E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, রগ কেটে দেয়ার হুমকি!

২০১৬ জুন ০৬ ১৮:৩৭:৫১
নওগাঁয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, রগ কেটে দেয়ার হুমকি!

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁয় নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, মারপিট, পায়ের রগ কেটে হত্যার হুমকির পাশাপাশি বাড়ির খলিয়ানে স্তুপাকারে রাখা খড়ের পালায় আগুন দিয়ে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করেছে পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর লোকজন।

ঘটনাগুলো পৃথকভাবে ঘটেছে নওগাঁ সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড তেঁতুলিয়া পালপাড়া গ্রামে ও মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের রজয়পুর গ্রামে। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকার সংখ্যালঘুদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, কীর্তিপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে শনিবার ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে মেম্বার পদে ২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেন। নির্বাচনের দু’দিন আগে থেকে মেম্বার প্রার্থী বিএনপি কর্মী জাহিদ হোসেন ছোটন তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে স্থানীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হুমকি-ধামকি শুরু করে।

অপর প্রার্থী ভবেশ চন্দ্র ঘোষকে ভোট দিলে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভিটেমাটি ছাড়া করার হুমকিও দেয়া হয়। এদিকে শনিবারের ভোটে স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সন্তান জাহিদ হোসেন ছোটন হেরে গেলে সে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। রবিবার দিনগত রাতে তেঁতুলিয়া কলেজ মাঠে তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে পিকনিকের আয়োজন করে পরাজিত প্রার্থী ছোটন। কলেজ মাঠের পুর্ব পাশেই সংখ্যালঘুদের বসবাস। ওই পিকনিক শেষে সংলগ্ন ডা. খুদিরাম পালের বাড়ির খলিয়ানে স্তুপাকারে রাখা বিশাল খড়ের পালায় আগুন ধরে দেয়া হয়।

ডা. খুদিরাম বলেন, ভবেশ চন্দ্র ঘোষের কাছে নির্বাচনে হেরে গিয়ে ছোটন তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে এমন নাশকতায় মেতে ওঠে। সোমবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ওই ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ আতোয়ার রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ছোটন একজন মাদক সেবী সন্ত্রাসী। ওর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।

অপরদিকে মহাদেবপুরের ভীমপুর ইউনিয়নের রজয়পুর গ্রামের সংখ্যালঘু হিন্দুদের রাস্তা অবরোধ করে মারধর করেছে ভোটে হেরে যাওয়া মেম্বার প্রার্থী রেজাউল ইসলাম। রবিবার দিনভর ওই গ্রামের সংখ্যালঘুদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সুদারু হিসেবে পরিচিত উক্ত রেজাউল রবিবার সকালে তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রজয়পুর গ্রামের সংখ্যালঘুদের চলাচলের একমাত্র পথ আন্ধারকোটা গ্রামে রাস্তা অবরোধ করে ওই গ্রামের হিন্দুদের বেদম মারধর করে। এতে রজয়পুর গ্রামের ক্ষিতিশ চন্দ্র (৬২), কালিপদ সরকার (৩২), পলাশ কুমার (২৯), নিরেন চন্দ্র (৩৫)সহ অন্তত ৮/১০জন আহত হয়। তারা রজয়পুর গ্রামের দুই স্কুল ছাত্রীকে রাস্তায় মারধর করে তাদের গায়ে ওড়না কেড়ে নেয়। এব্যাপারে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও মামলা গ্রহন করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।

লাঞ্ছিতরা জানান, রবিবার সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে মহাদেবপুর থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ তাদের অভিযোগ গ্রহন করেনি। তবে বাদী যেভাবে অভিযোগ লিখেছেন সেভাবে মামলা নিতে না চাইলেও পুলিশ তাদের নিজের মত করে অভিযোগ লিখে তাতে স্বাক্ষর করতে বলেন। বাদী পুলিশের ওই মনগড়া লেখা এজাহারে স্বাক্ষর না করে রাতেই থানা থেকে ফিরে এসেছেন বলে জানান তারা।

এ ব্যাপারে নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান রামপ্রসাদ ভদ্র জানান, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকারীর পাশাপাশি তাদের ইন্ধনদাতাদেরও খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নেয়ার জন্য পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

(বিএম/এএস/জুন ০৬, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test