E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি,  যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

২০১৫ জুলাই ২৭ ১১:২৩:০৩
বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি,  যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

বান্দরবান প্রতিনিধি :৪দিনের অবিরাম ভারী বর্ষণে ও পাহাড়ী ঢলে বান্দরবানে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্বক অবনতি হয়েছে। বর্ষণ অব্যহত থাকায় ভয়াবহ বন্যার আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন। উজানের পাহাড়ী ঢলে ইতিমধ্যে লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও বান্দরবান সদর উপজেলায় ২শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় আক্রান্ত গ্রাম গুলোর লক্ষাধিক মানুষের ঘরবাড়ী বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে হাঙ্গর খালের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বান্দরবান-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের বাজালিয়া এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সারাদেশের সাথে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ ২য় দিনের মতো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সাধারণ যাত্রীরা নৌকা, রিক্সা ও ভ্যান গাড়ীতে চড়ে যাতায়াত করছে। যোগাযোগ বি্িছন্ন থাকার কারণে বাজালিয়া এলাকায় প্রাইভেট গাড়ী নিয়ে বেড়াতে আসা অসংখ্য পর্যটক আটকা পড়েছে। এতে যাত্রীসহ পর্যটকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাহাড় ধ্বস ও বন্যার কারণে বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানছি সড়ক পাহাড় ধ্বসের কারণে এবং লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার আন্ত সড়ক গুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

ভয়াবহ বন্যার আশংকায় ৭ উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উপজেলার সব গুলো সরকারী বেসরকারী স্কুল বন্যা দুর্গতদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেয়া হয়েছে। পাহাড়ে ঝুকিপূর্ন অবস্থায় বসবাসকারীদের অধিকাংশই নিরাপদ আশ্রয় গ্রহন করেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাবে পাহাড় ধ্বস হলেও প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেনি। তবে বনরূপা পাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় পাহাড় ধ্বসে কয়েকজন গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি জানান, জনবহুল নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা অফিস ভবনসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রবল বর্ষণ অব্যহত রয়েছে। এভাবে বর্ষন অব্যহত থাকলে আগামী কালের মধ্যে উপজেলার অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হবে।

লামা ও আলীকদম উপজেলা থেকে তানফিজুর রহমান জানান, এই বন্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। উপজেলার অফিস আদালত, থানা ভবনসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তর এবং ২০ হাজারের বেশী ঘরবাড়ী বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির মধ্যে বন্যা দুর্গত মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার এবং ওষধ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিম বন্যা দুর্গতদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি’র উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যহত রাখা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন জানান,বান্দরবান পৌর এলাকার জন্য ১৫ হাজার হেলোজিং ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়েছে। আগামীকাল থেকে ৭ উপজেলায় লক্ষাধিক ট্যাবলেট বিতরণ করা হবে। এক মাসের মধ্যে দু’দফা বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। গতবারের চেয়ে এবারের বন্যায় অনেক বেশী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালের মতো ভয়াবহ বন্যার আশংকা রয়েছে। রাতভর টানা বৃষ্টি অব্যহত থাকলে ৯৭ সালের মতো স্মরণকালের আরেকটি বন্যার বান্দরবানের ইতিহাসে যুক্ত হতে যাচ্ছে।

(এএফবি/এসসি/জুলাই২৭,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test