E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুয়াকাটায় পর্যটকদের নিরাপত্তায় ’ওরা’ ১৭ জন

২০১৫ ডিসেম্বর ০২ ১৪:৫৬:১৭
কুয়াকাটায় পর্যটকদের নিরাপত্তায় ’ওরা’ ১৭ জন


কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : কুয়াকাটা সৈকতে সমুদ্র স্নানে পর্যটকদের নিরাপত্তায় মোবাইল “টিউব ও লাইফ জ্যাকেট” ব্যবসা এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সম্রুদ্রে গোসলে নেমে পর্যটকরা যাতে ভাটার টানে ভেসে না যায় এ জন্য সাগরে একটি টহল বোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৭ বেকার যুবক এ উদ্যেগ নিয়েছে। তাদের সাধুবাদ জানাচ্ছে পর্যটকসহ স্থানীয়রা।

কুয়াকাটা সাগর সৈকত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির ১৭ সদস্য। এ সদস্যরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুঁজি সংগ্রহ করে নিজ উদ্যেগে এ ভাসমান ব্যবসা পরিচালনা করছেন। গত মাসে কুয়াকাটা সৈকতে গোসলে নেমে বরিশাল মেডিকেল কলেজের এক ছাত্র সাগরে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যুর পর এখন সৈকতে দূর থেকে যে পর্যটকরাই আসছে তারা নিরাপত্তা হিসেবে সাগরে গোসলে নামার আসে সাথে নিয়ে যাচ্ছে টিউব কিংবা লাইফ জ্যাকেট। এমনকি যারাও টিউব বা লাইফ জ্যাকেট ছাড়া সাগরে গোসলে নামছে তাদেরও সতর্ক করে দিচ্ছে এ মোবাইল ব্যবসায়ী ও তাদের ভলানটিয়ারা।

কুয়াকাটা সাগর সৈকত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানাযায়, “সেইফ টুরিষ্ট, সেইফ কুয়াকাটা” এ লক্ষ্য নিয়ে সৈকতে ১৭ ব্যবসায়ী পাঁচ শতাধিক টিউব, আড়াই শতাধিক লাইফ জ্যাকেট, দুই শতাধিক ছাতা ও বেঞ্চ রয়েছে। সৈকতের জিড়ো পয়েন্ট থেকে পূর্ব-পশ্চিমে এক কিলোমিটারের মধ্যে তারা এ ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আঃ ছত্তার জানান, তিনি সৈকতে ২৭ টি টিউব, ২০ টি লাইফ জ্যাকেট,১৫টি ছাতা ও ১৫ টি বেঞ্চ রয়েছে। প্রতিটি টিউব ও লাইফ জ্যাকেট প্রতিঘন্টা ৫০ টাকা করে ভাড়া দিচ্ছেন। সে হিসেবে প্রতিদিন তার ২০০-৩০০ টাকা উপার্জন হয়। কুয়াকাটায় পর্যটকদের আগমন বেশী হলে উপার্জন কখনও কখনও হাজারও ছাড়িয়ে যায়।

এ সমিতির সদস্যরা জানান, এ কমিটির সদস্যদের সন্তানরাই বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে সাগর পাড়ে ঘুরে বেড়ান। সাগরে গোসলে নেমে যদি কেউ ভুলে দূরে চলে যায় ওই সদস্যরা তাদের সতর্ক করেন এবং তীরে ফিরে আসতে বলেন। যদি কেউ সবার অগোচরে গভীর সমুদ্রে ভেসে গেলে তাদের একটি ফাইবার বোট আছে। ওই বোটে করে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। গত সপ্তাহেও দুইজনকে তাঁরা ফিরিয়ে এনেছেন।

কুয়াকাটায় স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে ভ্রমনে আসা কুমিল্লার সায়ন্ত বর্মন জানান, তার তিন ছেলে কেউই সাঁতার জানে না। কিন্তু সমুদ্র স্নান করবে বলে বায়না ধরেছে। তিনজনকেই তিনটি লাইফ জ্যাকেট গায়ে দিয়ে স্নানে পাঠিয়েছেন। এখন তারা নিরাপদ। ঢাকার নবাবপুরের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, কুয়াকাটা সৈকতের সাগরে গোসল নিরাপদ হলেও স্থানীয়দের এই উদ্যেগ প্রশংসনীয়।

এ সমিতির সভাপতি বেলাল খলিফা জানান, কুয়াকাটা সৈকতে আগে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এ ব্যবসা পরিচালিত হলেও এখন তারা সংঘবদ্ধভাবে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে টিউব, লাইফ জ্যাকেট ব্যবসা চালাচ্ছেন। তার নিজের শতাধিক গাড়ির রাভারের টিউব, ৫০ টি লাইফ জ্যাকেট, পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য ৩০ টি ছাতা ও ৩০ টি বেঞ্চ বসিয়েছেন। আগে মাছের ব্যবসা করলেও ব্যবসায় লোকসানের কারনে এখন সৈকতে এ ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তাদের লক্ষ্য এ ব্যবসা করে তারাও লাভবান হচ্ছেন এবং কুয়াকাটায় যারা ভ্রমনে আসছেন তাদের সমুদ্র স্নান যাতে নিরাপদ হয় এবং কোন বিপদে না পড়েন সেদিকে খেয়াল রাখা।

(এমকেআর/এইচআর/নভেম্বর ০২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test