E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর ১৩ দিন পর রায়পুরে মাইকিং

২০১৬ মে ১৭ ১৬:২২:৩৪
ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর ১৩ দিন পর রায়পুরে মাইকিং

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : দেশব্যাপী বোরো ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এক ছটাক ধানও সংগ্রহ করেনি খাদ্য বিভাগ। অভিযোগ উঠেছে প্রকৃত কৃষকের তালিকা না পাওয়া, ধান ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্রের সঙ্গে গোপন সমঝোতা ও একশ্রেণীর কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ন্যায্যমূল্যে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করে কৃষককে উৎসাহিত করা ও উৎপাদিত ফসল ক্রয়ের যে সরকারি উদ্যোগ তা ভেস্তে যেতে বসেছে।

এ ঘটনায় খাদ্য বিভাগ বলছেন কৃষি বিভাগ তাদের প্রকৃত কৃষকদের তালিকা না দেয়ার কারণে কোন কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা যায়নি। অপরদিকে কৃষি বিভাগ বলছে নিজেদের কুকীর্তি আড়াল করতে তারা অযথাই আমাদের অপবাদ দিচ্ছে। এদিকে ধান ক্রয় অভিযানের ১৩ দিন পেরিয়ে যাবার পর এক ছটাক ধানও ক্রয় না করতে পারায় মঙ্গলবার ধান ক্রয়ের লক্ষ্যে মাইকিং করার জন্য খাদ্য বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন ইউএনও।

অভিযোগে জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ে কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের উৎসাহ কম। কারণ এখন সরকারিভাবে ধান ক্রয় মূল্য কেজি প্রতি ২৩ টাকা। যা ৪০ কেজি মণ দরে দাঁড়ায় ৯২০ টাকা। কিন্তু রায়পুরে ধান ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্র ধানের বাজারদর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। তারা খাদ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন সমঝোতা করে গুদামে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করতে দিচ্ছে না। ফলে এখন বাজারে ধানের প্রচুর সরবরাহ থাকায় বাজারে ধানের দামও নিম্নমুখী। প্রতি মণ ধানের দাম এলাকা ভেদে ৩৮০ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা পর্যন্ত ওঠা-নামা করছে। সরকারিভাবে ধান ক্রয় না করার ফলে বাজারে ধানের সরবরাহ বেশি থাকায় ধানের দামও মারাত্মকভাবে কমে গেছে।

এমতাবস্থায় আমন ধান উৎপাদনের জন্য জমি প্রস্তত করতে এবং অন্য ফসল উৎপাদনের জন্য এ অঞ্চলের প্রান্তিক চাষী ও ক্ষুদ্র চাষীদের ধান বিক্রি করে আর্থিক জোগান দেয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ এ অঞ্চলের কৃষি পরিবারগুলো কৃষি অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। তারা এক ফসলের আয় থেকে আর একটি ফসল উৎপাদনের খরচ জোগান দেন। তাই এখন কৃষকরা সরাসরি ধান সরকারের কাছে বিক্রি করতে না পারলে তা কম দামে কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করবে ধান ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্র। প্রতি বছরের মতো তারা এবারও কম দামে ধান ক্রয় করে ধানের মজুদ গড়ে তা আবার সরকারের দেয়া উচ্চমূল্যে সরকারি গুদামে সরবরাহ করে থাকে। ফলে প্রতি বছরের মতো এবারও কৃষকরা সরকারিভাবে ধানের দেয়া দাম থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা করছে।

খাদ্যনিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, রায়পুর উপজেলা ধান ক্রয় অভিযানের ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এক ছটাক ধান ক্রয় করা হয়নি। তারা বলছেন কৃষি বিভাগ তাদের প্রকৃত কৃষকদের তালিকা না দেয়ার কারণে কোন কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা যায়নি। গত বছরও একই সমস্য সৃষ্টি হওয়ায় পার্শ্ববর্তী রামগঞ্জ উপজেলা থেকে ধান সংগ্রহ করতে হয়েছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ত্রণ কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন বলেন, চলতি মাসের ৫মে থেকে ৫জুন পর্যন্ত ধান সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে প্রকৃত কৃষকদের তালিকা না দেয়ার কারণে কোন কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা সম্ভব হয়নি। ধান ক্রয় অভিযানের ১৩ দিন পেরিয়ে যাবার পর ধান ক্রয় না করতে পারায় ইউএনও স্যারের নির্দেশে মঙ্গলবার ধান ক্রয়ের লক্ষ্যে মাইকিং করা হয়েছে। উপজেলায় এবারে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৫৮ টন ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জহির আহম্মদ বলেন , এবার ৪হাজার ৬শ ৬০ হেক্টরের ওপর বোরোর আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৪ টন করে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে । উপজেলায় মোট কার্ডধারী কৃষক রয়েছেন প্রায় ৪৯ হাজার আমাদের বিরুদ্ধে কৃষকদের তালিকা না দেয়ার অভিযোগ উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর মত। নিজেদের সমস্যা আড়াল করতে তারা অযথা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপবাদ দিচ্ছে।

(পিকেআর/এএস/মে ১৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test