E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শ্যামা পূজা

২০১৫ নভেম্বর ১২ ১৭:৩৫:৩২
বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শ্যামা পূজা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : ধর্ম মানুষের জীবনস্বত্বা। এ স্বত্বা মানুষের রক্তের গ্রুপের মত। ইচ্ছা করলেই যেমন রক্তের গ্রুপ পরিবর্তন করা যায় না তেমনি পরিবর্তন করা যায় না ধর্মীয় স্বত্বা। খ্রীষ্টান মিশনারীরা তাদের দেশের জিজিয়া করের টাকা এ দেশের সংখ্যালঘু সনাতন ধর্মীয় অশিক্ষিত ও হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে ধর্মান্তরের চেষ্টা অব্যহত রেখেছে।

তাদের এই প্রচেষ্টায় উদ্ধুব্ধ হচ্ছে অন্য ধর্মালম্বীরা। তারাও কৌশলে সনাতন ধর্মালম্বীদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করছে। ফলে সনাতন ধর্মালম্বীরা ক্রমশঃ সংখ্যালঘু থেকে সংখ্যালঘুতরে পরিণত হচ্ছে। শ্রীমদবাগবত গীতা পাঠ করে নিজের ধর্মীয় স্বত্ত্বাকে জাগ্রত করে ধর্মান্তরের যে কোন প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করতে হবে।

বুধবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের হাঁসখালি সার্বজনীন শ্রীশ্রী কালীপুজা মন্দিরে সনাতন ধর্ম জাগ্রত মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত গীতা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশিষ্ঠ গীতা বিশেষজ্ঞ ষষ্ঠী চরণ পাল এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জেলায় ২৮টি খ্রীষ্টান মিশনারীর লোকজন ধর্মের দালাল সেজে দরীদ্র ও প্রায় অশিক্ষিত সনাতন ধর্মালম্বীদের বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে নদীর ঘোলা জলে স্নান করিয়ে লাল জুস পান করিয়ে কানে কুমন্ত্রণা দিয়ে দিয়ে তাদের কাছ থেকে ধর্মান্তর সম্পর্কিত কাগজে সাক্ষর করিয়ে নিচ্ছে। তারা এ তালিকা প্রশাসনে জমা দিয়ে সরকারি সুবিধা আদায় করে লুটপাট করছে। এটা দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর। বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করে ওইসব ষড়যন্ত্রকারিদের প্রতিহত করতে হবে। ধর্মের নামে ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।

হাড়িভাঙা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকুমার মণ্ডলের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি ম-লীর সদস্য গোষ্ট বিহারী মণ্ডল, সদর শাখার সাধারণ সম্পাদক নিত্যানন্দ আমীন,জয় মহাপ্রভু সেবক সংঘের সাধারন সম্পাদক রঘুজিৎ গুহ, মানবাধিকার কর্র্মী রঘুনাথ খাঁ, ব্যাংক কর্মকর্তা বিমল কুমার সানা, হাঁসখালি কালীপুজা উদযাপন কমিটির সদস্য মধুসুধন মণ্ডল প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে স্থানীয় সনাতনধর্মালম্বীদের মাঝে সাবেক বিচারপতি গৌর গোপাল সাহার লেখা পবিত্র গীতা তুলে দেওয়া হয়।

এরপর সনাতন ধর্ম জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে একই ওয়াে র্ডর গাইয়াখালি গ্রামের কালীপদ দাসের বাড়িতে অনুষ্ঠিত কালীপূজা মণ্ডপে একটি সাংস্কুতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে সংগীত পরিবেশন করেন নিরঞ্জন সানা ও স্বদেশ রায়। পবিত্র গীতা নিয়ে নাতিদীর্ঘ আলোচনা করেন ষষ্ঠী চরণ পাল।

সেখানে বেশ কিছু গীতা দান করা হয়। তবে গৌরহরিসহ সনাতন ধর্মালম্বীদের পিছিয়ে পড়া কয়েকজন স্থানীয় কয়েকটি প্রভাবশালীদের আচরণের ফলে এলাকার মানুষ অন্য ধর্মের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে বলে অভিযোগ করেন। তবে ভুল বুঝিয়ে কাগজে কলমে খ্রীষ্ঠান ধর্মালম্বী হিসেবে দেখানো পঁচা কালীদাস নিজ সনাতন ধর্মের প্রতি আনুগত্যতা প্রকাশ করে গীতা বিশারদ ষষ্ঠী চরণ পালের হাতে নিজের কোন একটি গীতা তুলে দেন। তার হাতেও জাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে একটি গীতা তুলে দেওয়া হয়। নিজে পড়তে না জানলেও ছোট মেয়ে নীপা দাসের মাধ্যমে গীতার মাহাত্ম্য উপলব্ধি করে তা অন্যদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন বলেও জানান তিনি।

পরে সনাতন ধর্ম জাগরণ মঞ্চের নেতৃব্ন্দৃ খেসারাবাদ ও বলাবাড়িয়া সার্বজনীন কালীপূজা মণ্ডপে প্রতিমা দর্শণ শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রেখে স্থানীয় সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে গীতা প্রদান করেন। বুধবার রাতেই সকল প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

(আরকে/এএস/নভেম্বর ১২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test