E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কলাপাড়া পৌরসভায় পুুরুষের চেয়ে নারী ভোটার বেশি

২০১৫ ডিসেম্বর ২১ ২১:৩৭:০০
কলাপাড়া পৌরসভায় পুুরুষের চেয়ে নারী ভোটার বেশি

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :সমুদ্র উপকূলীয় পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে পুরুষ ভোটারদের সাথে অধিকার আদায়ে সরব এখন নারী ভোটাররা। নিজ ভোট যোগ্য ব্যক্তিকে দিতে তারা অংশ নিচ্ছেন প্রার্থীদের প্রতিটি উঠান বৈঠকে। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারাভিযানেও অংশ নিচ্ছেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। উঠান বৈঠকে জানতে চাচ্ছেন বিজয়ী হলে নারী উন্নয়নে তারা কি কি পদক্ষেপ নিবেন।

কলাপাড়া পৌরসভায় পুরুষ ভোটারের চেয়ে ৫২ জন নারী ভোটার বেশি। ১১ হাজার ২৬ ভোটারের বিপরীতে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ৪৮৭ এবং নারী ভোটার ৫ হাজার ৫৩৯ জন। তাই এই নারী ভোটারদের সমর্থন পেতে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

পৌরশহরের নয়টি ওয়ার্ডেই মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর উঠান বৈঠকে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি বৈঠকের সামনের সারিতে দেখা যায় ১০০-১৫০ জন নারীর উপস্থিতি। এরা সবাই ভোটার। কোন দলের পক্ষে না, তারা উপস্থিত থাকছেন সব প্রার্থীর উঠান বৈঠকেই। এছাড়া নির্বাচনী প্রচারাভিয়ানেও তাদের উপস্থিত চোখে পড়ার মতো।

কলাপাড়া পৌর শহরে এখনও ইভটিজিং চলে। স্কুলের সামনে বখাটেদের উৎপাতে ছাত্রীদের এমনকি অভিভাবকদেরও একাধিকবার হেনস্তা হতে হয়েছে। শহরে পাবলিক টয়লেট নির্মান হলেও নারীদের জন্য কোন টয়লেট নির্মান করা হয়নি। বাসষ্টান্ডে নারীদের জন্য নেই যাত্রী ছাউনি। শহরের প্রানকেন্দ্রে ফুটপথ তৈরি করা না হওয়ায় যেকোন প্রয়োজনে নারীরা বাজারে প্রয়োজনীয় কাজে বের হলে প্রচন্ড ভীড়ে তাদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কোন পারিবারিক সমস্যায় নির্বাচিত নারী কাউন্সিলরদের তারা কাছে পান না। তাই এই সমস্যা উত্তরনে এবার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা কি প্রতিশ্রুতি দেন তা জানতেই নারীরা এবার নির্বাচনে সরব হয়েছেন বলে জানালেন উঠান বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নারী ভোটার।

পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের আলো রানী, বলেন, তিন বার ভোট দিয়েছি। কিন্তু আমাদের জন্য নির্বাচিত মেয়র,কাউন্সিলরা কিছুই করেন নি। নির্বাচিত নারী কাউন্সিলরা ভোটের আগে শতবার বাসায় আসলেও নির্বাচিত হওয়ার পর আর তাদের মুখই দেখি নি।

ভোটাররা বলেন, পৌর শহরে মহিলা মার্কেট নির্মান হলেও সেখানের ব্যবসায়ীরা সব পুরুষ। প্রভাবশালীরা দোকান বরাদ্দ নিয়ে তা ভাড়ায় দিয়ে চালাচ্ছেন। পৌর মেয়র নির্বাচিত মেয়র প্রার্থীরা এই মহিলা মার্কেট থেকে পুরুষ উচ্ছেদ করবেন কিনা তার প্রতিশ্রুতি চান। একাধিক নারী ভোটার বলেন, নির্বাচিত মেয়র কাউন্সিলররা শহরের উন্নয়ন করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নারী উন্নয়নে তারা কি পদক্ষেপ নিবেন তা জানতেই উঠান বৈঠকে আসছেন।

১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ড থেকে গত নির্বাচনে বিজয়ী সংরক্ষিত কাউন্সিলর লাইজু হেলেন লাকী এবার কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন, নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের কি কাজ গত ৫ বছরেও জানতে পারেন নি। গত নির্বাচনের আগে ঘরে ঘরে গিয়ে নারীদের অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু তাদের জন্য কিছুই করতে পারেন নি। নারীদের নিয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা ছাড়া তাদের জন্য নির্দিষ্ট বরাদ্দ না থাকায় পৌরসভা থেকে কোন সহায়তা করতে পারেন নি।

আ’লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী বিপুল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, নারীরা এখন অনেক সচেতন। তিনি নির্বাচিত হলে সন্ত্রাসমুক্ত পৌর শহর গঠন করবেন। এতে নারীরা নির্বিঘেœ ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন। তাছাড়া যাত্রী ছাউনি ও নারীদের জন্য পৃথক টয়লেট নির্মান করারও তার পরিকল্পনা রয়েছে।

বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হুমায়ুন কবির শিকদার বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে বর্তমানে নারীদের যে সমস্যা রয়েছে তা সমাধানে চেষ্টা করবেন।

জাপা(এ) সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হুমায়ুন কবির মাসুম বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে শুধু আধুনিক পৌরশহর গঠনে কাজ করবেন। যে খানে পুরুষ কিংবা নারী কারোরই সমস্যা থাকবে না।

(এমকেআর/এস/ডিসেম্বর২১,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test