E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুন্দরবনে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী মধু আহরণ

২০১৬ এপ্রিল ০৪ ১৩:৪৮:১৪
সুন্দরবনে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী মধু আহরণ

বাগেরহাট প্রতিনিধি : সুন্দরবনের একটি বড় সম্পদ হচ্ছে মধু। যার রয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি। সুন্দরবনে মাসব্যাপী শুরু হওয়া মধু আহরণ মৌসুম চলবে আগামী ৩০ এপ্রিল পযর্ন্ত।

ইতিমধ্যে প্রায় ১ হাজার মৌয়াল নির্দিষ্ট পরিমান রাজস্ব দিয়ে নৌকায় করে শুক্রবার ভোরে সুন্দরবনে মধু আহরণ করতে পৌছেছেন। প্রতি বছর সুন্দরবন থেকে গড়ে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার মন মধু আহরিত হযে থাকে। যা সারা দেশ তেকে আহরিত মধুর অর্ধেকেও বেশী। সুন্দরবন বিভাগ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সুন্দরবনের মধু সেই প্রাচীন কাল থেকে রাজা-বাদশা থেকে শুরু করে ছোটবড় ধনী-গরিব সবার কাছে মধু খুবই সমাদৃত। অনেক রোগ-বালাই নিরাময়ে মধুর জুড়ী মেলা ভার। এই আধুনিক যুগেও কাজ হাসির করতে জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে শীর্ষ আমলাদের কাছে ঘুষ বা ভেটের তালিকায় সুন্দরবনের খাঁটি মধুর চাহিদার কদর এখনো কমতি নেই।

এসব কারণে সুন্দরবনের মধুর চাহিদা রয়েছে আকাশ ছোয়া। সুন্দরবনের বিভিন্ন ফুলের মধুর মধ্যে খলসী ফুলের মধু হচ্ছে সর্বাধিক স্বচ্ছ ও সুস্বাদু। বিক্রি হয় অধিক দামে। সে কারণে সুন্দরবনের ৪টি রেঞ্জের মধ্যে সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জের অরণ্যে খলসী গাছের আধিক্য থাকায় মুধু আহরণকারী মৌয়ালদের টার্গেট থাকে ওই দুটি রেঞ্জে। এই দুটি রেঞ্জ থেকে সুন্দরবনের মধুর ৬০ থেকে ৭০ ভাগ আহরিত হয়ে থাকে। সুন্দরবনের মৌয়ালরা হতদরিদ্র ও অশিক্ষিত হলেও সনাতন পদ্বতিতে পেশাগত কারনে তারা মধু আহরণ করে থাকে নিপুন হাতে। মৌয়ালরা ছোট-বড় দেশীয় নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে দলবদ্ব ভাবে সুন্দরবনে মধু আহরন করতে যায়।

সুন্দরবনের মধু আহরণ করা একাধিক মৌয়ালদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা একটি গ্রুপে ৭জন করে থাকলেও একজন রান্নসহ নৌকা পাহারা দিতে থাকলেও সুন্দরবনের ঝুলন্ত মৌচাক খুঁছতে হাঁড়ি-পাতিল ও দা’সহ মধু আহরণের অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে অন্য ৬জন দুই দলে বিভক্ত হয়ে মৌমাছির পিছনে ছুঁটে চলে। অনেকে আবার দূরবিনের সাহায়্যও নিয়ে থাকে। এভাবে তারা খুব সহজেই মৌচাক খুঁজে পেলে “কু” শব্দ করলে দলের অন্যরা সেখানে এসে পৌছায়। এরপর তারা মাথায় গামছা বা কাপড় বেধে খড়-কুটার ‘উকো বা তড়পা’ দিয়ে আগুনের ধোয়া দিলে মৌচাক থেকে মৌমাছিদের তাড়িয়ে দেয়। চাক মৌমাছি মুক্ত হলে একজন গাছে চড়ে দা দিয়ে কেটে চাক থেকে মধু ও মোম আহরণ করে হাড়ি-পাতিল ও কন্টিনারে ভর্তি করে রাখে। মৌয়ালরা সনাতন পদ্বতিতে মধু আহরন কালে প্রতি বছর অনেক মধু মাটিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। সুন্দরবন বিভাগের তথ্যমতে,প্রতিবছর মধু আহরণ কালে বেশ কিছু মৌয়াল সুন্দরবনের রাজা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের হামলায় নিহত হয়ে থাকে।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ০৪, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test