E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গৌরনদীতে সরকারি কর্মচারীদের অফিসে অনুপস্থিত থাকায় অভিযোগ

২০১৫ মে ১২ ১৭:৩৭:০৮
গৌরনদীতে সরকারি কর্মচারীদের অফিসে অনুপস্থিত থাকায় অভিযোগ

বরিশাল প্রতিনিধি : সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুপস্থিতির কারণে ক্রমেই স্থবির হয়ে পড়েছে বরিশালের উত্তর জনপদের জনগুরুত্বপূর্ণ গৌরনদী উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন অফিসের কার্যক্রম। উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিতভাবে অফিসে আসেননা বলেও অভিযোগ রয়েছে। যারা আসেন তারাও বিলম্বে এসে অফিস ছুটির আগেই চলে যান। ফলে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়েছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী। এ অবস্থা দীর্ঘদিনের হলেও সমাধানের কোন উদ্যোগই নেই।

সরেজমিনে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে সোমবার বেলা এগারোটার দিকে গিয়ে দেখা গেছে, নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারীর অফিস তালাবদ্ধ। তার অফিস সহকারীর রুম খোলা থাকলেও কাউকে সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই দপ্তরে কাউকে না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রদানকৃত অনুদানের চেক নিতে এসে নিরাশ হয়ে ফিরে গেছেন রহিম খান, মজিবর ফরাজি ও ফরহাদ নামের তিনজন প্রতিবন্ধী। খবর নিয়ে জানা গেছে নির্বাহী অফিসার মাসুদ হাসান পাটোয়ারী বিশেষ কারণে বরিশালে গেছেন। একইভাবে বন্ধ পাওয়া গেছে উপজেলা চেয়ারম্যান ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অফিস রুম। ওই দপ্তরের কর্মচারীরা জানান, গত ৪ মে থেকে ১৮ মে পর্যন্ত সহকারী কমিশনার তানিয়া আফরোজ ছুঁটিতে রয়েছেন। ফলে প্রতিনিয়ত তার দপ্তরে এসে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন ভূক্তভোগীরা। একইভাবে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মিজানুর রহমান, হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা আঃ বারেক, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী ফজল আহম্মেদ, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহীদ হোসেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খালেদা খানম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মাইনুদ্দীন আহম্মেদ, মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জীব সন্নমত, উপজেলা সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলমসহ যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের সকলের স্ব-স্ব রুম ছিলো বন্ধ। অনেক কর্মকর্তার দপ্তর খোলা থাকলেও তাদের চেয়ার-টেবিল ছিলো ফাঁকা। কোন কোন কর্মচারীকে অফিস চলাকালীন সময় অফিসের টেবিলে মাথা রেখে ঘুমাতেও দেখা গেছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মাইনুদ্দীন আহম্মেদের দপ্তরে গিয়ে দেখা গেছে, ওই দপ্তরের ১২ জন কর্মচারীর মধ্যে একমাত্র চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী জোগেন্দ্রনাথ অফিসে রয়েছেন। বাকী ১১ জন কোথায় রয়েছেন তার কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কার্যালয় ঘুরেও সিংহভাগ কার্যালয় বন্ধ দেখা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, গত ১৭ মার্চ ক্ষমতাসীন দলের দু’গ্রুপের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তপ্তের পর থেকেই শান্ত গৌরনদী অশান্ত হয়ে উঠেছে। উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ওপর প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতা ও তার সহযোগীরা একের পর এক প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছেন। যে কারণে গৌরনদীর আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। এজন্যই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অন্যত্র বদলী হওয়ার জন্য উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ শুরু করেছেন। ফলে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই অফিসে অনুপস্থিত থেকে উচ্চ পর্যায়ে অন্যত্র বদলী হওয়ার জন্য তদবিরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারি কাজে কোন কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসের বাইরে থাকতে পারেন। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ অফিসে না আসলে অথবা কাজে গাফিলতি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(টিভি/পিবি/মে ১২,২০১৫)






পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test