E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আজ নারায়ণগঞ্জ চাষাঢ়া বোমা হামলা দিবস

২০১৫ জুন ১৬ ১৭:১৯:০২
আজ নারায়ণগঞ্জ চাষাঢ়া বোমা হামলা দিবস

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বর্বরোচিত বোমা হামলার ১৪ বছরপূর্তিতে ঘাতকদের ফাঁসির কাষ্টে ঝুলিয়ে বদলা নেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে প্রথমে শহীদ পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ হতে চাষাড়া শহীদ মিনারের পাশে যে স্থানটিতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল সেই স্থানে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার উদ্যোগে নির্মিত স্মৃতি স্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এসময় নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আহত অনেকেই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে দাড়িয়ে সেই দিনের ভয়াবহ বোমা হামলা ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের স্মৃতি স্মরণ করে চোখের জল ঝড়ান।

শহীদ মিনার এলাকায় এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। উপার্যনক্ষম একমাত্র সদস্যকে হারিয়ে আর্থিক দৈন্যদশায় জর্জরিত অনেক শহীদ পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। এত কষ্টের মধ্যেও তাদের একটি দাবি, প্রকৃত অপরাধীদের বিচার করা হউক। আওয়ামী লীগ সরকার দোষীদের ফাঁসির কাষ্টে ঝুলাবে এমন প্রত্যাশা তাদের।
সকাল ৮টায় নারায়ণগঞ্জ চাষাঢ়া শহীদ মিনারে স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় নিহতদের পরিবারগুলোর সদস্য ও আহতদের পরিবারগুলোর সদস্যরা সহ যারা ওই বোমা হামলা আহত হয়েছিলেন তারাও। আহত হয়ে দু পা হারানো জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীলের নেতৃত্বে নিহতদের পরিবারগুলো স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এসময় চন্দন শীল ছাড়া উপস্থিত ছিলেন আহত হয়ে দুই পা হারারো রতন দাসও। এছাড়া নিহতদের পরিবারগুলোর উদ্যোগে নিজ নিজ বাসায় দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যাগে দোয়া মাহফিল ও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিহদের করবস্থান জিরায়ত করেছেন নিহতদের আত্মীয়স্বজন।
উপস্থিত ছিলেন বোমা হামলায় নিহত দেলোয়ার হোসেন ভাসানীর দুই ছেলে ইফতেখানার হোসেন আদর ও ইমতিয়াজ হোসেন আরান, নিহত রাজিয়া বেগমের ছেলে মানু, মোশাররফ হোসেন মশুর স্ত্রী পলি বেগম, নজরুল ইসলাম বাচ্চুর স্ত্রী হামিদা ইসলাম, শাহানা বেগম, অসিত দাস, রতন দাস, রফিকুল ইসলাম, আনিস আহম্মেদ, হাজী আব্দুল মালেক, ফজলুল হক খোকন সহ অন্যান্য নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। সাংস্কৃতিক শিল্পীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গায়েন ডা. আব্দুস সালাম, গায়িকা শিল্পী, তুশী, শান্তা, অমি অন্যান্য শিল্পীরা।
জেলা পরিষদ প্রশাসক আব্দুল হাইয়ের নেতৃত্বে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে নিহতদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা। এছাড়াও দুপুরে জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পূর্বে নিহতদের স্মরণে দোয়া ও এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করে তাদের সম্মান করা হয়।
শ্রদ্ধায় জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা। এসময় সাথে ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল হোসেন ও অ্যাডভোকেট মাহামুদা মালা সহ অন্যান্যরা।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলের নেতৃত্বে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা, শহর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নাজমুল আলম সজল ও সাধারণ সম্পাদক জুয়েল হোসেনের নেতৃত্বে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকর্মীরা।
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এসময় উপস্থিত ছিলেন সদর থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সওদাগর খান, সহ-সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, সাহাবউদ্দীন, নজরুল ইসলাম, মানিক প্রমুখ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফায়াত আলম সানির নেতৃত্বে শ্রদ্ধায় উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, সহ-সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম রিয়াদ, যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল হক সহ ছাত্রলীগ নেতা মইনুল হোসেন, মনির হোসেন, নূর মোহাম্মদ দেওয়ান সিয়াপ সহ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের নেতৃত্বে কলেজ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এছাড়াও দুপুরে সরকারি তোলারাম কলেজে নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও দুপুরে অয়ন ওসমানের বন্ধু মহলের উদ্যোগে স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সভাপতি কমান্ডার গোপীনাথ দাসের নেতৃত্বে সংগঠন, কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ, জেলা শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অনিল কুমার বিশ্বাস, মহানগর শ্রমিকলীগের সভাপতি কাজিম উদ্দীন সহ অন্যারা শ্রদ্ধা জানান।
প্রসঙ্গত ২০০১ সালের ১৬ জুন চাষাঢ়া শহীদ মিনার ঘেষা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বোমা বিস্ফোরণে মারা যায় ২০ জন। আহত হয় বর্তমান সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানসহ অর্ধশত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। তাঁর ব্যক্তিগত সচিব চন্দন শীল, যুবলীগ কর্মী রতন দাস দুই পা হারিয়ে চিরতরে বরণ করেছে পঙ্গুত্ব।
(এমআর/পিবি/জুন ১৬,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test