E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আলোচিত সেভেন মার্ডার: ৫ পরিবারের আর্তনাদ কেউ শুনছে না

২০১৪ মে ০৮ ২১:৪৬:০২
আলোচিত সেভেন মার্ডার: ৫ পরিবারের আর্তনাদ কেউ শুনছে না

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ চাঞ্চল্যকর ৭ হত্যাকান্ডের মধ্যে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও এডভোকেট চন্দন সরকার ছাড়া বাকিদের খোঁজ কেউ রাখছেন না। কেউ শুনছে না তাদের স্বজন হারানোর বেদনার আর্তনাদ। নিহতদের পরিবারের সদ্যসদের অভিযোগ,দেশের মিডিয়া থেকে শুরু করে প্রশাসন ও সরকারের উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সবাই সাত হত্যাকান্ডের কথা বললেও শুধুমাত্র নজরুল ইসলাম ও এডভোকেট চন্দন সরকারের নাম উল্লেখ করছেন। বাকিদের খবর কেউ রাখছে না বা তাদের পরিবারকেও সমবেদনা জানাতে কেউ আসেননি।

অপহরণের দিন সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের সাথে গাড়িতে নজরুল ইসলাম ছাড়াও ছিলো, মনিরুজ্জামান স্বপন, লিটন, তাজুল ইসলাম, ইব্রাহিম ও জাহাঙ্গীর। ক্ষোভ প্রকাশ করে হত্যাকান্ডের শিকার লিটনের ছোট ভাই মিন্টু জানান,মিডিয়া সহ সকল পর্যায়ে ৭ হত্যাকান্ডের মধ্যে নজরুল ইসলাম ও এডভোকেট চন্দন সরকার ছাড়া বাকিদের কথা কেউ বলছে না। প্রশাসন থেকে শুরু করে সরকারী কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদগণ সবাই নজরুল ইসলাম ও চন্দন সরকারের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বিচারের আশ্বাস দিলেও আমাদের পরিবারগুলোতে এখন পর্যন্ত কেউ সমবেদনা জানাতেও আসেনি শুধুমাত্র মেয়র আইভী ছাড়া। নজরুল ও চন্দন সরকারের পরিবারের সদস্যরা যেমন স্বজন হারিয়েছে আমরাও আমাদের স্বজন হারিয়েছি। আমার ভাই লিটন তেমন কোন বড় রাজনৈতিক বক্তিত্ব বা ঠিকাদার ছিলো না। তার কোন শত্রুও ছিলো না। তার অপরাধ, সে নজরুলের গাড়িতে ছিলো।

তিনি আরও জানান, বিচারের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলা নেই। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে অপহরণের ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের হত্যা করা হয়েছে। অপহরণের পরপরই যদি প্রশাসন তৎপর হতো তাহলে তাদের জীবিত পেতাম আমরা। আমার বাবা বৃদ্ধ মানুষ। বৃদ্ধ বয়সে ছেলের খুনীদের বিচার পেতে তিনি আল্লাহ্র কাছে বিচার দিয়ে রেখেছেন।

হত্যাকান্ডের শিকার মনিরুজ্জামান স্বপনের ভাই রিপন জানান, শুধুমাত্র মেয়র আইভী আমাদের বাসায় এসেছিলেন। এছাড়াও কেউ আর আমাদের কোন খরব রাখেনি। আমরাও তোমানুষ তাদের মতো আমরাও স্বজন হারিয়েছি। আমাদের প্রতি কেউ মানবতা দেখাতে আসেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তিনি যেমন তার বাবার হত্যার বিচার করেছেন তেমনি যদি মনে করেন তাহলে আমার ভাতিজীরাও তার বাবার হত্যার বিচার পাবে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই আবেদনটুকু রাখতে চাই আমার এতিম ভাতিজীদের প্রতি তিনি যেন একটু সুদৃষ্টি দেন।

অপহরণের দিন নজরুলের প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিলো মনিরুজ্জামানের স্বপনের গাড়ি চালক জাহাঙ্গীর। নিহত জাহাঙ্গীরের বড় ভাই আলমগীর জানান, আমাদের বাড়িতে মেয়র আইভী এসেছিলেন। আমরা গরীব মানুষ আমরা এতো কিছু জানি না। শুধুমাত্র এইটুকু বলতে চাই আমার ভাইয়ের কোন অপরাধ ছিলো। আমরা আমাদের ভাইয়ের খুনীদের বিচার চাই।

নিহত তাজুল ইসলামের ছোট ভাই রাজু জানান, আমার ভাই তো জনপ্রিয় কেউ ছিলোনা।তাছাড়া সে জনপ্রিয় কোন রাজনীতিবিদও ছিলো না। প্যানেল মেয়র নজরুল ভাই ও অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার ছিলো জনপ্রিয় মানুষ তাই তাদের কথা সবাই বললেও আমাদের কথা বলার কেউ প্রয়োজন মনে করেনা। যদি প্রয়োজন মনে করতো তাহলে আমাদের কাছে আসতো। মিডিয়ার অনেক লোকজন আমাদের বাড়িতে এসেছিলো কিন্তু নজরুল ভাই ও চন্দন সরকারের পরিবারের কথা প্রকাশ করলেও আমাদের পরিবারের কথা আমরা কি অবস্থায় আছি আমাদের কথা কেউ প্রকাশ করেনা। আমরা আমাদের ভাই হত্যার বিচার আল্লাহর কাছে দিয়ে রেখেছি। আল্লাহ নিশ্চয়ই এর বিচার করবেন।

(এএইচ/পি/মে ০৮,২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test