E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাণীনগরে জামালগঞ্জ-মিঠাপুর বিশ্ববাঁধ সড়ক এখন মরণ ফাঁদ

২০১৬ জুন ২০ ২০:৩২:৪৬
রাণীনগরে জামালগঞ্জ-মিঠাপুর বিশ্ববাঁধ সড়ক এখন মরণ ফাঁদ

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউপির প্রত্যন্ত জনপদের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা আত্রাই নদীর তীর সংরক্ষণ বিশ্ব বাঁধের সড়কটি খানা-খন্দ আর ভাঙ্গাচোরার কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

জামালগঞ্জের মোড় থেকে মিঠাপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়কটির মালিকানা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডির মধ্যে রশি টানাটানির কারণে অভিভাবকহীনতায় দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে চরম বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।

অবশেষে সড়কটি এলজিইডির তত্ত্বাবধানে যাওয়ায় খুব শিঘ্রী নতুন ভাবে পাকা করণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, রানীনগর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে প্রত্যন্ত এক জনবসতি ইউনিয়নের নাম মিরাট। আয়তনের দিক দিয়ে প্রায় ২২ হাজার জনসাধারণের বসবাস। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, মাদ্রাসা ও বাজার থাকলেও ভংগুর যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে কোন প্রতিষ্ঠানই যথাযথ ভাবে জনসেবা দিতে পারছে না। নদী আর বিল বেষ্টিত এলাকা হওয়ায় উপজেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি চলাচলের কোন সড়ক না থাকায় নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কাম পাকা সড়কই এই ইউনিয়নবাসীর একমাত্র ভরসা।

তবে বর্ষা মৌসুমে নৌকা চলাচলের কারণে তারা কিছুটা উপকৃত হয়। জীবন-জীবিকার তাগিদে এখান থেকে বেশকিছু লোকজন নওগাঁর মান্দা উপজেলার পার্শ্ববর্তী হওয়ায় জামালগঞ্জ-মিঠাপুর বাজার হয়ে উঁচু-নিচু গর্ত আর খানা-খন্দকে ভরা ইট বিছানো সড়ক দিয়ে মান্দা ও রাণীনগর উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। উপযুক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ওই এলাকার কৃষিপণ্য বিশেষ করে উৎপাদিত ধান ও ভুট্টা নিয়ে মৌসুমের শুরুতেই মিরাটের কৃষকরা নায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে মারাত্মক বিপাকে পড়েন।

মহাজনদের পাওনা ও পারিবারিক খরচ মিটাতে পানির দামে ধান, ভুট্টা ও অন্যান্য শাক-সবজি ফরিয়াদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হয় তারা। পাকা আর ভাঙ্গাচোরা সড়ক বলতে জামালগঞ্জ-মিঠাপুর বাজার পর্যন্ত সড়ক দিয়েই প্রতিদিন এলাকার হাজার হাজার মানুষ পারিবারিক প্রয়োজনের তাগিদে চরম ভোগান্তি স্বত্বেও বাধ্য হয়েই চলাচলের কারণে প্রতিদিন ঘটেই চলেছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত মিরাট, ধনপাড়া, হামিদপুর, বৈঠাখালী, আতাইকুলা, হরিশপুর, আত্রাই উপজেলার কালিকাপুর, বান্দাইখাড়া, নন্দনালী, শুটকিগাছাসহ অনেক গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। সড়কের মাঝে মাঝে ইট, মাটি উঠে গিয়ে প্রায় ১ থেকে ২ফুট পর্যন্ত গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এই সব গর্তে পানি জমে কাঁদা-পানিতে একাকার হয়ে তৈরি হয় ছোট ছোট বিপদজনক গর্ত। যা চলাচলের সময় কোনটা সড়কের ভাল অংশ আর কোনটি গর্ত দিনে-দুপুরেও বুঝে ওঠা মুশকিল। রাতে তো এই বিপদ লেগেই থাকে। প্রতিদিনই এই সব এলাকার মানুষদের নিত্যদিনের প্রয়োজন মেটাতে মরণ ফাঁদ নামক এই সড়কটিই ব্যবহার করতে হচ্ছে।

এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত ব্যাটারী চালিত টমটম, অটো রিক্সা, ভটভটি ও মটরসাইকেল সহ মাঝারি আকারের যানবাহন চলাচল করার সময় এই সব গর্তে উল্টে গিয়ে হতাহতের ঘটনা প্রায়শঃ ঘটেই চলেছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই যদি সড়কটির সংস্কার কিম্বা পুন:নির্মাণ কাজ করা না হয়, তাহলে চলাচলের জন্য অনুপযোগি হয়ে পড়া সড়কটি আরোও বিপদজনক হয়ে পড়বে বলে স্থানীয়রা জানান। সরকারের নানা উন্নয়ন মুখি প্রকল্প আসে প্রকল্প যায়, কিন্তু এই সড়কটি উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন নজরদারি নেই।

রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ শাইদুর রহমান মিঞা জানান, জামালগঞ্জ-মিঠাপুর সড়কটির সংস্কার কাজের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চাহিদা পত্র দেয়া আছে। বরাদ্দ পেলেই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।

(বিএম/এস/জুন২০,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test