E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরায়  ডাকাতেরপায়ে গুলি, আহত ২

২০১৫ ফেব্রুয়ারি ১৭ ১২:০৯:৫৫
সাতক্ষীরায়  ডাকাতেরপায়ে গুলি, আহত ২

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক ডাকাত দু’পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরো দু’ পুলিশ সদস্য। সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সাতক্ষীরা শহরের মুন্সিপাড়ায় পল্লীমঙ্গল স্কুলের পেছনে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ ডাকাতের নাম শহীদুল ইসলাম (৩২)। সে সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুর পশ্চিমপাড়ার আকবর আলীর ছেলে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলো শফিকুল ইসলাম ও মোক্তার হোসেন।
এ দিকে গুলিবিদ্ধ শহীদুল ইসলামের স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সাতক্ষীরা জজ কোর্ট থেকে শহীদুলকে তুলে এনে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে চোখে কালো কাপড় বেঁধে দু’ পায়ের হাঁটুর নীচে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে গুলি করেছে।

সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের তথ্য কর্মকর্তা (ডিএসবি) উপপরিদর্শক কামাল হোসেন দাবি করেন, সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শহরের মুন্সিপাড়ার পল্লীমঙ্গল স্কুল এ- কলেজের পিছনে রামচন্দ্রপুর মাঠের মধ্যে একদল ডাকাত ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছে মর্মে পুলিশ খবর পায়। এর ভিত্তিতে পুুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা গুলি ও বোমা ছুঁড়তে শুরু করে। পুলিশ ও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। কিছুক্ষণ পর অন্য সদস্যরা পালিয়ে গেলেও শহীদুল ইসলাম নামের এক ডাকাতকে দু’পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি দা, একটি ছোরা, একটি শর্টার গানের গুলির খোসা, ও বিষ্ফোরিত বোমার আলামত উদ্ধার করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য শফিকুল ইসলাম ও মোক্তার হোসেন জখম হন। তাদেরকে হাসপতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, গুলিবিদ্ধ শহীদুল ইসলাম একজন ডাকাত সর্দার। তার নামে সাতক্ষীরা সদর থানায় ডাকাতি, ছিনতাই, দ্রুত বিচার আইনের মামলাসহ কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে।
গুলিবিদ্ধ শহীদুল ইসলামের পিতা আকবর আলী ও মা রহিমা খাতুন জানান, পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে এক মাস আগে সাতক্ষীরা বাস টার্মিনালে হোসেন মোর্টরস এর মালিক জাহাঙ্গীর হোসেনকে মারপিটের অভিযোগে সদর থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় জামিন নেওয়ার জন্য শহীদুল সোমবার সকালে জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. এটিএম আকবর আলীর কাছে যায়। দুপুর ১২টার দিকে জজ কোর্টের মধ্যে এপিপি অফিসের সামনে থেকে পুলিশ তাকে ধরে সদর থানায় নিয়ে আসে। খবর পেয়ে তারাসহ শহীদুলের দু’ সন্তান রসুলপুর খাঁপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র সাগর হোসেন ও একই বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র শামীম হোসেনকে নিয়ে থানায় যান। সেখানে শহীদুলের সঙ্গে কথা বলেন। তাকে খাবার দেন। তার সঙ্গে রাত ৮টার দি;কে কথা বলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে আটকের কারণ জানতে চাইলে তিনি মঙ্গলবার ভোরে সদর হাসপাতালে গেলে শহীদুল সম্পর্কে সব জানতে পারবেন বলে বাড়ি যাওয়ার পরামর্শ দেন। মঙ্গলবার ভোর চারটার দিকে এক পুলিশ কর্মকর্তা শহীদুলের গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তারা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ আদালত থেকে তুলে এনে রাত ১২ টার দিকে চোখে কালো কাপড় বেঁধে রামচন্দ্রপুর, ভালুকা চাঁদপুরসহ কয়েকটি স্থানে গাড়িতে করে ঘোরানোর পর সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পল্লী মঙ্গল স্কুল এ- কলেজের পিছনে রামচন্দ্রপুর বিলে নিয়ে দু’ পায়ের হাঁটুর নীচে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে গুলি করেছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আজমল হোসেন জানান, মঙ্গলবার ভোর রাত সোয়া তিনটার দিকে শহীদুলকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার দু’ পায়ের হাঁটুর নীচে গুলি লেগেছে। সকাল ১০ টার দিকে অপারেশন করা সম্ভব না হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম রহমান জানান, এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ শহীদুল ইসলামসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতির প্রচেষ্টার মামলায় (২৬নং) ৩৯৯ ধারা ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩ ও ৪ ধারায় মঙ্গলবার সকালে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
(আরকে/পিবি/ফেব্রুয়ারি ১৭,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test