E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

গৌরীপুরে ফুটেছে আফ্রিকান ব্লাড লিলি বা মে ফ্লাওয়ার

২০১৬ মে ১১ ১৫:২৫:০০
গৌরীপুরে ফুটেছে আফ্রিকান ব্লাড লিলি বা মে ফ্লাওয়ার

শফিকুল ইসলাম মিন্টু : বছরের ১০মাস থাকে সুপ্ত, কাণ্ডটি শুকিয়ে যায়। মে মাস এলেই তাজা হয়ে উঠে, ভরে উঠে ফুলে ফুলে। অদ্ভুত জীবনচক্র! আফ্রিকায় যার পরিচিতি ব্লাড লিলি নামে। ফুল ফোটার সঙ্গে সঙ্গে জানান দেয় বর্ষপঞ্জিতে এখন মে মাস। তাইতো বাংলাদেশে এ ফুলের পরিচিতি মে ফ্লাওয়ার বা মে ফুল নামে।

উপজেলা সদরের সরকার পাড়া এলাকায় নারায়ন দাসের বাড়িতে শুক্রবার ফুল ফোটার সংবাদে ফুলপ্রেমীদের আগমনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। এক নজর দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে দলবেঁধে ছুটে আসছে উৎসুক জনতা।

পৌর শহরের সরকারপাড়ার বাসিন্দা নারায়ন দাস। বয়স ৭০এর কাছাকাছি। এক সময়ের সেরা আলোকচিত্র শিল্পী। সংবাদ আর সাংবাদিকতায় তখনকার ক্যামেরার মানুষ। বংশপরিক্রমায় মে ফুলের মালিক। দাদু দূর্গাচরণ দাস, কাজ করতেন জমিদার বাড়িতে। তিনি জমিদার বাড়ি থেকেই এনেছিলেন ছিলেন মে ফুল। তার বাবা শ্যামকান্ত দাসও ছিলেন সৌখিন। এ ফুলের চারা তার দাদা-বাবা স্বহস্তে পরিচর্যা করতেন। তাদের অবর্তমানে তিনি পান মে ফুলের মালিকানা। বাড়ির আঙ্গিনায় এ ফুল জন্ম নেয়ার নির্ধারিত সন, তারিখ জানা নেই। তবে শতবর্ষের কোটা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে। জন্মের পর থেকেই প্রতিবছর এ ফুল দেখছেন। এখন মে মাস। তাই নারায়ন দাসের আঙ্গিনার মতো সারাদেশ মে ফুল ফুটচ্ছে। বছরে ১০মাস কোন যত্ন লাগে না। এ যেন কই মাছের প্রাণ! এতো সহজে মরে না। তবে ১১মাস এ ফুলের সন্ধান পাওয়া যায় না।

এপ্রিলে ফিরে আসে জীবনীশক্তি। এ যেন বৈশাখের ছোঁয়া। মে মাসে ফুটে এ ফুল। হাতের তালুতে স্পর্শে সুরসুরি লাগে। দেখতে মৃদু লাল। শীর্ষে মনে হয় হলুদের মুকুট। থোকাথোকা, গোলাকার। পুরো মাস থাকে বাহারী রূপ। সহজেই বহনযোগ্য। অফিসের সৌন্দর্য্য বর্ধনেও কাজে লাগানো সম্ভব। বাগান, বাড়ির আঙ্গিনা আর বাসার ছাদে উঁকি মেরে নিজের সৌন্দর্য জানান দিচ্ছে মে ফুল। চেনা মানুষের নিকট চেনা মাস- মে ফ্লাওয়ার-মে মাস।

ব্যতিক্রমী আচরণ। রূপের অন্যরকম গড়ন। লিকলিকে কাণ্ডের মাথায় ঝাঁকড়ানো। কাণ্ডে অসংখ্য কাঁটা। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। হাতে নিলে কোমল লাগে। গোলাকার দেখতে হওয়ায় একে বল লিলি বলা হয়। একই কারণে বলা হয় গ্লোব লিলি। পাউডার পাফ লিলি, আফ্রিকান ব্লাড লিলি নামেও পরিচিত। মে ফ্লাওয়ার গাছ লম্বায় ১০মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফুল প্রায় ৩ সে.মি. চওড়া হয়। পাপড়ি ও পুংকেশর অসমান। মে ফ্লাওয়ারের অস্তিত্ব প্রথম চোখে পড়ে আফ্রিকা মহাদেশে। বর্তমানে পৃথিবীর অনেক দেশেই হয়।

আপন মেজাজেই প্রতিবছর এ ফুল জন্ম নেয় বলে জানান নারায়ন চন্দ্র দাসের স্ত্রী বনানী দাস। স্কুল পড়ুয়া অনিমা দাস ও তন্বী দাস জানান, এ ফুলের জীবনীশক্তি ১০মাস মৃত থাকে। প্রতিটি ফুল ১০/১২দিন বেঁচে থাকে। তবে পর্যায়ক্রমে পুরো মে মাসে জুড়ে ফুটে থাকে এ ফুল।

(এসআইএম/এএস/মে ১১, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test