E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশালে সোনার বাংলা স্কুলের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম

২০১৫ মে ১৪ ১৩:৫০:০৬
বরিশালে সোনার বাংলা স্কুলের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম

বরিশাল প্রতিনিধি : জেলার উজিরপুর উপজেলার সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগে পাল্টাপাল্টি ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের পাল্টাপাল্টি ঘুষ বাণিজ্যের তথ্য ফাঁস হওয়ায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। অভিভাবকেরা স্কুলের স্বার্থে একজন ভালো শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে স্কুল প্রাঙ্গণে সমাবেশ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদটি দীর্ঘদিন থেকে শুণ্য থাকায় অতিসম্প্রতি নিয়োগের জন্য দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সে মোতাবেক ৯ জন প্রার্থী ওই পদে আবেদন করেন। গত ৮মে ৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ৬ জনে বরিশাল সদর গার্লস স্কুলে নিয়োগ পরীক্ষায় অশংগ্রহণ করেন। সূত্রে আরো জানা গেছে, নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বে (৪ মে) বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির প্রভাবশালী সদস্য প্রভাষক পান্না লালের সোনার বাংলা বাজার সংলগ্ন বাসভবনে শুণ্য পদের প্রার্থী জনৈক দেবাশীষ দাসকে নিয়ে গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হক সরদার, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আশ্রাফ আলী রাঢ়ী, কামাল মোল্লা ও ইউসুফ আলী রাঢ়ী। বৈঠকে দেবাশীষকে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সে অনুযায়ী গত ৭ মে রূপালী ব্যাংক উজিরপুরের শিকারপুর শাখার অনুকূলে স্কুলের ২২৩৩ নং একাউন্টে ৪২৬০৬ নং ভাউচারের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা জমা করেন দেবাশীষ দাস। বাকি ২ লাখ টাকা তিনি নগদ প্রদান করেন। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষায় মোহনকাঠী স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক সাইদুল ইসলাম খোকন প্রথম হন। তা সত্বেও চর্তুথ স্থান অধিকার করা দেবাশীষ দাসকে নিয়োগ দেওয়ায় জন্য কমিটির সদস্যরা তৎপর হয়ে ওঠেন।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাজাহান হাওলাদার বলেন, দেবাশীষকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমার অজান্তে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্যরা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ৩ লাখ এবং নগদ ২ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। অপরদিকে সাইদুল ইসলাম খোকনের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষক একাই অতিগোপনে ৭ লাখ টাকা গ্রহণ করে তাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রথম স্থান অধিকার করতে সাহায্য করেছেন। তাই পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করেছেন।
নিজেকে নির্দোষ দাবি করে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা দেবাশীষ দাসের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। পরীক্ষায় সে (দেবাশীষ) চতুর্থস্থান অধিকার করা সত্বেও কমিটির সদস্যরা জোরপূর্বক দেবাশীষকে নিয়োগ করতে আমাকে চাপ সৃষ্টি করছে। শিক্ষক সাইদুল ইসলাম খোকনের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করলেও স্কুলের ব্যাংক একাউন্টে দেবাশীষের ৩ লাখ টাকা জমার কথা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, নিয়োগ পেতে হলে টাকাতো লাগবেই। এটা কোন ঘুষ নয়; এটা স্কুল চালানোর জন্য কিছু অনুদান। অপরদিকে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের পাল্টাপাল্টি ঘুষ গ্রহণের খবরে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা ঘুষ গ্রহণের প্রতিবাদে ও স্কুলের স্বার্থে নিরপেক্ষভাবে একজন ভালো শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে স্কুল প্রাঙ্গণে জরুরি সমাবেশ করেছেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, অভিভাবক আব্দুস ছাত্তার মল্লিক, হাবিবুর রহমান হাওলাদার, জাহাঙ্গীর হোসেন, আমিরুল ইসলাম দুলাল ডাকুয়া, ইউসুফ রাঢ়ী, কামাল হোসেন, আফজাল শরীফ প্রমুখ।
(টিবি/পিবি/মে ১৪,২০১৫)



পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test