E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভারীবর্ষণ ও জোয়ারে বরগুনার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত

২০১৫ জুন ২৬ ১৯:৪২:৩২
ভারীবর্ষণ ও জোয়ারে বরগুনার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত

বরগুনা প্রতিনিধি :নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত বরগুনাসহ দক্ষিণ উপকূলের নদ-নদীতে অধিক উচ্চতার জোয়ার ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত ছিল। গতকাল দিনভর ঝোড়ো আবহাওয়া বিরাজ করে। এদিকে প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে জেলার অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এক সপ্তাহ ধরে অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে আমতলী উপজেলার পশুরবুনিয়া ও তালতলী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া এলাকার ৮০০ মিটার বাঁধ ও জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর আগে ১৮ জুন পাথরঘাটার পদ্মা এলাকার প্রায় ৪০০ ফুট বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের কলাপাড়া কার্যালয়ের ইনচার্জ প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি দুর্বল লঘুচাপে পরিণত হওয়ার ফলে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। এটা আরও দু-তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত বহাল রয়েছে।’
এ ছাড়াা আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী উপজেলার অন্তত ১৫টি স্থানের বাঁধ মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। জোয়ারের চাপে আমতলী শহররক্ষা বাঁধের সিসি ব্লকের ১৫০ মিটার অংশ ধসে গেছে।

প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট তীব্র জোয়ারের পানি ঢুকে পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা, রুহিতা, জিনতলা, বাদুরতলা, কোড়ালিয়াা, নিজ লাঠিমারা, ছোট টেংরা এবং গাববাড়িয়া গ্রামের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি বেতাগী উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত না হওয়ায় ঝোপখালী, ভোলানাথপুর, জগাইখালী, কালিকাবাড়ি, গাবতলী, আলিয়াবাদ, জোয়ার করুণা, গেরামর্দন, আমতলী উপজেলার পশুরবুনিয়া, পশ্চিম ঘটখালী, গুলিশাখালী, আমতলী সদর, তালতলী উপজেলার জয়ালভাঙা, নলবুনিয়া, তেঁতুলবাড়িয়া,বামনা উপজেলার রুহিতা, পশ্চিম সফিপুর, কলাগাছিয়া, দক্ষিন রামনা, চলাভাংগা, গুধিঘাটা গ্রামের বাড়িঘরও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরগুনা কার্যালয়ের সূত্র জানাযায়, বেতাগী উপজেলার আলীয়াাবাদ, কালিকাবাড়ি, করুণা, আমতলী উপজেলার পশুরবুনিয়া, পশ্চিম ঘটখালী, গুলিশাখালী, তালতলী উপজেলার জয়ালভাঙা, নলবুনিয়া, তেঁতুলবাড়িয়া,পাথরঘাটার খলিফারহাট ও জিনতলা এলাকার প্রায় চার কিলোমিটার বাঁধ গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে আছে। যেকোনো মুহূর্তে এসব বাঁধ বিলীন হয়ে যেতে পারে। পাঁচ দিনের প্রবল জোয়ারে এরই মধ্যে আমতলী ফেরিঘাট এলাকার ১৫০ মিটার সিসি ব্লক ধসে গেছে। ফলে এই এলাকায় যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের ভাঙন শুরু হতে পারে। এ ছাড়া আমতলী লঞ্চঘাট ও বাঁধঘাট এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধও ঝুঁকিতে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বরগুনা কার্যালয়ের বৃষ্টি পরিমাপক শাখার কর্মকর্তারা জানান, গত সোমবার থেকে নিম্নচাপের কারণে জেলার সর্বত্র হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। গতকাল জেলায় সর্বোচ্চ ৮৫ দশমিক ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া জেলার নদ-নদীতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দেড়-দুই ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ার দেখা দেয়।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, অধিক জোয়ারের চাপে পাথরঘাটার পদ্মা, রুহিতা এলাকার বেশ কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। বেশ কিছু এলাকায় ভাঙা বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় সেসব স্থান দিয়ে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। এ ছাড়া বেশ কিছু এলাকার বাঁধের অংশও মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পদ্মা, রুহিতা ও জিনতলা এলাকার বাঁধ মেরামতে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। পানি কমে এলে কাজ শুরু করা হবে।

(এমএইচ/এসসি/জানু২৬,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test