E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পটুয়াখালী শিশু সদন খানকায় শিক্ষার্থীদের দিয়ে চলছে ইট পরিবহন কাজ

২০১৫ অক্টোবর ২৭ ১৪:৫৬:১১
পটুয়াখালী শিশু সদন খানকায় শিক্ষার্থীদের দিয়ে চলছে ইট পরিবহন কাজ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : পটুয়াখালী গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের দক্ষিন দড়ি বাহেরচর দারুচ্ছুন্নাত শিশু সদন খানকায় কোমল মতি ৪০জন শিক্ষার্থীদের দিয়ে বাড়ি নির্মাণের জন্য মাথায় করে ইট পরিবহনের কাজ করালেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান হাফেজ সোহরাব।

২০১২ সালে গড়ে উঠে দারুচ্ছুন্নাত খানকায় বর্তমানে ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে, এদের জন্য শিক্ষক রয়েছে মাত্র দু”জন। এখানে পড়া শুনার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের দিয়ে চলছে কাঠ চেরাই করা, ইট পরিবহন, মাটি টানা সহ ঝুঁকি পূর্ন দিন মজুর বিভিন্ন ধরনের কাজ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সদ্য রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত ২০১৪ সালে যার নং- ৫৯৫ দক্ষিন দড়ি বাহেরচর শিশু সদন ও খানকায় দু’জন শিক্ষক কাগজ কলমে দেখা গেলেও উপস্তিতি দেখা যায় ১জনের। ইউনিয়নের সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহন করা অভাব অনাটনের মধ্যে দিয়ে চলে যাদের সংসার এই সব পরিবারের কোমল মতি শিশুদের এখানে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাফেজ সোহরাব প্রতিষ্ঠানের পাশে ক্রয়ে কৃত জমিতে নিজের বসত বাড়ি বিল্ডিং নির্মাণের জন্য উপকরন সামগ্রী পরিবহনের কাছে ব্যবহার করছেন শিশুদের। শিক্ষার্থীদের দিয়ে কাঠ চেরাই, পানি টানা, ইট পরিবহন সহ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা এক দিকে যেমন সরকারের শিশু শ্রম আইন লঙ্ঘন করা অন্য দিকে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে। এধরনের কর্ম কান্ডে লিপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তি দাবি করেন স্থানীয়রা।

কয়েকজন অভিভাবক বলেন, আমরা দিন মজুর এক কথায় বলাযেতে পারে নুন আনতে পানতা ফুরায় এর পরেও তাদের সন্তান কাজে না দিয়ে আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে শিশু সদন খানকায় ভর্তি করেন। কিন্তু সেখানে লেখা পড়ার যে চিত্র দেখছেন এতে শংঙ্কিত অভিভাবকগন। শিশুদের দিয়ে পাঠ দানের পরিবর্তে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যারা লিপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তি দাবি করেন অভিভাবক গন। স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়নে দক্ষিন দড়ি বাহেরচর দারুচ্ছুন্নাত শিশু সদন খানকায় গড়ে উঠার পরপরেই প্রতিষ্ঠান প্রধানের দ্বায়ীত্ব পান হাফেজ সোহরাব। এরপর থেকে শিশুদের পাঠদানের পরিবর্তে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করতে শিশুদের দিয়ে দিন মজুর কাজ শুরু করেন। তার এহেন কর্মকান্ড ক্ষুব্দ এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন সময়ে হাফেজ সোহরাব কর্তৃক হেয়পতিপন্ন মূলক আচারনের শিকার হতে হচ্ছে তাদের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্থক্ষেপ কামনা করে অভিযুক্ত হাফেজ সোহরাব এর বিরুদ্ধে শিশু শ্রম আইন লঙ্ঘন করা ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করায় অপরাধে দ্রুত শাস্তির দাবী জানান তারা।

দিনমজুর পিতা পাতা তাদের শিশুদের নিয়ে যে স্বপ্ন দেখছেন সেই স্বপ্ন যেন স্তব্দ করে দেয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান হাফেজ সোহরাব। কোমল মতি শিশুদের পাঠদানের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের অজুহাতে শিক্ষার্থীদের দিয়ে গুছিয়ে নেয় নিজের আখের। মাত্র তিন বছর যেতে না যেতেই হাফেজ সোহরাব আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে জমি ক্রয় করে গড়ে তুলছে নিজের বসবাস করার জন্য বিল্ডিং তাও আবার ইটসহ ঝুঁকিপূর্ণ মালামাল পরিবহন কাজে ব্যবহার করছেনকোমল মতি শিক্ষার্থীদের।

এ ব্যপারে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি শামসুল হক জানালেন, কোমল মতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধান বাড়ী নির্মানের জন্য ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছে এমন অভিযোগ পেয়ে আমি ইতিপূর্বে তাকে বারন করে দিয়েছি।

এরপরে যখন তিনি পুনরায় এধরনের কাজের সাথে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করছে আমরা তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহন করবো। তবে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি যাতে ক্ষুন্ন না হয় এজন্য সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

এ ব্যপারে প্রতিষ্ঠানের প্রধান হাফেজ সোহরাব এর কাছে জানতে চাইলে তিনি, সাংবাদিকদের সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করে বলেন, ভাই আপনারা তো অনেক কষ্ট করে এখানে আসছেন আপনাদের একটা খরচের ব্যপার আছে। আমি বিষয়টি দেখছি তবুও সংবাদ প্রকাশ করবেন না।

(এসডি/এএস/অক্টোবর ২৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test