E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরায় ডাক্তারের অপচিকিৎসায় পঙ্গুত্ব বরণ করতে চলেছে গৃহবধু রাবেয়া

২০১৬ মে ২৪ ১১:১২:২৮
সাতক্ষীরায় ডাক্তারের অপচিকিৎসায় পঙ্গুত্ব বরণ করতে চলেছে গৃহবধু রাবেয়া

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের এক চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় পঙ্গুত্ব বরণ করতে চলেছেন এক অসহায় গৃহবধু। গত ১১ এপ্রিল থেকে দেড়মাস যাবৎ তিনি সদর হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কুল্ল্রা গ্রামের ভাড়ায় চালিত মোচর সাইকেল চালক খায়রুল ইসলাম জানান, দু’শতক জমির উপর তার বসবাস। এক মেয়ে নবম শেণিতে পড়ে। ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন। স্ত্রী রাবেয়া খাতুনের (৪৫) দু’ পায়ের গোড়ালিতে ব্যাথা হওয়ায় তাকে নিয়ে গত ২৬ মার্চ তিনি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ পরিমল কুমার বিশ্বাসের আশাশুনির বুধহাটা চেম্বারে নিয়ে যান। ডাক্তার রাবেয়ার গোড়ালির নীচে দু’ পায়ের পাতায় দু’টি ইনজেকশান দিয়ে একটি ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন। ওই ব্যাবস্থাপত্রে ইনজেকশানের নাম লেখেন নাই তিনি। পাঁচদিন না যেতেই রাবেয়ার পায়ের তলায় বেশি করে যন্ত্রণা শুরু হলে রাবেয়াকে নিয়ে আবরো পরিমল ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে যান। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব না দেওয়ায় পার্শ্ববর্তী চেম্বারের চিকিৎসক ডাঃ অরুণ ব্যাণার্জীর কাছে রাবেয়াকে নিয়ে যাওয়া হয়। অরুণ ব্যাণার্জী রাবেয়ার পায়ের তলায় পুঁজ হয়েছে বলে প্রথমে বাম পায়ে অপারেশন করেন। পরের দিন আবারো ডান পায়ে অপারেশন করেন তিনি। একপর্যায়ে পরিমল ডাক্তারের ইনজেকশানের কারণে ইনফেকশান হয়েছে উল্লেখ করে তিনি রাবেয়াকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। পরিস্থিতি ভাল নয় বুঝতে পেরে রাবেয়াকে সুচিকিৎসা দিয়ে সারিয়ে তোলার জন্য ডাঃ পরিমল বিশ্বাসের কাছে আকুতি জানান তিনি। তার সঙ্গে থাকা গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কথামত সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে সুচিকিৎসা করাবেন বলে জানান ওই ডাক্তার। সে অনুযায়ি গত ১১ এপ্রিল রাবেয়াকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতলের সার্জিকাল ওয়ার্ডের ৬নং শয্যায় ভর্তি করা হয়। ভর্তির পরপরই যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য তাকে খরচ করতে হয় এক হাজরের বেশি টাকা। সেখানে হাসপাতাল থেকে দেওয়া নামমাত্র ঔষধ পেলেও প্রতিদিন ৪৬৫ টাকার ঔষধ ও ১০০ টাকা ড্রেসিং এর জন্য খরচ করতে হচ্ছে তাকে। দীর্ঘ দেড় মাস ধরে রাবেয়ার এ খরচবহুল চিকিৎসা চললেও কোন সহায়তা দেননি ডাঃ পরিমল। এমতাবস্থায় রাবেয়া পঙ্গুত্ব বরণ করতে চলেছে। এখন আর চিকিৎসা খরচ যোগাড় করা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় তিনি সিভিল সার্জনের কাছে ডাঃ পরিমল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর হাপসাতালের চিকিৎসক ডাঃ পরিমল কুমার বিশ্বাস জানান, তিনি যে ইনজেকশান রাবেয়ার পায়ের তলায় করেছিলেন তা সঠিক ছিল। তবে কি কারণে ইনফেকশান হয়েছে তা তিনি জানেন না। বর্তমানে রাবেয়ার চিকিৎসা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন তিনি।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সার্জিকাল কনসালট্যান্ট ডাঃ হাসানুজ্জামান জানান, রাবেয়ার দু’ পায়ের ইনফেকশান জটিল হওয়ায় দীর্ঘ মেয়াদি চিকিৎসা নিতে হবে। নইলে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।


(আরএনকে/এস/মে ২৪,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test