E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মিনি পাকিস্তান আশাশুনির প্রতাপনগর

সহিংসতার মামলার আসামীরা করলেন গোপন বৈঠক

২০১৫ অক্টোবর ৩১ ১০:৩৮:১৫
সহিংসতার মামলার আসামীরা করলেন গোপন বৈঠক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহনিয়া অঅয়েশা ছিদ্দিকা দাখিল মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয়েছে জামায়াতের গোপন বৈঠক। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ বৈঠকে উপজেলার সহিংসতা মামলার ৪৭জন নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাড়ি আলিম মাদ্রাসা জামায়াতের ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে দেশজুড়ে স্বীকৃতি লাভ করে। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তজার্তিক অপরাধ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর আগরদাাঁড়ি থেকে শুরু হয় সাতক্ষীরাকে অচল করে দেওয়ার কার্যক্রম। গাছকাটা, গাড়িতে আগুন, সংখ্যালঘু মানুষষের বাড়িতে আগুন,ভাঙচুর, পুলিশের উপর হামলা,রাস্তা কাটা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষকে হত্যাসহ সহিংসতায় সাতক্ষীরা দেশের সকল অংশের সঙ্গে দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ওই বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে আগরদাড়ি দুর্গের পতন ঘটে। নেতা কর্মীরা পালিয়ে আশ্রয় নেয় মিনি পাকিস্তান নামে পরিচিত আশাশুনির প্রতাপনগরে। নদীবেষ্টিত দুর্গম এই এলাকা পরিণত হয় জামায়াতের অপেক্ষাকৃত নিরাপদ ঘাঁটিতে। পরিষদে ঢুকতে না পারা প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ওই জামায়াত নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করেন। জামায়াতের সাবেক সাংসদ মাওলানা রিয়াছাত আলীর বাড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠণের নেতৃবৃন্দ শান্তি চুক্তি শেষে ভুরিভোজ করেন। একপর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদে কাজ শুরু করেন জাকির হোসেন। এরপর থেকে জামায়াত , বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের রোষানলে পড়েন অনেক ত্যাগি আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা। জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীরা অনেকেই গরনি কাঠের লাঠি কচু বাগানে পলিথিন দিয়ে মুড়ে লুকিয়ে রেখে ওলাম লীগে বা আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। চার থেকে পাঁচটি করে সহিংসতা মামলার ভার মাথায় নিয়ে জামায়াতের নেতা কর্মীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কলেজ করছেন, বেতন তুলছেন।
স্থানীয়রা আরো জানান,শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে কুড়িকাহনিয়া আয়েশা দাখিল মাদ্রাসায় জামায়াতের গোপন বৈঠক শুরু হয়। তাতে অংশ নেন জামায়াত নেতা আ.ন.ম নুরুল আফছার, ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা রিয়াছাত আলী, ইউনিয়ন জামায়াতের সহসম্পাদক শাহীন সরদার, মাদ্রাসা শিক্ষক মোয়াজ্জেম বিল্লাহ, প্রতাপনগর এপিএস কলেজের শিক্ষক শাজাহান আলী, আল আমিন, উপজেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি সদ্য কারামুক্ত ইউসুফ আলীসহ ৪৭ জন। এদের মধ্যে অনেকেই সহিংসতার মামলার আসামী হয়েও বহাল তবিয়তে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন। আবার কেই বা দায়িত্ব পালন না করেও বাড়িতে বসে খাতায় সাক্ষর করে বেতন তুলছেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আশাশুনি থানার সহকারি উপপরিদর্শক রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে যাওয়ার আগেই নেতা কর্মীরা স্থান ত্যাগ করে। পুলিশ গ্রেফতারের চেষ্টা করলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হস্তক্ষেপে তাদেরকে নিশ্চুপ থাকতে হয়। ফলে এসব অপরাধেিদর গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার সহকারি উপপরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম জানান, থানা থেকে প্রতাপনগর অনেক দূর। তা ছাড়া যথাসময়ে পৌঁছানো গেলেও কোন আসামীকে ধরা সম্ভব হয়ান।


(আরএনকে/এসসি/অক্টোবর৩১,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test