E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টানা অবরোধে বিপর্যয়ের মুখে সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্প

২০১৫ জানুয়ারি ২১ ২২:৩৪:১২
টানা অবরোধে বিপর্যয়ের মুখে সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্প

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধ ও হরতালে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্প। পরিবহন জটিলতায় রং-সুতাসহ তাঁতবস্ত্র উৎপাদনের প্রয়োজনীয় উপকরণ না পাওয়া ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে না পারায় মুখ থুবড়ে পড়ছে এ শিল্প।

ইতিমধ্যে জেলায় প্রায় ৩০% তাঁত ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়ে পড়ছে এর সাথে জড়িত শ্রমিকেরা। কিস্তি পরিশোধ করতে না মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সিরাজগঞ্জের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার অন্যতম মাধ্যম তাঁতশিল্পে ধ্বস নামার আশংকা করছেন সংশ্লিরা। এতে জেলার অর্থনীতিতের সাথে সাথে জাতীয় অর্থনীতিতে মারাত্বক প্রভাব পড়বে বলে অনেকেই মনে করছে।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড সিরাজগঞ্জ বেসিক অফিস ও পাওয়ালুম এন্ড হ্যান্ডলুম তাঁতমালিক সমিতির প্রাপ্ত সূত্রমতে, জেলায় প্রায় ৩ লাখ পাওয়ারলুম ও দেড় লাখ হস্তচালিত (হ্যান্ডলুম) তাঁত রয়েছে। এর সাথে ১৫ লাখ মালিক-শ্রমিকের জীবিকা জড়িত। এ অঞ্চলগুলো থেকে উৎপাদিত তাঁতপণ্য স্থানীয় হাটের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে ভারত এবং পাশ্ববর্তী দেশগুলোতেও রপ্তানি হয়। জেলার অন্যতম ৪টি কাপড়ের হাটে হাট প্রতি প্রায় কোটি টাকার কাপড় বিক্রি হলেও তা একেবারে বিক্রি নেই বললেই চলে।

সিরাজগঞ্জ পাওয়ারলুম এ্যান্ড হ্যান্ডলুম তাঁতমালিক এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী আব্দুল বাকী জানান, অবরোধের কারণে নারায়নগঞ্জ থেকে সুতা ও চট্টগ্রাম থেকে রংসহ তাঁতশিল্পের কাচামাল চাহিদামতো আমদানি না হওয়ায় বেশিরভাগ কারখানার উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে। এছাড়াও দুর-দুরান্ত থেকে পাইকারা আসতে না পারায় কাপড় ব্যবসায়ীরা তাদের উৎপাদিত শাড়ী, লুঙ্গি, গামছা, শার্ট পিছ ও থ্রি-পিছ বিক্রি করতে পাড়ছেনা। প্রান্তিক তাঁতীরা ঠিকমতো শ্রমিককে মজুরী দিতে না পারায় বাধ্য হয়ে ফ্যাক্টরী বন্ধ করে দিচ্ছে। গত দুই সপ্তাহে জেলার ৩০ ভাগ তাঁতফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে গেছে।
শাহজাদপুর হাটের কাপড় ব্যবসায়ী আলহাজ্ব হারুন-অর-রশিদ জানান, এ হাট থেকে প্রতি সপ্তাহে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার শাড়ী ভারতে যেত। ভারত থেকে কোন বেপারী না আসায় মরার উপর খাড়া ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এনায়েতপুর হাট বনিক সমিতির নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদ জানান, বাইরের জেলার কোন পাইকার আসতে না পারায় গত শুক্রবার এনায়েতপুর হাট থেকে অধিকাংশ কাপড় ফিরিয়ে নিয়ে গেছে তাঁতীরা।
বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড সিরাজগঞ্জ বেসিক অফিসের লিয়াজোঁ অফিসার রাধা শ্যাম রায় জানান, তাঁতবোর্ড থেকে প্রান্তিক তাঁতীদের মাঝে মোট ৫ কোটি ৫ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। অবরোধের কারণে প্রান্তিক তাঁতীদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে না পারায় তারা কিস্তি দিতে পারছে না।
সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালক জিহাদ আল ইসলাম বলেন, হরতাল-অবরোধের কারণে দেশের মধ্যে প্রসিদ্ধ সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্প ব্যাপক হুমকির মুখে পড়েছে।

(এসএস/এসসি/২১,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test