E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাণীনগরে বাঁশের সাঁকো ৬ সহস্রাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা

২০১৬ জুন ১০ ১৬:৫৩:২১
রাণীনগরে বাঁশের সাঁকো ৬ সহস্রাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা নামক স্থানে ছোট যমুনা নদীর ওপর এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মিত একটি বাঁশের সাঁকো রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার ১১ গ্রামের অন্তত ৬ সহস্রাধিক মানুষের চলাচলের এখন একমাত্র ভরসা।

ভৌগলিক কারণে আত্রাই উপজেলার বিলবেষ্টিত কালিকাপুর ইউনিয়নের অবহেলিত জনপদের মধ্যে আটগ্রাম, হরপুর, তারানগর, বাউলপাড়া, ঝিয়ারীগ্রাম, শলিয়া গ্রামসহ রাণীনগর উপজেলার কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ি ও বেতগাড়ী গ্রামের প্রায় ৬ হাজার মানুষের বসবাস হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থার তেমন কোন উন্নয়ন না হওয়ায় রাষ্ট্রের অনেক জরুরী সুযোগ-সুবিধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে গ্রামগুলোর মানুষ। যোগাযোগ ব্যবস্থার এই আধুনিকতার যুগে এসে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার হলেও নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর ওপর দিয়ে পারাপারের জন্য রাণীনগর উপজেলার ঘোষগ্রাম ও আত্রাই উপজেলার আন্ধারকোটা নামক স্থানে নদীর ওপর কোন ব্রিজ নির্মান হয়নি।

একটি ব্রীজের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো অথবা নৌকা দিয়ে পারাপার হয় প্রায় ১১টি গ্রামের কৃষক-শ্রমিক, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রায় ৬ হাজার মানুষ। বর্ষাকালে নৌকায় নদী পারাপার হলেও নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে এলাকাবাসির উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকোই এখন একমাত্র যোগাযোগের ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে ও আত্রাই উপজেলার সদর থেকে ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে বুক চিড়ে বয়ে গেছে নওগাঁর ছোট যমুনা নদী।

বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে বছরের বেশি সময় ধরে বন্যার পানি চারিদিকে থৈ থৈ করে। তখন পারিবারিক প্রয়োজনে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় নৌকা। কিন্তু শুস্ক মৌসুমের শুরুতেই বিলের পানি কমতে থাকায় পায়ে হেঁটেই উপজেলার আটগ্রাম, হরপুর, তারানগর, বাউলাপাড়া, ঝিয়াড়িগ্রাম, শলিয়া গ্রামসহ এলাকার মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে জেলা ও উপজেলা সদরে চলাচল করে। নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় ঘোষগ্রাম-আন্ধারকোটা নামক স্থানে নদী পারাপারের জন্য এই বাঁশের সাঁকোর ওপরই ভরসা করতে হয় তাদের। আত্রাই উপজেলার ওই গ্রামগুলোতে সবচেয়ে বেশি বোরো ধান উৎপাদন হয়ে থাকে।

যানবাহন চলাচলের উপযোগী সরাসরি কোন পথ না থাকায় স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষি পন্য সহজ ভাবে বাজারজাত করতে পারে না। ফলে তারা তাদের উৎপাদিত ফসলের নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। তাদের অনেকটা বাধ্য হয়েই ফরিয়া ও মহাজনদের কাছে চলমান বাজার মূল্যের চেয়ে কমদামে কৃষি পন্য বিক্রি করতে হয়। এখানে একটি ব্রীজ নির্মান এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও প্রকল্প আসে প্রকল্প যায় এই এলাকাবাসির ভাগ্য উন্নয়নে কারো কোন মাথা ব্যথা নাই।

অথচ ওই স্থানে ব্রীজ নির্মাণ করা হলে রাণীনগর-আত্রাই উপজেলার ওই এলাকায় বসবাসরত মানুষের যাতায়াতের জন্য নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটবে। এখানে প্রাথমিক স্কুল, হাইস্কুল, মাদ্রাসা, কমিউনিটি সেন্টার, ও ফ্লাড সেন্টার আছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উল্লেখ করার মতো কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। মাতৃত্বকালিন সেবা নিতে আসা মা বোনদেরও বিভিন্ন গ্রাম থেকে অনেক কষ্ট করে আসতে হয় ক্লিনিক বা হাসপাতালে। ফলে উল্লেখিত স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণ এলাকাবাসীর এখন প্রাণের দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

(বিএম/এএস/জুন ১০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test