E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অভিযোগ তদন্ত করেনি কর্তৃপক্ষ

আগৈলঝাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা সভাপতি ও জামাত অধ্যক্ষর যোগসাজশে অর্থ আত্মসাত,

২০১৬ মে ৩১ ২১:২৬:২৯
আগৈলঝাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা সভাপতি ও জামাত অধ্যক্ষর যোগসাজশে অর্থ আত্মসাত,

আঞ্চলিক প্রতিনিধি(বরিশাল)প্রতিনিধি :।প্রভাবশালী জামাত নেতা ও অধ্যক্ষর যোগসাজশে মুক্তিযোদ্ধা সভাপতির নিয়োগ বাণিজ্যর বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের পরেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন অভিযুক্তরা।

রাজনৈতিক দর্শণ ভিন্ন হলেও অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিতে মুক্তিযোদ্ধা ও জামাত নেতার সখ্যতায় মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অনেকেই বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন।

দুর্ণীতিবাজদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় অভিযোগ দিলেও দীর্ঘ দিনেও কোন তদন্ত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ওই কলেজের গভর্নিং বডির সদস্যগণসহ এলাকার সাধারণ জনগণ। সভাপতি ও অধ্যক্ষর ঘুষ-দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর অনিয়মের ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এ্যান্ড কলেজে।

২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর বাগধা স্কুল এ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মোজাফ্ফর সরদার, মো. মিন্টু মিয়া, আবুল কালাম মিয়া ও রুস্তুম মৃধা স্বাক্ষরিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগে জানান, কলেজ অধ্যক্ষ ও জামাত নেতা আ. রহমান মিয়ার সহযোগিতায় কলেজ সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা দাবিদার উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব আবুল বাশার হাওলাদার স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ-দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অনিয়ম আর স্বেচ্চাচারিতার কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ধংসের দ্বার প্রান্তে পৌঁছেছে। ওই অভিযোগে আরও বলা হয়-গত বছর ১১ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কথা বলে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিক্রি করে ৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা. ব্যাংক থেকে উত্তোলন ২ লাখ টাকা, কলেজ ফান্ড থেকে নেয়া ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, স্কুল শাখা থেকে নেয়া ২০ হাজার টাকাসহ মোট ৯ লাখ ১৭ হাজার টাকার কোন হদিস নেই।

স্বজনপ্রীতি আর আর্থিক দূর্নীতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ রহমান মিয়ার সহযোগিতায় সভাপতি আবুল বাশার হাওলাদার বিধি বহির্ভুতভাবে স্বজনপ্রীতি করে সভাপতি আবুল বাশার ওরফে বাদশা তার ভায়রা আব্দুল করিমকে কলেজ শাখার অফিস সহকারী পদে, ভাগ্নে বউ শিরিন আক্তার শিল্পীকে প্রভাষক (পৌরনীতি ও সুশাসন) পদে, অমল চন্দ্র বৈদ্যকে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে লাইব্রেরীয়ান পদে নিয়োগ দেয়ার পায়তারা করে আসছে।

এছাড়াও ৫ লাখ টাকা নিয়ে স্কুল শাখায় বিএসসি শিক্ষক লিটন রায়কে, ৫ লাখ টাকায় স্কুল অফিস সহকারী পদে উজ্জল দাস, ১ লাখ টাকার বিনিময়ে খৃষ্ঠ ধর্ম শিক্ষিকা পদে নিয়োগের জন্য ওই বছর ১৪ নভেম্বর নিয়োগ নাটক করা হয়। অবৈধ বানিজ্যর নিয়োগ নাটক বুঝতে পেরে অপর সদস্যরা বাধা দিলে আবার ২৭ নভেম্বর নিয়োগ পরীক্ষার নাটক করেন তারা। নিয়োগ বানিজ্যর অভিযোগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচির ছাড়াও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ৭ টি দপ্তরে প্রেরণ করেন।
এর আগে গত বছর ৩ ডিসেম্বর ওই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক সদস্যরা স্থানীয় সংসদ সদস্যর কাছে সভাপতি ও অধ্যক্ষর প্রতিষ্ঠান ফান্ড থেকে ৯লাখ ১৭ হাজার টাকা আত্মসাতের ফিরিস্ত তুলে তাদের হাত থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রক্ষার আবেন জানান।

গোয়েন্দা সংস্থার তালিকানুযায়ি দূর্নীতিবাজ ওই অধ্যক্ষ রহমান মিয়া বাগধা ইউনিয়ন জামাতের ১২ সদস্যর কার্যকরি কমিটির প্রথম সদস্য। নাম না প্রকাশের শর্তে কলেজের অন্যতম সদস্য জানান, দূর্ণীতি আর অনিয়মের কারণে অধ্যক্ষ রহমান মিয়া তিন বছর সাময়িক বহিস্কার ছিলেন। পরে তদন্ত কমিটিকে ম্যানেজ করে অধ্যক্ষ নিজ হাতে কমিটির কাছে রিজাইন লেটার দিলে তাকে পুনর্বহাল করা হয়। তবে নিয়োগ জন্য নেয়া ও কলেজ ফান্ডের টাকা পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

নাম না প্রকাশের শর্তে কলেজের শিক্ষকেরা জানান, সভাপতি ও অধ্যক্ষর সেচ্ছাচারিতার কারনে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ নষ্টর কারণে শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। শিক্ষকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে গ্রুপিং। অভিবাবকরা দূর্ণীতিবাজ অধ্যক্ষ ও সভাপতিকে অপসারণ করে টাকার বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবী জানিয়েছেন।

এব্যাপারে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আ. রহমান মিয়া বলেন, ওই অভিযোগগুলো সম্পূর্ন ভিত্তিহীন। যেসব দপ্তরে অভিযোগগুলো দেয়া হয়েছে তারা সেগুলো বাতিল করেছে। তাই অভিযোগের ব্যাপারে তারা আমাদের ডাকেনি। তিনি জামাতের রাজনীতি করেন না জানিয়ে আরও বলেন, আমার বাড়ি কোটালীপাড়া। সেখানে খোজ নিয়ে দেখেন।

সভাপতি আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, কলেজের গাছ বিক্রির টাকা চেকের মাধ্যমে ফেরত দিয়েছি। এছাড়া আর কোন অনিয়ম নেই। রাজনৈতিক পতিপক্ষ দলের লোকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। গত ১শ বছরে কলেজে যে উন্নয়ন হয়নি, আমার আমলে তা হয়েছে।


(টিবি/এস/মে ৩১,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test