E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন

২০১৬ জানুয়ারি ০৭ ১৮:৪৪:২৪
সাতক্ষীরায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দশম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহষ্পতিবার শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন ও মানববন্ধন করেছে।

এদিকে জনবিক্ষোভের হাত থেকে বাঁচতে প্রধান শিক্ষক জিএম সাঈদার রহমান টাকার থলি নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের ম্যানেজ করতে ব্যস্ত রয়েছেন।

থাজরা ই্উনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বিপ্লব কুম্রা দাস জানান, প্রধান শিক্ষক জিএম সাইদার রহমান একাই স্কুলের একটি কক্ষে বসবাস করেন। এ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর এক বিবাহিত ছাত্রী প্রতিদিনের মত বুধবার সকালে স্কুলে প্রাইভেট পড়তে আসে সহকারি শিক্ষক মশিউর রহমানের কাছে। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে প্রাইভেট শুরু হওয়ার আগেই প্রধান শিক্ষক ওই ছাত্রীকে ঈশারা করে তার কক্ষে ডাকেন।

এ সময় ওই ছাত্রী কয়েকদিন ক্লাসে আসেনি কেন তা জানতে চান প্রধান শিক্ষক। স্বামীর বাড়ি পাইকগাছায় গিয়েছিল বললে প্রধান শিক্ষক তাকে সেখানে না যেয়ে তার কাছেই আসতে বলেন। তিনি ওই ছাত্রীর সকল চাহিদা মেটাতে পারবেন বলে তার হাত ধরে কাছে টানতে যান। ছাত্রীটি প্রধান শিক্ষকের হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাইরে বেরিয়ে আসে। বিষয়টি সে সহকারি শিক্ষকা শরিফা নাসরিন, সহকারি শিক্ষক মশিউর রহমান, সহকারি প্রধান শিক্ষক আকুল কৃষ্ণ বাছাড়সহ কয়েকজনকে অবহিত করেন। শিক্ষকরাই বিষয়টি তাকে অবহিত করলে তিনি স্কুলে আসার আগেই প্রধান শিক্ষক চলে যান। বিষয়টি নিয়ে তিনি স্কুলের শিক্ষক মণ্ডলী, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্যসহ ওই ছাত্রীর স্বামী ও অভিভাবকদের নিয়ে আলোচনা বসেন।

তিনি আরো জানান, বৃহষ্পতিবার সকাল ১০ টায় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে স্কুল চত্বরে বিক্ষোভ দেখায়। দুপুর ১২টার দিকে তারা স্কুলের সামনে একই দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। পরে আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে পুলিশ এসে দোষী শিক্ষককের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে ছাত্ররা শ্রেণীকক্ষে ফিরে যায়।

তবে ওই ছাত্রী জানান, শুধু বুধবার নয়, প্রধান শিক্ষক তাকে ইতিপূর্বে কয়েকবার কুপ্রস্তাব দিয়েছেন।

খাজরা ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক পরিমল কুমার মণ্ডল, রমজান আলী, আজমল হোসেনসহ কয়েকজন জানান, প্রধান শিক্ষক জিএম সাঈদার রহমানের বাড়ি উপজেলার দরগাপুর গ্রামে। তার স্ত্রী ও সন্তানরা থাকেন সাতক্ষীরার আলীয়া মাদ্রাসা এলাকায়। জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ওই প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে একাধিক মেয়েকে কু’প্রস্তাব দিয়েছেন। তারা পরিবার প্রধানদের জানালেও সামজিক সম্মানের ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখেন। বুধবারের ঘটনায় নিজেকে বাঁচাতে প্রধান শিক্ষক টাকার থলি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছুটে বেড়াচ্ছেন।

এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জিএম সাঈদার রহমান বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ঠিক নয়। একটি মহল তাকে সরানোর জন্য এ ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে।

ঘটনাস্থল থেকে ঘুরে এসে আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রশীদ সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান মুন্সি জানান, এ ঘটনায় ওই স্কুল ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্তে একজন উপপরিদর্শককে পাঠানো হয়েছে।

(আরকে/এএস/জানুয়ারি ০৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test