E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিশুবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়নে এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত 

২০১৫ ডিসেম্বর ২০ ২০:১১:৪৩
শিশুবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়নে এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত 

দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি :ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ ভবনের ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহায়তায় সোসাইটি ফর আন্ডার প্রিভিলেজ্ড ফ্যামিলিজ (সাফ) এর আয়োজনে শিশুবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়নে করনীয় শীর্ষক এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

রবিবার সাফ সিএসএসপি প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ মনির উদ্দিন নিশাত এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হারুন-অর-রশিদ। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম, জেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম ও দৈনিক কালের কন্ঠ এর ময়মনসিংহ ষ্টাফ রিপোর্টার নিয়ামুল কবীর সজল।

অনান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার বোবরচর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী, ঈশ্বরদিয়া ইউপি চেয়ারম্যার মোরশেদুল আলম জাহাঙ্গীর, সিরতা ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন আহমেদ বকুল, ঘাঘড়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাহান সরকার সাজু, পরানগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, অষ্টাধর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল হক বাবলু, তারাকান্দা উপজেলার কামারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রব সরকার ও তারাকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার, বাংলাভিশন টিভির জেলা প্রতিনিধি অমিত রায়, আরটিভির জেলা প্রতিনিধি বিপ্লব বসাক, ১৬ টি কমিউনিটি ওয়াচগ্রুপের সদস্য, ১৬ টি শিশুক্লাবের সদস্য ও সাফ প্রতিনিধি বৃন্দ।

এ্যাডভোকেসি সভায় স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে কর্মশালার উদ্দেশ্য বর্ননা করেন সাফ সিএসএসপি প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ মনির উদ্দিন নিশাত। সাফ সিএসএসপি প্রকল্পের কর্মএলাকার ইউনিয়ন পরিষদ ও কমিউনিটি ওয়াচগ্রুপের সমন্বয়ে প্রনীত ৬ টি শিশুবান্ধব নীতিমালা সমূহ পরিবার, সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে চর্চার বিষয়ে উপস্থিত সরকারী বেসরকারী সকল কর্মকর্তার আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। শিশু সংবেদনশীল নীতিমালা সমূহ যথাক্রমে - “শিশুকে খেলাধুলা ও বিনোদনের সুযোগ করে দেয়া, শিশুর মতামতকে প্রধান্য দেয়া, শিশুকে শ্রমে সম্পৃক্ত করা থেকে বিরত থাকা, অবশ্যই শিশুদেরকে বিদ্যালয়ে প্রেরন করতে হবে, শিশুকে শারীরিক ও মানষিক শাশিÍদেয়া যাবে না, বাংলাদেশের বিবাহ আইন অমান্য করে বাল্য বিবাহ দেয়া যাবে না।” তিনি বলেন, সাফের কর্মএলাকায় জরিপ মূল্যায়নের তথ্যগত চিত্র বিশ্লেষন করলে সহজে অনুমেয় যে সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তাদের সহযোগিতা পেলে সর্বস্তরে শিশুবান্ধব নীতিমালার চর্চা চালু করা সম্ভব।

সাফ সিএসএসপি প্রকল্পের বর্তমান কার্যক্রম এর উপর একটি ধারনসূচক চিত্র মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করেন সিএসএসপি প্রকল্পের শিক্ষা বিশেষজ্ঞ মোঃ জাহিদুল ইসলাম। সিএসএসপি প্রকল্পে গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে অর্জন সমূহ সভায় তুলে ধরেন।

তারাকান্দা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, শিশুসংবেদনশীল নীতিমালা সমূহ বাস্তবায়ন হলে শিশুদের সার্বিক উন্নয়ন ও বিকাশ নিশ্চিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ৬ টি নীতিমালার মধ্যে দু‘টি নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য আমার ইউনিয়ন পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে অর্থাৎ তারাকান্দা ইউনিয়নকে শিশুশ্রম এবং বাল্য বিবাহ মুক্ত করার জন্য আমার সংগ্রাম চলছে। আমি আশা করি সরকারী বিভিন্ন সহযোগিতার মাধ্যমে সাফকে সাথে নিয়ে এই লড়ায়ে আমি জয়ী হবো।

ঈশ্বরদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদুল আলম জাহাঙ্গীর বলেন, হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী নিয়ে চরাঞ্চলে আমার ইউনিয়ন পরিষদ, যেখানে শিশুদের পরিবার অধিকাংশ সময় দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে থাকে। চাহিদা অনুযায়ী সরকারী স্কীম সুবিধার বরাদ্ধ কম থাকায় ইউনিয়ন পরিষদের আন্তরিকতা থাকা সত্বেও সকল দরিদ্র পরিবারকে স্কীমের সুবিধায় আনতে পারছি না। যার কারনে শিশুবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জএর মুখে পড়ছে। আমি আশা করছি সাফ এর মত বেসরকারী এবং সরকারী পর্যায়ের আন্তরিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে ঝরেপড়া এবং অবহেলিত শিশুদের উন্নয়ন তরান্বিত হবে। তিনি আরও বলেন অন্তত একটি ইউনিয়নকে মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলে সকলের কাছে অনুকরনীয় হিসেবে উপস্থাপন করাযেতে পারে।

সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঝরেপড়া রোধ ও উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে উপবৃত্তি, স্কুল ফিডিং কার্যক্রম সহ নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তায়ন করছে। তদুপরি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিশু ঝরেপড়ার কারনে সরকার রস্ক প্রকল্পের মাধ্যমে ঝরেপড়া শিশুদের ২য় সুযোগ এর আওতায় ঝরেপড়া রোধ করার চেষ্টা করছে। আমি মনে করি সাফও সেই লক্ষে কাজ করছে। তাই সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করলে শিশুদের সার্বিক কল্যান নিশ্চিত হবে।
ময়মনসিংহ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে যদি কোন এতিম শিশু থেকে থাকে তাহলে সমাজসেবার কার্যালয়ের মাধ্যমে সেই শিশুদের জন্য বিনামূল্যে থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। আমি মনে করি ইউপি চেয়ারম্যান বৃন্ধ ৬ টি শিশুবান্ধব নীতিমালা চর্চায় অগ্রনী ভূমিকা পালন করবেন এবং তিনি উপকারভোগী নির্বাচনের সময় শিশুদেরকে প্রাধান্য দিয়ে তালিকা তৈরী করার কথা বলেন।

প্রধান অতিধির অলোচনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হারুন-আর-রশিদ বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে দারিদ্রতা কোন সমস্যা নয় শুধুমাত্র অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি হলে শিক্ষার সফলতা সম্ভব এবং তিনি এ লক্ষ্যে ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে আহবান জানান অভিভাবক সমাবেশের মাধ্যমে উল্লেখিত ৬ টি নীতিমালা চর্চায় উদ্ধুদ্ধ করার জন্য। শিশুদের পাশে থেকে শিশুদের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে আহবান জানান। তিনি আরও বলেন যদি সদিচ্ছা থাকে তাহলে একটি পরিবারের শিশুর সার্বিক উন্নয়নের জন্য একজন ব্যাক্তিই যথেষ্ট। তিনি সাফ এর কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন সাফের এরিয়াকো-অর্ডিনেটর রজত কান্তি দেবনাথ।


(এনএস/এস/ডিসেম্বর২০,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test