E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মাদারীপুরের কালকিনিতে শ্রমজীবী শিশুদের বিদ্যালয়টি বন্ধ প্রায়

২০১৫ জুলাই ২৯ ১৭:৫৬:৫৬
মাদারীপুরের কালকিনিতে শ্রমজীবী শিশুদের বিদ্যালয়টি বন্ধ প্রায়

মাদারীপুর প্রতিনিধি : সরকারের পৃষ্টপোষকতা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট এর সহযোগিতা না পাওয়ায় ৩১ বছর পর বন্ধের পথে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শ্রমজীবী শিশুদের পাঠাদানের একমাত্র বিদ্যাপিঠ গোপালপুর শ্রমজীবী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি।

দীর্ঘদিন নিজেদের শ্রম ও অর্থায়নে স্কুলটি পরিচালনা করে আসলেও সরকারি-বেসরকারি সাহায্য সহযোগিতা না পাওয়ায় এখন আর চালানো যাচ্ছে না এমন অযুহাতে স্কুলটি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনাকারীরা। এতে করে প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকা সত্ত্বেও শিক্ষা গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে স্কুলের প্রায় দেড় শতাধিক ছাত্র/ছাত্রী।

স্কুল পরিচালনা কমিটি ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, কালকিনি উপজেলার শ্রমজীবী শিশুরা যাতে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয় সে জন্য ১৯৮৪ সালে কালকিনির পৌর এলাকার গোপালপুর হাটে ‘গোপালপুর শ্রমজীবী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন ঐ এলাকার সৈয়দ বাহাউদ্দিন সাহিদ।

শুরুতে এলাকার যুবকদের নিয়ে নিজেই স্বেচ্ছাশ্রমে বিদ্যালয়টি চালানো হয়। এর কিছুদিন পরে সরকারী সহযোগিতায় একটি টিনসেট ঘর নির্মাণ করে স্কুলটি পরিচালনা করা হচ্ছিল। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১১নং সিরিয়াল রেখে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট এর আওতায় নেয়া হয় বিদ্যালয়টি।

স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ বাহাউদ্দিন সাহিদ বলেন, ১৯৯১ সালে দেশে সরকার পরিবর্তনের পরে স্কুলটি নিয়ে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে স্কুলটির নাম কেটে দেয়া হয়। তবুও এতো দিন বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে আসলেও বর্তমানে পৃষ্টপোষকতার অভাবে চালানো সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিবছর বিদ্যালয়টি থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করাসহ উপজেলার জাতীয় কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে সুনাম অর্জন করেছে শ্রমজীবী শিশুরা।

এসময় তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু শিক্ষাবান্ধব নেত্রী। তাই তার হস্তক্ষেপে আমরা স্কুলটি পুনরায় শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট এর আওতায় নেয়ার দাবী জানাচ্ছি। তা না হলে স্কুলটি বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আমাদের আর উপায় নেই’।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আফরিন বেগম বলেন, কোন প্রকার স্বার্থ ছাড়াই আমরা বছরের পর বছর বিকেলে শ্রমজীবী শিশুদের পাঠদান করে আসছি। কিন্তু স্কুলটির প্রতি সরকারের সু-নজর কেন পড়ছে না, তা জানিনা। তবে এতোদিন বিদ্যালয়টি চালাতে পারলেও এখন শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট এর আওতায় নেয়া না হলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এই বিদ্যালয়টি।

স্কুলের শিক্ষার্থী সাব্বির, জসিম, ঝর্ণা, সেফালি, ময়না, রাব্বি, কুসুমসহ ৩০/৪০ ছাত্র-ছাত্রী বলেন, "সারাদিন কাজ করে বিকেলে এই স্কুলটিতে আমরা পড়া লেখা করি। কিন্তু সেটি বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের আর লেখাপড়া করা হবে না।"

(এএসএ/এসএফকে/জুলাই২৯,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test