E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে হোয়াইট গোল্ডের মূল্য ধ্বসে দিশেহারা চিংড়ি চাষীরা

২০১৫ আগস্ট ৩১ ১২:০৯:৩৫
বাগেরহাটে হোয়াইট গোল্ডের মূল্য ধ্বসে দিশেহারা চিংড়ি চাষীরা

বাগেরহাট প্রতিনিধি :বাগেরহাটের ‘হোয়াইট গোল্ড’ খ্যাত বাগদা চিংড়ির দাম বাজারে অস্বাভাবিক হারে কমে যাওয়ায় চিংড়ি চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বাজারে বাগদা চিংড়ির দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

একদিকে বাজারে বাগদা চিংড়ির দাম কমে গেছে অন্যদিকে চাষীদের ডিপো মালিকদের কাছে চিংড়ি বাকিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। ডিপো মালিকরা চাষীদের কাছ থেকে বাকিতে চিংড়ি কেনার কথা স্বীকার করেছে। ফলে এই চিংড়ির উপর নির্ভরশীল হাজার হাজার চাষী আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তবে বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক এসোসিয়েশন (বিএফএফইএ) দাবী করেছে আন্তর্জাতিক বাজারে বাগদা চিংড়ির দাম ও চাহিদা কমে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কবে নাগাদ চিংড়ির বাজার স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদিন চিংড়ির দাম ওঠানামার বিষয়টি তদারকি করতে চাষীরা মৎস্য বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সরকার যদি এখনই এই চিংড়ি শিল্পে জড়িত চাষীদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়র দাবী জানিয়েছে চিংড়ি চাষীরা।

বাগেরহাটের চিংড়ি বেচাকেনার অন্যতম বারাকপুর মৎস্য আড়ৎতের ডিপো মালিক ও চাষীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গত তিন মাস ধরে বাগদা চিংড়ির এই অবস্থা চলছে। চলতি মৌসুমে বাগদা চিংড়ির বাজার দর (বর্তমানে ১৫ গ্রেড ৮০০ টাকা, যা তিন মাস আগে ছিল ১৩০০ টাকা), ২০ গ্রেড ৭০০ টাকা যা আগে ছিল ১১০০ টাকা, ৩০ গ্রেড ৬০০ টাকা যা আগে ছিল ৮৫০ টাকা, ৪৪ গ্রেড ৪০০ টাকা যা আগে ছিল ৬০০ টাকা এবং ৬৬ গ্রেড ২০০ টাকা যা আগে ছিল ৪৫০ টাকা)।

বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষী সমিতির সভাপতি ফকির মহিতুল ইসলাম বলেন, চিংড়ি উৎপাদনে দেশের অন্যতম জেলা বাগেরহাট। এই জেলার শতকরা সত্তর ভাগ মানুষ এই পেশার সঙ্গে জড়িত। মৌসুমের শুরুতে চিংড়ি ঘেরে ভাইরাস সংক্রমিত হয়। ঘের মালিকরা ভাইরাসের প্রকোপ কাটিয়ে উঠে ঘেরে চিংড়ির উৎপাদন ভাল পায়। ঘেরে উৎপাদিত চিংড়ি মৌসুমের প্রথম দিকে বাজারে দামও পায় আশানুরুপ। কিন্তু তিন মাস আগে হঠাৎ করে বাজারে বাগদা চিংড়ির দাম অস্বাভাবিকহারে কমে যায়। গত তিন মাস আগে চাষীরা যে চিংড়ি ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছে তা এখন ৬ থেকে সাতশ টাকায় বিক্রি করছে। কেজি প্রতি চার থেকে পাঁচশ টাকা কম। একদিকে চিংড়ির দাম কম অন্যদিকে তা আবার ডিপো মালিকদের কাছে বাকি রাখতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে এই জেলার চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই অবস্থার নিরসন করা না গেলে চাষীরা চিংড়ির চাষের উপর আগ্রহ হারাবে। তাই তিনি সরকারকে বাইরের নতুন নতুন চিংড়ির বাজার সৃষ্টি করার দাবী জানিয়েছেন।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য বিভাগের বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র মন্ডল বাগদা চিংড়ির দাম কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, হিসেব অনুযায়ী এ বছর জেলার নয়টি উপজেলায় মোট সত্তর হাজার হেক্টর জমিতে বাগদা ও গলদা চিংড়ির চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে মোট ৩৯ হাজার ঘেরে বাগদা চিংড়ির চাষ করা হয়েছে। জেলায় বাগদা চিংড়ির বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ২৭১ মেট্রিক টন। মৌসুমের শুরুতে কিছুটা সমস্যা ছিল। এবছর বাগদা উৎপাদন ভাল। বাগদা ও গলদা চিংড়ি উৎপাদনে দেশের অন্যতম জেলা বাগেরহাট। প্রথম দিকে চাষীরা মাছের দামও ভাল পেয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে চিংড়ির বাজার দর পড়ে যাওয়ায় চাষীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তবে কি কারনে বাজার দর পড়ে গেছে তা বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক এসাসিয়েশন (বিএফএফইএ) বলতে পারবে। ##

(একে/এসসি/অঅগস্ট৩১,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test