E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কলারোয়ায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী ও দেবরের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড

২০১৬ মে ১৭ ১৮:৩৬:৫৪
কলারোয়ায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী ও দেবরের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : স্ত্রীর শরীরে মশারি জড়িয়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন লাগিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও দেবরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এক জানকীর্ণ আদালতে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু মনসুর মো. জিয়াউল হক এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আবু তালের গাজীর ছেলে আসাদুল গাজী ওরফে আসাদুল (৩৪) ও তার ভাই মমতাজুল ওরফে ইনতাজুল (২৮)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০২ সালে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার দক্ষিণ ইলিশপুর গ্রামের আবু বক্কর সরদারের মেয়ে তরুল পারভিনের সঙ্গে বিয়ে হয় যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে মিজানুর রহমানের।

দীর্ঘদিন তাদের কোন সন্তান না হওয়ায় মিজানুরকে তালাক দিয়ে ঝিকরগাছা উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আবু তালেব গাজীর ছেলে আসাদুল গাজীর সঙ্গে ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে বিয়ে করে তরুল। বিয়ের পর নির্যাতন চলতে থাকায় তরুল পারিভন ২০১০ সালের ৮মে আসাদুলকে তালাক দেয়। তালাকনামা পাওয়ার পর তরুল পারভিন ও তার বাবা মাকে হত্যার হুমকি দেয় আসাদুল ও তার লোকজন।

একপর্যায়ে বাপের বাড়ির বসত ঘরের পশ্চিম দিকের বারান্দায় ৯ মে রাতে শুয়ে ছিল তরুল। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বারান্দায় টাঙানো মশারি জড়িয়ে উঠানে নামিয়ে আসাদুল, তার ভাই ইনতাজুলসহ কয়েকজন তরুলের গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুল লাগিয়ে দেয়। মারাত্মক জখম অবস্থায় তরুলকে প্রথমে কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুম, পুলিশ ও ডাক্তারের সামনে মেয়ের দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ি আবু বক্কর সরদার বাদি হয়ে ১০ মে সকালে জামাতা আসাদুল, তার ভাই ইনতাজুল, একই গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে আরশাদ আলী, জোহর আলীর ছেলে মুজিবর রহমান ও আবুল হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলামের নামে কলারোয়া থানায় একটি মামলা ( ৭নং)দায়ের করেন।

১০ মে রাতে সাতক্ষীরা সদর হাসপটাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় তরুল পারভিন। মামলার তদন্তকাারি কর্মকর্তা কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক মোল্লা মোঃ আব্দুস সেলিম ২০১০ সালের ২৪ জুলাই এজাহারভুক্ত সাইফুলকে বাদ দিয়ে অন্য চার জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার নথিও ১৫জন সাক্ষীর জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে বিচারক মৃতের স্বামী আসাদুল ও দেবর ইনতাজুলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৪(১) /৩০ ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে উপরোক্ত কারাদণ্ড দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামী আরশাদ আলী ও মিজানুর রহমানকে বেকসুর খালাস দেন। মামলার প্রধান সাজাপ্রাপ্ত আসামী আসাদুল পলাতক রয়েছেন।

আসামীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অ্যাড. আসাদুজ্জামান দিলু, অ্যাড. শাহ আলম, অ্যাড. মিজানুর রহমান পিণ্টু।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড, জহুরুল হায়দার বাবু।

(আরকে/এএস/মে ১৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test