E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বান্দরবানে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ

২০১৫ আগস্ট ০৪ ১৭:২৬:১০
বান্দরবানে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ

বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণের চাল বিতরন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু মুক্ত মঞ্চ ও উপজেলা পরিষদ ভবনে পৃথকভাবে ত্রাণের চাল বিতরণ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

এ সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু জাফর, সদও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম চৌধুরী, পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মংক্যচিং চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শফিকুল ইসলামসহ পদস্থ কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় জেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের অর্থয়ানে পৌরসভা ও সদর উপজেলায় ২ হাজার পরিবারকে প্রতি জনকে ৮ কেজি হারে এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পৌরসভায় ৩০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণের চাল বিতরণ করা হয়।

এদিকে সাঙ্গু নদীতে ব্যাপক স্রোতের কারণে ইঞ্জিনচালিত বোট চলাচল বন্ধ থাকায়। দুর্গম এলাকাগুলোতে বন্যায় ক্ষতিগস্তদের মধ্যে ত্রাণ পৌঁছাতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে জেলার থানছি উপজেলার তিন্দু, রেমাক্রী, বড়মদকসহ বন্যাকবলিত দুর্গম এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনীর বিশেষ হেলিকপ্টারে ত্রাণ পৌছে দেয়া হয়েছে।

জেলা পরিষদের সদস্য থোয়াই হ্লা মং মারমা ও হেডম্যান মুই শৈ থুই মারমা জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে থানছি উপজেলার দুর্গম অঞ্চলে সেনা বাহিনীর হেলিকপ্টারের সহযোগিতায় ত্রাণের চাল পৌছে দেয়া হয়েছে। আজ দুপুর থেকে দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় বন্যার্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণের চাল বিতরণ কর্যক্রম শুরু হয়েছে। দুর্গত মানুষ খাদ্য সংকট থেকে পরিত্রাণ পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।

অপরদিকে ত্রাণ বিতরণ কালে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৃষ্টি শুরু হওয়ার সাথে সাথে পাহাড়ের চুড়ায় ও নীচে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে হবে। বাড়ি ঘরের চেয়ে জীবনের মুল্য অনেক বেশি। সুতরাং জীবন ও সংসারের প্রয়োজনে মানুষকে বেঁচে থাকতে হবে। বাড়ীঘর ভেঙ্গে গেলে আবার তৈরি করা যায় কিন্তু মরে গেলে তার আর কিছুই থাকে না। এ বিষয়ে তিনি সকলকে শর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, অবিরাম বৃষ্টিতে গত একমাসে পাহাড় ধস ও বন্যায় অসংখ্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাহাড় ধ্বসে মাটি চাপা পড়ে ৮ জনের প্রাণহানী ঘটেছে।

ঘরবাড়ি ও রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ভাবে ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা ঘাট সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে গেছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তবে যেহেতু এখনো বর্ষার একটি মাস রয়ে গেছে। সুতরাং বন্যা আবারো হতে পারে এবং পাহাড় ধসের ঘটনাও আরো ঘটতে পারে। কিন্তু মানুষের জীবন যুদ্ধ থেমে থাকবে না। প্রকৃতির উপর ভরসা করে শর্তকতার সাথে দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে। বান্দরবান জেলায় ত্রাণের কোন সংকট নেই জানিয়ে তিনি আরো বলেন, জেলায় পর্যাপ্ত খাদ্য মওজুদ রয়েছে। ত্রাণ বিতরনে কোন সমস্যা এবং সংকট নেই। যেখানে যেভাবে ত্রাণ পৌছানো প্রয়োজন সেখানে সেভাবে সকলের সার্বিক সহযোগিতায় ত্রাণ পৌছে দেয়া হয়েছে।

এদিকে বান্দরবানের মধ্যমপাড়ায় গতকাল বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে সাঙ্গু নদীর পাড়ে বসবাসরত অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি ধসে পড়ে। এতে প্রাণহানী না হলেও বসতবাড়ী গুলো ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আজ দুপুরে ঐ সব এলাকা পরির্দশন করেছেন প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। তিনি ধ্বসে যাওয়া এলাকা পরির্দশন এবং এলাকার সব শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে। আগে নদীর গভীরতা ছিল বলে বন্যা কি জিনিষ সেটা মানুষ উপলদ্ধি করতে পারেনি। এখন বৃষ্টি হলেই বন্যার সৃষ্টি হয়, সবকিছু তলিয়ে যায়। তাই এই দুটি নদী জরুরী ভিত্তিত্বে ড্রেজিং করা প্রয়োজন। বিষয়টি সরকারের উচ্চমহলে অবহিত করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

(এএফবি/এএস/আগস্ট ০৪, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test