সাতক্ষীরায় জমি নিয়ে বিরোধ, সংঘর্ষে আহত ১০

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : বিরোধপূর্ণ জমিতে বোরো চাষ করাকে কেন্দ্র করে উভয় দু’ নারীসহ পক্ষের ১০জন জখম হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গোবরদাড়ি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে নয়জনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গোবরদাড়ি গ্রামের মুজিবর সরদারের ছেলে আশাশুনি গুনাকারকাটি ফাজিল মাদ্রাসার দ্বাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগের ছাত্র অঅবু হুসাইন (১৮), তার বাবা মুজিবর রহমান সরদার (৫৪), তার ভাই আজিজুর রহমান (৫৫), গোবরদাড়ি স্কুল এণ্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ফতেমা খাতুন (১৩), মিজানুর রহমান সরদার (৫৫), তার ভাই জামিনুর রহমান সরদার (৫৩), ভাই আজাহারুল ইসলাম (২৫), হাবিবর রহমান সরদার (৭০), তৈয়বুর রহমান (৫৮) ও পাটকেলঘাটা থানার তৈলকুপি গ্রামের নাজমুল হাসানের স্ত্রী সাথী (২০)।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গোবরদাড়ি গ্রামের আজিজুর রহমান জানান, তার বাবা আফছারউদ্দিন সরদার একই গ্রামের সৈয়দুর রহমানের কাছ থেকেপোড়ামাঠ বিলের গোবদাড়ি মৌজায় এসএ রেকর্ডের আগে ৩৩ শতক জমি কেনেন। ওই জমির মধ্যে ২৬ শতক ডিপি খতিয়ানে তাদের নামে রেকর্ড হলেও সাত শতক হয়নি। এ ছাড়াও তৈয়বর মন্তেজ ও সিরাজুলের কাছ থেকে ৪৮১ দাগে ৪৫ শতক জমি কেনেনতিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা। এর মধ্যে ২৩ শতক জমি তারা দখলে পাননি। এমনকি তাদেরকে লিখে দেওয়ার পরও তৈয়বুর ওই জমি অন্যত্র বন্ধক রাখে। অংশ বহির্ভুত জমি হামিদুরের স্ত্রী গুলশানের কাছে বিক্রি করে দেয় হাবিবুর ও তৈয়বর। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে হাবিবুর ও তৈয়বুরের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলে আসছিল। তৈয়বুরের কোন জমি না খাকলেও জোর পূর্বক জমি দখলে রেখে চাষাবাদ করতে গেলে তাদের সঙ্গে বিরোধ বেধেছে কয়েকবার।

আজিজুর রহমান আরো জানান, তৈয়বর রহমান গত বছরের ১০ এপ্রিল হাফিজুর রহমান হত্যা মামলার পলাতক আসামী। গত বুধবার তারা (আজিজুর) তাদের কেনা জমিতে লাঙ্গল চাষ দিয়ে মই দিতে গেলে প্রতিপক্ষ তৈয়বর রহমান, মিজানুর, জামিনুর বাধা দেয়। তারা বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য লুৎফর রহমানকে অবহিত করেন। তিনি ৩০ জানুয়ারি উভয়পক্ষের নিয়ে আলোচনা বসার সিদ্ধান্ত দিয়ে বিরোধর্পূর্ণ জমিতে কারো না যাওয়ার নির্দেশ দেন।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ইউপি সদস্যের নিষেধ না মেনে তৈয়বর, মিজানুর ও জামিনুর সহ তারে স্বজনরা ওই জমিতে মই দিয়ে ধান লাগাতে যান। এতে বাধা দেন আজিজুর রহমান ও তার স্বজনরা। এতে ক্ষুব্ধ তৈয়বর রহমান ও তাদের লোকজন প্রতিপক্ষ আজিজুর রহমানসহ কয়েকজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় আজিজুর রহমানের লোকজন প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালায়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০জন জখম হয়। নয়জনকে ভর্তি করা হলেও হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় তৈয়বুর রহমান হাসপাতালে ভর্তি হননি।

তৈয়বর রহমান সরদার জানান, শর্ত বহির্ভুত জমি দাবি করা নিয়ে আজিজুরের সঙ্গে তাদের বিরোধ হয়েছে। এতে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিসক ডাঃ মাহাবুবর রহমান জানান, আহত দশজনের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক শেখ জানান, এ ঘটনায় উভয়পক্ষ পৃথক দু’টি অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত করে মামলা নেওয়া হবে।

(আরকে/পি/জানুয়ারি ২৯, ২০১৬)