রয়েছে।

বন্দর সূত্র জানায়, মংলা বন্দর থেকে প্রধানত কাঁচা পাট, পাটজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, টাইলস ও হাড়ের গুড়া রপ্তানী হয়। আমাদনী হয় খাদ্য সামগ্রী, গাড়ি, সিমেন্ট তৈরীর ক্লিংকার ও পন্য তৈরীর কাঁচামাল। এর মধ্যে কাঁচা পাট, পাটজাত পণ্য ও হিমায়িত খাদ্য ফ্যাক্টরী থেকে মংলা বন্দরে পৌছানো ও আমদানীকৃত পন্য আনতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে আমদানী-রপ্তানীকারকরা। হিমায়িত খাদ্য রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান বাগেরহাটের লখপুর গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর উপ মহা ব্যবস্থাপক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, মংলা বন্দরে সড়ক পথে কন্টেইনার পাঠানোটাই এখন অনেকটাই ঝুকিপূর্ন। ইতোমধ্যে আমাদের হিমায়িমত চিংড়ি বোঝাই কন্টেইনার গাড়ি ভাংচুর হয়েছে। ভাংচুরের ভয়ে কন্টেইনারবাহী গাড়ি মংলা বন্দরে পাঠাতে সম্ভব হচ্ছে না। মজুদ রয়েছে অনেক কন্টেইনারবাহী গাড়ি। অন্যদিকে আমদানীকৃত পন্য ছাড় করা সম্ভব হচ্ছেনা।
সাউদার্ণ সী ফুডস এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ সফিউল্লাহ খান বলেন, বর্তমান সাড়ে ৮ কোটি টাকার ৪ কন্টেইনার হিমায়িত চিংড়ি স্টোরে মজুদ পড়ে আছে। এই চিংড়িগুলো গত ৮ জানুয়ারী শিপমেন্ট করার কথা ছিলো। কিন্তু রাস্তায় ভাংচুরের ভয়ে কন্টেইনারবাহী গাড়ি বের করা সম্ভব হয়নি। এখন প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে। এদিকে খুলনা অঞ্চল বিপুল পরিমান কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য মংলা, চট্টগ্রাম নৌ বন্দর ও বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে রপ্তানী করা হয়। কিন্তু টানা অবরোধ ও হরতালে বন্দর পর্যন্ত পাট পৌছানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে বিপুল পরিমান রপ্তানীযোগ্য পাট গুদামে পড়ে আছে। এতে ব্যাংক সুদের পরিমান বাড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাট ব্যবসায়ীরা।

মংলা বন্দর ব্যবহারকারী শিপিং ব্যবসায়ী শেখ বদিউজ্জামান টিটু বলেন, রপ্তানীযোগ্য বিপুল পরিমান পাট গুদামে মজুদ আছে। কিন্তু ট্রাকে করে মংলা বন্দরে পাঠানোর সাহস হচ্ছে না কেউই। ব্যাংকগুলো ঝুকি নিয়ে বন্দরে পাট পাঠাতে নিষেধ করছে। এত কিছুর মধ্যেও কয়েকজন রপ্তানীকারক সুযোগ বুঝে কিছু পাট বন্দরে পাঠাচ্ছে। এ ব্যাপারে মংলা বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) গোলাম মোক্তাদের বলেন, অবরোধের কারনে বন্দরের দৈনন্দিন কর্যাক্রমে তেমন কোন প্রভাব পড়েনি।
এদিকে টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে মংলা বন্দরের শিল্পাঞ্চল এলাকায় অবস্থিত সিমেন্টসহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরীর উৎপাদিত পণ্য সড়ক পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ চরম ভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মংলার দুবাই বাংলাদেশ সিমেন্ট মিলস এর নির্বাহী পরিচালক শামিম হোসেন জানান, টানা অবরোধের কারণে তাদের সিমেন্টের চাহিদা অনেক কমে গেছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ট্রাক যোগে সিমেন্ট পাঠানো যাচ্ছে না। তাদের সরবরাহ না থাকায় উৎপাদন প্রায় শূণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এমন আবস্থা মংলার অন্য সিমেন্ট মিলগুলোরও। এতে করে দৈনিক তাদের মোটা অংকের টাকা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হােত হচ্ছে।

(একে/পি/জানুয়ারি ২১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test