E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পদ্মায় অল্পের জন্য রক্ষা পেল লঞ্চটি

২০১৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৯:২৮:২৫
পদ্মায় অল্পের জন্য রক্ষা পেল লঞ্চটি

মাদারীপুর প্রতিনিধি :মাদারীপুর শিবচরের কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুটে মঙ্গলবার দুপুরে শিমুলিয়া ঘাট থেকে কাওড়াকান্দির উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে আসা রিভার ব্রিজ (পটুয়াখালী নেভিগেশন কোং-এম ১৫২০৭) লঞ্চটি অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করায় মাঝ পদ্মায় ডুবতে বসলেও অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে বলে যাত্রী সূত্রে জানা গেছে।

যাত্রী ও ঘাট সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল-উল-আজহার বাকি আর মাত্র ৮ দিন। ইতিমধ্যেই নাড়ির টানে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে রাজধানীবাসী। কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুটটি দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের অন্যতম নৌরুট। প্রবল স্রোতের কারণে যেখানে ফেরি চলাচল প্রায়ই ব্যাহত। প্রায় একমাস ধরে ঢাকার অন্যতম প্রবেশদ্বার বলে খ্যাত কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুট প্রায় অচল। প্রবল স্রোত ও নাব্যতা সংকটে চলতে পারছে না রো-রো ফেরিসহ ১৮টি ফেরি।

সেখানে কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া রুটে লঞ্চগুলো আবার অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে উত্তাল পদ্মা পাড়ি দিয়ে শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি রুটে চলাচল করছে প্রতিনিয়ত। অথচ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ নেই বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছে।

অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করায় মঙ্গলবার দুপুরে শিমুলিয়া ঘাট থেকে কাওড়াকান্দির উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে আসা রিভার ব্রিজ (পটুয়াখালী নেভিগেশন কোং-এম ১৫২০৭) লঞ্চটি মাঝ পদ্মায় ডুবতে বসলেও অল্পের জন্য রক্ষা পায়।

ঢাকা থেকে আসা যাত্রীরা অভিযোগ করে জানান, শিমুলিয়া ঘাট থেকে রিভার ব্রিজ লঞ্চটি প্রায় ৪ শতাধিক যাত্রী নিয়ে কাওড়াকান্দি দিকে ছেড়ে আসে। লঞ্চটি কানায় কানায় ভর্তি ছিল। লঞ্চের ভিতর যাত্রীদের দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না। মাঝ পদ্মায় প্রবল স্রোতের মধ্যে নদী পাড়ি দিতে গিয়ে লঞ্চটি একদিকে কাত হয়ে যায়। লঞ্চের যাত্রীরা হৈ-চৈ ও কান্না-কাটি শুরু করে দেয়। এক পর্যায়ের লঞ্চের চালক লঞ্চটিকে কৌশলে থামিয়ে পাশের চড়ে ঠেকিয়ে দেয়। পরে সকল যাত্রীকে শান্ত করে ধীরে ধীরে লঞ্চটি চালিয়ে কাওড়াকান্দি ঘাটে আসে।

নির্ভরযোগ্য সূত্র ও যাত্রীরা জানান, ঐ লঞ্চে ৫টি পরিবহণের যাত্রী ছিল। এই লঞ্চে পরিবহণের যাত্রীরা হলো গোপালগঞ্জ এক্সপ্রেস, সোনালী পরিবহণ, ফাল্গুনী পরিবহণ, সার্বিক পরিবহণ ও দোলা । এছাড়াও লোকাল যাত্রী মিলে প্রায় ৪ শত যাত্রী ছিল বলে যাত্রীরা জানিয়েছে।
ঐ লঞ্চের যাত্রী খুলনার বাসিন্দা রিয়াজ আহমেদ লঞ্চের ঝুকি টের পেয়ে বিভিন্ন সংবাদ কর্মীসহ বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ফোনে লঞ্চডুবির আশংকার কথা জানান।

এসময় তিনি জানায়, লঞ্চটি অল্পের জন্য বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে নদীতে যে পরিমাণ ¯্রােত ছিল লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতো। লঞ্চে প্রায় শতাধিক নারী ও অর্ধশত শিশুসহ প্রায় ৪ শতাধিক যাত্রী ছিল।

সূত্র জানায়, ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় লঞ্চের যাত্রী বেড়ে গেছে। এ সুযোগে লঞ্চ চালক ও মালিকরা আবার অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ’র ঘাট সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লঞ্চ মালিক সমিতির (মাওয়া জোন) সাধারণ সম্পাদক ও ঐ লঞ্চের মালিক ভাস্কর চৌধুরী জানান, লঞ্চটি দুই’শ/তিন’শ যাত্রী উঠলে কাত হয়ে যাওয়ার মতো না। তবে ৪০০ যাত্রী পারাপারের কথা তিনি অস্বীকার করেন।

তিনি আরো বলেন, এ রুটের হাজরা চ্যানেলে ড্রেজিং কাজ চলতে থাকায় লঞ্চগুলো মাঝিকান্দি হয়ে ঘুরে আসে। জ্বালানি খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমরা লঞ্চই চালাতে চাইছিলাম না। নৌপরিবহণমন্ত্রীর অনুরোধে লঞ্চ চালাচ্ছি।

শিমুলিয়া ঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক মো. তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, রিভার ব্রিজ লঞ্চটিতে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ২ শত। যাত্রী সংখ্যা কিছু বেশি হতে পারে। তবে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় কোনো লঞ্চ ছাড়া হয় না। তাছাড়া লঞ্চটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিলো কি না সে ব্যাপারে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ আগস্ট পিনাক ট্রাজেডির পর যাত্রীদের মধ্যে পদ্মাপারে ভীতি কাজ করলেও সংশ্লিষ্টরা এখনও এ ব্যাপারে উদাসীন রয়েছে।

(এএসএ/এসসি/সেপ্টেম্বর১৫,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test