E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গাজীপুরে নিখোঁজের দেড় বছর পর ডোবা থেকে কংকাল উদ্ধার

২০১৫ নভেম্বর ১৩ ২০:১৮:৩৮
গাজীপুরে নিখোঁজের দেড় বছর পর ডোবা থেকে কংকাল উদ্ধার

গাজীপুর প্রতিনিধি :একেই বলে, ‘পাপ বাপকেও ছাড়েনা’। স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক বোরহান খালাসীকে হত্যা করে বুকে-পিঠে ইট ও খোয়ার বস্তা বেঁধে লাশ ডোবার কাঁদা-মাটিতে লুকিয়ে রেখেছিলেন মাদরীপুর সদরের পাঁচখোলা গ্রামের নান্নু শেখ। ঘটনার পর ১৮ মাস কেটে যাওয়ায় ভেবে ছিলেন, ধামাচাপা পড়েছে হত্যাকান্ড।

কিন্তু তার শেষ রক্ষা হয়নি। গত ২ অক্টেবর নান্নু শেখ গ্রামে গেলে বোরহানের আত্মীয়দের জেরার মুখে সব স্বীকার করেন। পরে তাকে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেলে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ গাজীপুরের দক্ষিণ সালনার মুন্নি লালের বাড়ির পরিত্যাক্ত ডোবা থেকে নিখোঁজ বোরহান খালাসির কংকাল উদ্ধার করে।

বোরহান খালাসী মাদারীপুর সদরের হাজরাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার খালাসির ছেলে। অপরদিকে গ্রেপ্তার হওয়া নান্নু শেখ (৪৮) একই এলাকার পাঁচখোলা গ্রামের মৃত আইয়ুর আলী শেখের ছেলে।

জয়দেবপুর থানার এসআই সৈয়দ আবুল হাশেম জানান, বোরহান খালাসি এবং নান্নু শেখ পরস্পর দূরসম্পর্কের বেয়াই এবং দুইজনই পেশায় দিনমজুর ছিলেন। নান্নু শেখ ৪ এবং বোরহান ২ সন্তানের জনক। এক পর্যায়ে নান্নু শেখের স্ত্রী রেবা বেগমের (৩৫) সাথে বোরহানের পরকয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায় দুই বছর আগে রেবা বেগম দুই সন্তানসহ রোবহানের সাথে পালিয়ে গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকায় আসে। সেখানে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ফজলুল হকের টিনসেট একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে।

কিছুদিন পর বোরহান ও রেবার মধ্যে কলহ বাঁধে। রেবা মোবাইল ফোনে নান্নু শেখের সাথে যোগোযোগ করে এবং গাজীপুরের ঠিকানাও দেয়। নান্নু শেখ স্ত্রী রেবার সহযোগিতায় গত বছরের ২৮ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে দক্ষিণ সালনার ওই বাড়িতে আসে। রাতেই ঘুমন্ত বোরহান খালাসিকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। পরে উলঙ্গ করে বুকে-পিঠে ইট ও খোয়া বেঁধে লাশ পাশের মুন্নি লালের ডোবায় কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রেখে স্বামী-স্ত্রী পালিয়ে যায়।

এদিকে বোরহান খালাসীর মাদারীপুরের স্ত্রী ও আত্মীরা তাকে কোথাও খোঁজে পাচ্ছিলেন না। দেড় বছর পর গত ২ অক্টেবর নান্নু শেখ গ্রামের বাড়িতে যায়। খবর পেয়ে বোরহানের লোকজন নান্নুকে ধরে বোরহান ও তার স্ত্রী রেবার কথা জানতে চায়। এ সময় তারা নান্নুকে উতম-মধ্যম দিলে এক পর্যায়ে সে বোরহান খালাসিকে খুনের কথা স্বীকার করে। পরে তারা নান্নুকে পুলিশে সোপর্দ করে। গত ১১ অক্টোবর এ ঘটনায় বোরহানের ভাগিনা আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে গাজীপুর আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলা গ্রহনের নিদের্শ দিলে গত ১৫ অক্টোবর জয়দেবপুর থানায় মামলা হয়।

তিনি আরো জানান, ওই মামলায় নান্নু শেখকে ওই মামলা (শোন এরেষ্ট) গ্রেপ্তার দেখিয়ে মাদারীপুর থেকে গাজীপুরে আনা হয়। গত বুধবার ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করলে আদালতের বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের তৃতীয় দিন নান্নু খুনের কথা স্বীকার করে। পরে তাকে নিয়ে শুক্রবার দুপুরে দক্ষিণ সালনায় যাওয়া হয়। ডোবাটি প্রায় ৪ ঘন্টায় সেচে বিকেল ৩টার দিকে বোরহানের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।

জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, কঙ্কালের সব গুলো হাড়ই উদ্ধার হয়েছে। নান্নু শেখের স্ত্রী রেবা বেগমকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। হত্যাকান্ডের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

(এসএএস/এসসি/নবেম্বর১৩,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test