E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফুলছড়ির চরাঞ্চলে অজানা রোগে আক্রান্ত ৩৪ জন

২০১৬ মার্চ ০৬ ১৭:১৬:০২
ফুলছড়ির চরাঞ্চলে অজানা রোগে আক্রান্ত ৩৪ জন

গাইবান্ধা প্রতিনিধি :গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার দূর্গম চরাঞ্চল খাটিয়ামারী গ্রামে এক অজানা রোগের প্রকোপে বিপাকে রয়েছে ওই চর এলাকার মানুষজন। প্রথমে বাহুতে সাদা দাগ। তারপর দু'তিন মাসের মধ্যেই ধীরে ধীরে শুকিয়ে চিকন হয়ে যাচ্ছে হাত-পা। কারো দু'হাত আবার কারো পায়েও দেখা দিয়েছে এমন রোগের লক্ষণ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বন্যার পর থেকে এ পর্যন্ত  ওই এলাকায় এ রোগে আক্রান্ত ৩৪ জনকে শনাক্ত করেছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বালাসীঘাট থেকে নৌ-পথে দেড় ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে ব্রহ্মপুত্রের ওপারে ফজলুপুর ইউনিয়নের খাটিয়ামারীর চরে যেতে হয়। দীর্ঘদিনের পুরনো এই চরে বিভিন্ন বয়সের শিশু ও নারী-পুরুষদের শরীরে বাসা বেঁধেছে অজানা এক রোগ। স্থানীয় ডাক্তার কবিরাজের পাশাপাশি চরাঞ্চলের এসব অশিক্ষিত মানুষ সাধ্যমতো চেষ্টাকরেও রোগ নিরাময় করতে না পেরে এখন উদ্বিগ্ন। রোগাক্রান্ত শিশুদের অভিভাবকরা প্রথমে ধারণা করেন ইপিআই টিকা এই রোগের মুলকারণ। তাদের এমন ধারণাটি অনাগ্রহী করে তোলে গ্রামের মানুষকে। এ অবস্থায় এলাকায় আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে সম্প্রতি নমুনা সংগ্রহ করেছে আইইডিসি আরের ৮ সদস্যের প্রতিনিধি’র একটি দল।

খাটিয়ামারী গ্রামের খয়বর হোসেন জানান, আমার মেয়ে সুফিয়া আক্তারের হাতে শক্তি নেই, হাত কাবু হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ডাক্তার কোন পরার্মশ দিতে পারেনি। এ রোগ নিয়ে গ্রামের সবাই চিন্তায় রয়েছি। ফজলুপুর ইউনিয়নের পশ্চিম খাটিয়ামারী কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী স্বপ্না আক্তার জানান, আক্রান্ত রোগীদের অভিভাবকরা বলছেন, আপা আপনি টিকা দিছেন, সেই কারণে আমার বাচ্চার এই অবস্থা। আসলে আমরাও এ রোগের কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। ফুলছড়ি উপজেলার স্বাস্থ্য সুপার ভাইজার নুর সামসুল বলেন, কুষ্ঠ রোগ মনে করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলো, কিন্ত দেখা গেলে এটি কুষ্ঠ রোগ নয়। উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জালাল জানান, গ্রামে এর আগে এ ধরণের রোগবালাই ছিল না। কিন্ত প্রায় দু’তিন মাস আগে এ গ্রামে রোগের লক্ষন দেখা দেয়। খবর পেয়ে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ রোগে আক্রান্ত ৩৪ জনকে শনাক্ত করেছে।

এ ব্যাপারে ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হানিফ জানান, যদি ভ্যাকসিন জনিত কারণে সমস্যা হতো, সেটা ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলেই না জেলার অন্যান্য এলাকাতে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে তাহলে সেখানে এই সমস্যাটা পাওয়া যেত। এই রোগের জন্য ইপিআই টিকা দায়ী নয়।

আইইডিসি আর'র আউটব্রেক ইনভেস্টিগেশন অফিসার ডা. ফারহানা হক জানান, শরীরের কিছু কিছু অংশে সাদা দাগ দেখা যাচ্ছে। সেই সব স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছি। ঢাকায় পরীক্ষার পর নিশ্চিত করে বলতে পারবো এটা কি রোগ।


(আর/এস/ফেব্রুয়ারি০৬,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test