E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মংলা বন্দরের আয় বেড়ে হবে দ্বিগুন

২০১৫ জুন ১৭ ১২:৪৪:৪০
মংলা বন্দরের আয় বেড়ে হবে দ্বিগুন

আহসানুল করিম, বাগেরহাট :নেপাল ভুটান ভারত আমদানী-রপ্তানী বানিজ্যে মংলা বন্দর ব্যবহার শুরু করলে বছরে বন্দরের আয় বেড়ে দ্বিগুন হবে। বর্তমানে নেপাল ভুটান আমদানী-রপ্তানী বানিজ্য ‘ব্যয় বহুল’ ভারতের হলদিয়া বন্দরের উপর নির্ভরশীল।

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া সমুদ্র বন্দরের পন্য ও জাহাজ জট কমিয়ে আনাসহ তার পূর্বাঞ্চলের ৭টি রাজ্যে দ্রুত পন্য পাঠাতে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর ব্যবহার প্রয়োজন ভারতের। এই অবস্থায় গত ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদী বাংলাদেশ সফর কালে এই তিনটি দেশকে মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে এখন এই তিনটি দেশ দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে মংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। ইতিমধ্যে এই সমঝোতা স্মারকের আলোকে ভারত চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার শুরু করেছে। মংলা বন্দর সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মংলা বন্দর সূত্র জানায়, ২০১০ সালের জানুয়ারী মাসে ভারত সফর কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের দু’টি সমুদ্র বন্দর ব্যবহারে ভারতকে সম্মতি জানায়। একই সাথে নেপাল ও ভুটান বাংলাদেশের দু’টি সমুদ্র বন্দর ব্যবহারে ভারতকে তার সড়ক পথ ব্যবহার করতে অনুমোতি দেয়ার আহবান জানায়। এরই প্রেক্ষাপটে গত ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর কালে সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৯৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নেপাল পরিক্ষামুলক ভাবে বাংলাদেশের মংলা সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে ভারতীয় সড়ক ব্যবহার করে বহিবিশ্বের সাথে তার আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম চালায়। এরপর ভারত তার সড়ক পথ ব্যবহার করতে না দেয়ায় নেপাল আর মংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারেনি।

বর্তমানে নেপাল ও ভুটান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরের উপর নির্ভরশীল হলেও ওই বন্দরটিতে লেগেই থাকে জাহাজ ও পন্য জট। দূরত্ব বেশী থাকার কারনে ওই বন্দরটি ব্যবহার করতে নেপাল ও ভুটানকে অধিক অর্থ ব্যায় করতে হয়। এখন নেপাল ও ভুটান কোন পন্য ও জাহাজ জট ছাড়াই কম দূরত্বে বাংলাদেশের মংলা বন্দর ব্যবহার করে দ্রুত সময়ে পন্য আনা-নেয়া করতে পারবে। এতে করে নেপাল ও ভুটান কম খরচে বহি:বিশ্বের সাথে তাদের আমদানী-রপ্তানী বানিজ্য করতে পারবে। স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আলোকে মংলা বন্দর ব্যবহারে একই সুবিধা পাচ্ছে ভারত। ভারত এখন বালাদেশের সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করে দ্রুত সময়ে ও কম খরচে তার পূর্বাঞ্চলের ৭টি রাজ্যে দ্রুত পন্য পাঠাবে। এর ফলে ভারত নেপাল ভুটানসহ আর্থিক ভাবে লাভবান হবে বাংলাদেশ।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ( অপারেশন ) মো. আলতাফ হোসেন ভারত নেপাল ও ভুটান মংলা বন্দর ব্যবহারের বিষয়টিকে বন্দরের জন্য ইতিবাচক হিসেবে উল্লেক করে জানান, এই তিন দেশ মংলা বন্দর ব্যবহার শুরু করলে বন্দরের আয় বছরে দ্বিগুন হবে। তিনি জানান, গত অর্থ বছরে মংলা বন্দরে আয় হয় ১৫৫ কোটি টাকা। খরচ বাদে বন্দরের নীট লাভের পরিমান ছিল ৫৩ কোটি টাকা। এই তিন দেশের আমদানী- রপ্তানীর জন্য প্রয়োজনীয় কার্গো, লাইটারেজ জাহাজ ও ভেসেল রয়েছে।

মংলা বন্দরে প্রয়োজনীয় অবোকাঠামো রয়েছে। বন্দরে এক সাথে ৩৩টি জাহাজ ভেড়াল সুবিধা রয়েছে। ৪টি ট্রানজিট শীট ও ২টি ওয়ার হাউজ রয়েছে। সেখানে ৬০ হাজার মেট্রিক টন পন্য রাকার সুবিধা রয়েছে। এছাড়া ৩টি কন্টিইনার ইয়ার্ড ও গাড়ী ইয়ার্ডে ২ হাজার গাড়ী রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। গত অর্থ বছরে মংলা বন্দর ৩৫ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন পন্য ওঠা- নামা করে। চলতি অর্থ বছরের ১০ মাসে ইতিমধ্যে ৩৬ লাখ ৮১ হাজার টন পন্য ওঠা- নামা করেছে।


(একে/এসসি/জুন১৭,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test