E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মংলা বাচাঁতে নদীর দু’তীরে শহর রক্ষাবাধ

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ০৩ ১৮:২০:০৬
মংলা বাচাঁতে নদীর দু’তীরে শহর রক্ষাবাধ

বাগেরহাট প্রতিনিধি : দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মংলার দীর্ঘদিরে কাঙ্খিত দাবি পৌর এলাকাকে বন্যা, জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে বাঁচাতে এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক ও সরকারের যৌথ অর্থায়নে মংলা নদীর দু’তীরে ৯৮ কিলোমিটার শহর রক্ষাবাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে এই  প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মানুষের ভোগান্তি দূরসহ বাড়বে জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীলতা। এছাড়া পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে মংলা শিল্প ও বন্দর এলাকার অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ঘটবে।

শিল্প সম্ভাবনাময় মংলা শহরের প্রধান সমস্যা বন্যা, জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের পানি। মংলা পৌর শহর মংলা নদী দ্বারা বিভক্ত। মোট ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে নদীর একপাড়ে ৯টি ও অন্যপাড়ে রয়েছে তিনটি ওয়ার্ড। বর্ষাকালে চার মাস জোয়ারের পানি নিয়মিত ওঠানামা করে প্লাবিত হয় ৯টি ওয়ার্ড। স্থবির হয়ে পড়ে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ও জনজীবন।

মংলা পৌরসভার মেয়র জুলফিকার আলী জানান, প্রকল্পটি পরিবেশবান্ধব ও এর ডিজাইন জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল। শহর রক্ষাবাঁধ বর্ষাকালে জোয়ারের পানি থেকে শহরকে বাঁচাবে। এ ছাড়া ইপিজেডকেও রক্ষা করবে। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে এ প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫০ কোটি টাকা এডিবি এবং ১৭ কোটি টাকার সংস্থান করবে সরকার। প্রকল্পের কাজ শেষ হতে না হতেই শিল্প সম্ভাবনাময় এ এলাকার জমির দাম সাত-আট গুণ বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন পৌর মেয়র।

মংলা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, মংলা র্পোট পৌরসভার তত্তাবাধানে মূল প্রকল্পের আওতায় আরো চারটি উপ-প্রকল্পের কাজ চলছে। এগুলো হলো শহর রক্ষাবাঁধ কাম মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ, শহরের ভেতরে পয়ঃনিষ্কাশন ড্রেনেজ ও ফুটপাতসহ ১০ কিলোমিটার আরসিসি বা কংক্রিট ঢালাইয়ের রাস্তা তৈরি, শহরের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য খাল পুনঃখননসহ নদীমুখে তিনটি সুইসগেট নির্মাণ এবং পৌরসভার রাস্তার পাশে ৭৩টি সৌরবাতি স্থাপন। আরসিসি বা কংক্রিট ঢালাইয়ের রাস্তা দীর্ঘস্থায়ী। তাই জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেলেও এর স্বল্প পরিমাণে ক্ষতি হতে পারে, যা বিটুমিনের কার্পেটিংয়ের তুলনায় অনেক কম।

এছাড়া কার্পেটিংয়ের রাস্তার তুলনায় এর নির্মাণ খরচ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ২৫ শতাংশ কম। খাল পুনঃখননের মাধ্যমে এর মাথায় সুইচগেট স্থাপনের কারণে একদিকে যেমন জোয়ারের পানি শহরে প্রবেশ করতে পারবে না, অন্যদিকে বেশি বৃষ্টির পানি গেটের মাধ্যমে নদীতে ফেলা সম্ভব হবে। যা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার মাধ্যমে জনজীবন স্থবির হওয়া থেকে শহরকে রক্ষা করবে।

মংলা শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান মাষ্টার বলেন, মংলা দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর। বর্তমানে মংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেট) এর পাশেই দু’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় দেশের প্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ চলছে।

এ ছাড়া ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপিত হবে এখানেই। সব মিলিয়ে মংলা শহর শিল্পায়নের দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প সম্ভাবনাময় এ শহরের প্রধান সমস্যা বন্যা, জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের পানি থেকে রক্ষা পেলে মংলা দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন বাস্তব রূপ পাবে। মংলা শহর রক্ষাবাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে এখানে নিবিঘেœ খুব দ্রুত শিল্পায়ন ঘটবে বলে মন্তব্য করেন বণিক সমিতির এই নেতা।

(একে/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test