E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কলাপাড়ায় ৫ রাখাইন শিক্ষার্থীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ

“রাখাইন ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কোন মুসলমান বন্ধুত্ব করবা না”

২০১৬ জানুয়ারি ২৪ ১৭:২৩:৩৬
“রাখাইন ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কোন মুসলমান বন্ধুত্ব করবা না”

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :রাখাইন ছাত্র-ছাত্রীর সাথে কোন মুসলমান ছাত্র-ছাত্রীদের বন্ধুত্ব না করতে নির্দেশ দিয়েছেন এক ধর্মীয় শিক্ষক। এমনকি প্রকাশ্যে নবম শ্রেণির রাখাইন ছাত্রী খেনখেনসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং এ কথা কাউকে জানালে তাদের স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার তুলাতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ ও অপমানিত হয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে খেন খেনসহ তুলাতলী রাখাইন পাড়ার পাঁচ শিক্ষার্থী।

সন্তানদের ভবিষৎ চিন্তায় উদ্বিগ্ন খেন খেন রাখাইন ছাত্রীর মা মায়া রাখাইন এ ঘটনায় গত ২১ জানুয়ারি কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দীপক কুমার রায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনার তদন্ত ও ফয়সালার জন্য কলাপাড়া থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

অভিযোগে রাখাইন শিক্ষাথীর্র মা মায়া রাখাইন উল্লেখ করেছেন, তার মেয়ে খেন খেন ওই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। গত ১০ জানুয়ারি ওই স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা আফজাল হোসেন তার মেয়ে খেন খেনকে ক্লাশ চলাকালীন বলেন, ‘তোমরা অপবিত্র। তোমাদের ধর্ম ও অপবিত্র। তোমরা বিভিন্ন ধরনের কু-খাবার ভক্ষণ কর। তোমরা জাহান্নাম বাসী। কোন মুসলিম ছাত্র/ছাত্রী কোন রাখাইন ছাত্র/ছাত্রীর সঙ্গে যেন বন্ধুত্ব না করে। শিক্ষকের এ অপমাননাকর উক্তি প্রধান শিক্ষককে জানানো হলেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে শিক্ষক মাওলানা আফজাল হোসেন বলেন, আমি ইসলাম ধর্মের হালাল-হারাম বিষয় পড়াচ্ছিলাম। ও (খেন খেন) যে ক্লাশে ছিল তা খেয়াল করিনি। কাউকে উদ্দেশ্য করে বলিনি।

প্রধান শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, এ বিষয়ে মাওলানা আফজাল হোসেনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ইসলাম ধর্মের বিধানে কি কি খাওয়া হালাল ও হারাম তা পড়াচ্ছিলেন। রাখাইনদের উদ্দেশে কটাক্ষ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

বালিয়াতলী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবিএম হুমায়ুন কবির জানান, বিষয়টি তার কাছে রাখাইন অভিভাবকরা জানালে তিনি প্রধান শিক্ষককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

কলাপাড়া থানার ওসি জিএম শাহ নেওয়াজ সাংবাদিকদের জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে একজন এসআইকে বিষয়টি তদন্ত স্বাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দীপক কুমার রায় জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে তিনি সঙ্গে সঙ্গে কলাপাড়া থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।


(এমকঅোর/এস/জানুয়ারি২৪,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test