E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দু’ মাস জেল হাজতে বসেই বেতন পেলেন মাদ্রাসার সুপার

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ০৫ ২০:৩১:০২
দু’ মাস জেল হাজতে বসেই বেতন পেলেন মাদ্রাসার সুপার

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পুলিশের উপর হামলা ও  ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাস্তায় বোমা হামলা করে ত্রাস সৃষ্টির মামলায় দু’ মাসের ও বেশি সময় ধরে জেল হাজতে থাকলেও বহাল তবিয়তে চাকরি করে, বেতন ভাতা তুলে যাচ্ছেন জামায়াতের পৃষ্টপোষক এক মাদ্রাসা সুপার। এক্ষেত্রে সরকারিভাবে বরখাস্ত করার জন্য নিয়ম থাকলেও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি কোন উদ্যোগ নেননি।

সাতক্ষীরার তালা মহিলা ফাজিল মাদ্রাসা সূত্রে জ্নাা গেছে, এ প্রতিষ্ঠানের সুপারইনটেনডেণ্ট গোলাম মোস্তফা একজন জামায়াতের পৃষ্টপোষক। ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তালা উপজেলার ত্রিশ মাইল নামক স্থানে পাটকেলঘাটা থানার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (তদন্ত) উপর হামলার ঘটনায় এজাহারভুক্ত বিশেষ ক্ষমতা আইনের ( থানা মামলা নং- ৪) আসামী গোলাম মোস্তফা। একইসাথে ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাস্তার উপর গাছ কেটে বোম হামলা চালিয়ে ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগে তালা থানায় দায়েরকৃত ত্রাস সৃষ্টি ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় (৮নং) এজাহারভুক্ত আসামী তিনি। এ দু’টি মামলায় দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর তিনি গত বছরের ৯ জুন সাতক্ষীরার তালা বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

পাটকেলঘাটা থানার মামলায় গোলাম মোস্তফা হাইকোর্টের বিচারপতি রেজাউল হক ও মোঃ কামরুজ্জামানের আদালত থেকে গত বছরের ৯ জুলাই চার সপ্তাহের জন্য জামিন পান। জেলে থাকাকালিন তালা থানার মামলায় ওই বছরের ৩ আগষ্ট একই আদালত থেকে চার সপ্তাহের জন্য জামিন পান। ১৪ আগষ্ট তিনি সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।

অভিযোগ, গোলাম মোস্তফা দু’ মাসেরও বেশি সময় ধরে জেল হাজতে থাকলেও তিনি মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে যথারীতি বেতন ভাতা পেয়েছেন। কর্তৃপক্ষ তাকে বরখাস্ত না করায় বর্তমানে তিনি যথারীতি কর্মরত থেকে বেতন ভাতা তুলে যাচ্ছেন। সহিংসতার মামলায় জেল হাজতে থাকা সরকারি বা আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক/কর্মচারিদের বরখাস্ত করার নির্দেশনা থাকলেও গোলাম মোস্তফার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হয়নি।

এ ব্যাপারে তালা মহিলা ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী গাউসুল হক মারুফ জানান, গোলাম মোস্তফা জেলে থাকার কথা গোপন রেখে অসুস্থতাজনিত কারণে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকার জন্য তার কাছে ছুটি চেয়ে আবেদন করলে তিনি তা মঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানতে পেরে আদালত থেকে মামলা ও জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভায় এ ঘটনার তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠণ করা হয়েছে। আগামি তিন দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করলে সুপারের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাণোর নোটিশ করা বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে গোলাম মোস্তফা আদালতে আত্মসমর্পণের দিন থেকে বিষয়টি ছিল তালাাসির মুখে মুখে। অথচ তালা উপশহরে বসবাস করে ও একজন আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে বিষয়টি তার জানতে এত দেরি হলো কেন এ প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে তালা মহিলা ফাজিল মাদ্রাসার সুপার ইন টেন ডেণ্ট গোলাম মোস্তফার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সাতক্ষীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কিশোরী মোহন সরকার জানান, এ নিয়ে তার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

(আরকে/পি/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test