E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে দুর্নীতি

দুদকের মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন  দাখিল

২০১৬ মে ০৫ ২১:০০:০৮
দুদকের মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন  দাখিল

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভারী যন্ত্রপাতি কেনার সময় ১৩ কোটি ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৫২৫ টাকা দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় সকল আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

অতিগোপনে গত ৮ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম আদালতে এই প্রতিবেদন দেন। হঠাৎ বৃহস্পতিবার বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এদিকে, অভিযোগ থেকে আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠালগ্নে সংঘটিত এই দুর্নীতির বিষয়টি ধামাচাপা পড়তে বসেছে।

দুটি মামলার আসামিরা হলেন- সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ ও পরিচালক ডা. এস জেড আতিক, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জ্যেষ্ট কনসালট্যান্ট রুহুল কুদ্দুস, কনিষ্ট কনসালট্যান্ট নারায়ণ প্রাসাদ সান্যাল, জ্যেষ্ট কনসালট্যান্ট একেএম জাহাঙ্গীর আলম, আবাসিক মেডিকেল অফিসার মারুফ হাসান, কনিষ্ট কনসালট্যান্ট রহিমা খাতুন, মহাখালী ন্যাশনাল ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইন্টেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের অ্যাসিসট্যান্ট রিপায়ার হাবিবুর রহমান, সাতক্ষীরা সমাজসেবা অধিদফতরের সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের জ্যেষ্ট স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা একে এম সোহরাব হাসান, কুষ্টিয়া গণপূর্ত উপ-বিভাগ-১ এর হারুণ-অর-রশীদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপ-সচিব আবদুল মালেক এবং সেগুন বাগিচা মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আবদুস সাত্তার। তবে অপর মামলায় আব্দুস সাত্তারের ছেলেকে ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধকারী হিসেবে আসামী শ্রেণিভুক্ত করা হয়।

২০১৫ সালের ২৮ আগস্ট রাতে দুদকের সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা (৫৩ ও ৫৪নং) দুটি দায়ের করেন। এর আগে দুদকের সভায় সংশ্লিষ্টদের নামে মামলা দায়েরের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

মামলার এজাহারে বলা হয় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য ভারী যন্ত্রপাতি, ইডিসিএল বহির্ভুত ওষুদপত্র, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, গজ ব্যান্ডেজ, কেমিক্যাল সামগ্রী, কিচেন সামগ্রী ও আসবাবপত্র ক্রয়ের লক্ষ্যে উল্লিখিতরা পরস্পস যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বা অবৈধভাবে লাভবান হয়ে বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে মূল্য তালিকা তৈরী করেন। সে অনুযায়ী দরপত্র আহবান করা হয় এবং দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি অবৈধভাবে লাভবান হয়ে বাজার দর যাচাই না করেই ঠিকাদার মেসার্স মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালকে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহের জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। পরে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিলও উত্তোলন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। এবং সেখানেও অবৈধভাবে লাভবান হন সংশ্লিষ্টরা। এই দুর্নীতির মাধ্যমে ৭ কোটি ৫১ লাখ ২১ হাজার ৫০১ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি পরবর্তীতে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে।

একই প্রক্রিয়ায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভারী মেশিনারিজ সরবরাহের ক্ষেত্রে উল্লিখিতরা পরস্পর যোগসাজশে ৬ কোটি ১৯ লক্ষ ৭৬ হাজার ২৪ টাকা আত্মসাত করেন। যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে দুদকের তদন্তে বলা হয়েছিল।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয় সম্পর্কে তার কিছু জানা নেই। একই সাথে দুদকের খুলনা কার্যালয়ে যোগাযোগ করেও মামলার বাদী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিরুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। তিনি বগুড়া কার্যালয়ে বদলী হয়ে গেছেন।

(আরএনকে/এস/মে০৫,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test