E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাঘের ভয়ে আতঙ্কিত দুই গ্রামের মানুষ

২০১৫ ডিসেম্বর ২৫ ১৮:৩১:২৯
বাঘের ভয়ে আতঙ্কিত দুই গ্রামের মানুষ

বাগেরহাট প্রতিনিধি : সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ থেকে নদী সাঁতরে গভীর রাতে লোকালয়ে আসা দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার দু’দিনেও ধরা পড়েনি। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বনরক্ষী ও টাইগার রেস্পন্ট টিমের সদস্যরা শত চেষ্টা করেও বাঘ দুটিকে আটক করতে পারেনি।

লোকালয় দুটির সর্বত্র দেখা যাচ্ছে বাঘের পায়ের তাজা ছাপ। বাঘ দুটি লোকালয়ে অবস্থান করায় বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবন সন্নিহিত সোনাতলা ও উত্তর রাজাপুর গ্রামের আমজনতা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অনেকে আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে ‘বাঘ মামা’র ভয়ে অন্যত্র আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ ও এলাকাবাসি জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের ভোলা ফরেস্ট ক্যাম্প সংলগ্ন বন থেকে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার বগী-শরণখোলা নদী সাঁতরে সোনাতলা গ্রামে চলে আসে। এরপর একই দিন ভোর ৬টা দিকে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জর নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্প সংলগ্ন বন থেকে অপর একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মরা ভোলা নদী সাঁতরে শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামে ঢুকে পড়ে। লোকালয়ে বাঘ মামা ঢুকে পড়ার পর থেকে শরণখোলার সোনাতলা ও উত্তর রাজাপুর গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এলাকা দুটির মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ও কাজকর্ম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঘটনার পর থেকেই বাঘটি দুটিকে সুন্দরবনে ফেরৎ পাঠানোর জন্য বনরক্ষী, টাইগা রেস্পন্ট টিমের সদস্যসহ শত শত মানুষ দু’দিন ধরে প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছেন। সুন্দরবন বিভাগের পক্ষ্য থেকে মাইকিং করে এলাকাবাসীদের শতর্ক থাকার আহবান করা হচ্ছে। দিনের বেলা বাঘ দুটি মানুষের ভয়ে গ্রামের ঝোপঝাড়ের মধ্যে লুকিয়ে থাকছে। রাজাপুর গ্রামে ঢুকে পড়া বাঘটি একটি গরু খেয়ে ফেলেছে।

শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের আবু রাজ্জাক আকন জানান, বৃহষ্পতিবার রাত ২টার দিকে তজু মিয়ার গেট সংলগ্ন নদীতে খলিল জমাদ্দার নামের এক জেলে মাছ ধরছিলেন। এমন সময় বাঘটি নদী সাঁতরে গ্রামে ঢুকে পড়ে। তিনিই প্রথম বাঘ আসার খবর এলাকাবসাীকে জানান। দু’দিন ধরে সোনাতলা গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বাঘটির পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়া গেছে। একই দিন ভোর ৬টা দিকে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জর নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্প সংলগ্ন বন থেকে অপর একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মরা ভোলা নদী সাঁতরে শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামে ঢুকে পড়তে দেখে বনরক্ষীরা। এই গ্রামেও গত দু’দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় বাঘটির পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়া গেছে। এই গ্রামে ঢুকে পড়া বাঘটি ইতিমধ্যে খেয়ে ফেলেছে একটি গরু।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ ও চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা ফরেষ্ট রেঞ্জার গাজী মতিয়ার রহমান জানান, লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার পর বৃহম্পতিবার ভোর থেকে তেড়াবেকা, ভোলা, দাসের ভারাণী, ধানসাগর ও নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের কর্মকর্তা, বনরক্ষী ও টাইগার রেস্পন্ট টিমসহ কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটির কয়েকশ’ মানুষ এলাকা অবস্থান করছেন। এখনো শত শত মানুষ গ্রাম পাহারা দিচ্ছে। ক্যাম্পগুলোর বনরক্ষীদের নিজ নিজ এলাকা নজরদারীতে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এলাকা দুটির মসজিদ থেকে মাইকিং করে মানুষজনকে শতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। বাঘ দুটিকে যে কোনো ভাবে হোক সুন্দরবনে ফেরত আনতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সর্বাতœক চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে ট্র্যংকুলাইজিং গান ব্যবহার করা হবে।

(একে/এএস/ডিসম্বের ২৫, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test