E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রভাবশালী মহলের ঘটনা ধামাচাপা দিতে দেন দরবার

মংলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী দু’সপ্তাহেও আটক হয়নি

২০১৫ অক্টোবর ১০ ১৬:২১:০২
মংলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী দু’সপ্তাহেও আটক হয়নি

বাগেরহাট প্রতনিধি : প্রেমের স্বীকৃতি না পেয়ে মংলায় আত্মহননকারী ৪ মাসের অন্তঃসত্তা মংলা কলেজ থেকে চলতি বছরে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রী ইয়াসমিন বিথীর (১৭) পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে।

আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী মংলা শহরের ধর্নাঢ্য ব্যবসায়ী আনোয়ার ইলেক্সট্রনিক্সের মালিকের ছেলে প্রতারক প্রেমিক হাসানের পক্ষে একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিয়ে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য বিভিন্ন মহগলে নানা দেন দরবার শুরু করেছে। আত্মহননকারী পরিবারের অভিযোগ, মামলা তুলে নেয়া ও সমঝোতা করার জন্য আসামী পক্ষের লোকজন তাদের নানা চাপ হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মংলা শহরের মাদ্রাসা রোড এলাকার হতদরিদ্র পরিবার মোশারেফ হোসেনের কন্যা মংলা কলেজ থেকে চলতি বছরে এইচএসসি উত্তীর্ণ ছাত্রী ইয়াসমিন বিথীর সাথে মংলা শহরের ধর্নাঢ্য ব্যবসায়ী আনোয়ার ইলেক্সট্রনিক্সের মালিক আনোয়ারের লম্পট ছেলে শহরতলীর শেরে বাংলা সড়কের মিয়াপাড়া এলাকার হাসানের সাথে প্রায় দেড় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিবাহের আশ্বাস দিয়ে এক পর্যায়ে বিথীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলে হাসান। এতে বিথী অন্তঃÍসত্তা হয়ে পড়ে। অন্তসত্তার বিষয়টি হাসানকে জানিয়ে তাকে বিবাহ করার জন্য চাপ দেয় বিথী। হাসান বিবাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে গর্ভপাত ঘটাতে বিথীর উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। বিথী তার কলেজের সহ পাঠিনি বান্ধবীদের নিয়ে ঘটনাটি হাসানের মায়ের কাছে বলে। সেখানেও কোন প্রকার সমাধান না পেয়ে গর্ভপাত ঘটাতে কয়েক দফা বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে গিয়ে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে গলায় ফাস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আত্মহত্যার পূর্বে বিথী একটি চিরকুটে লিখে গেছেন যে, সে ৪ মাসের অন্তঃসত্তা এবং তার মৃত্যুর জন্য প্রেমিক হাসানই দায়ী। এ ঘটনায় বিথীর বোন ফাতেমা বেগম রিনা বাদি হয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর হাসানের বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনায় মংলা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পুলিশ বিথীর লিখে যাওয়া চিরকুটটি জব্দ করেছে। এ দিকে প্রভাবশালী একটি মহল এ ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিয়ে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য বিভিন্ন মহেেল নানা দেন দরবার শুরু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মংলার মিঠাখালী ইউনিয়নের আবুল হোসেন নামে শাসক দলের এক নেতা নেপথ্যে থেকে ঘটনাটি মিটমিমাংসা করার জন্য মোটা অংঙ্কের টাকা ছড়িয়ে চেষ্টা তদবির চালাচ্ছেন। ওই নেতা আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী লম্পট হাসানের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি এখন নিজেই চালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আত্মহননকারীর বোন মামলার বাদী ফাতেমা বেগম রিনা অভিযোগ বলেন, থানায় মামলা দায়েরের পর আসামীর পিতা ও তাদের সহযোগীরা মামলার বিষয়ে আপস মিমাংসার জন্য প্রভাবশালী বিভিন্ন মহলের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে চলেছে। বোনের ঘটনার বিচারের জন্য সমাজপতি, জনপ্রতিনিধি, পুলিশসহ যাদের কাছেই ধর্ণা দিচ্ছি তারা সবাই এ বিষয়ে মিটমাট করার জন্য বলছে। আমরা এখন প্রভাবশালীদের হমকির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি। এ ব্যাপারে আবুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মংলা থানার এস আই রবীন্দ্রনাথ মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আসামী গ্রেফতারে নিস্ক্রীয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আসামিকে আটকে পুলিশী তৎপরতা চলছে।

(একে/এসসি/অক্টোবর১০,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test