E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অবশেষে বন্ধ হয়ে গেলো কুয়াকাটা হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা

২০১৬ জুন ২৫ ২১:২৬:৪১
অবশেষে বন্ধ হয়ে গেলো কুয়াকাটা হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : অবশেষে শনিবার স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। গত পাঁচদিন ধরে হাসপাতালের একমাত্র চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান ছুটিতে চলে যাওয়ার পর শনিবার হাসপাতালে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা একমাত্র স্বাস্থ্য সহকারী (সেকমো) সালমা বেগম তাঁর কর্মস্থলে চলে যাওয়ায় বর্তমানে হাসপাতালে জরুরি বিভাগসহ হাসপাতাল গেটে তালা ঝুলছে। এ কারণে হাসপাতাল গেট থেকেই ফিরে যাচ্ছে রোগীরা।

এ কারণে শনিবার সকাল থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক রোগী জরুরী চিকিৎসা নিতে এসে হাসপাতাল বন্ধ থাকায় ফিরে গেছে। তবে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ও জেলা সিভিল সার্জন জানালেন দুই/তিনদিনের মধ্যেই কুয়াকাটা হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরের চিকিৎসাসেবা পুনরায় চালু হবে।

জানাযায়, গত ২০ জুন কুয়াকাটা হাসপাতালে এক অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসায় অবহেলা করার কারণে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান কে লাঞ্চিত করে। এ ঘটনায় ওই ডাক্তার রোগীর পিতা জাকির ফকিরের বিরুদ্ধে মহীপুর থানায় মামলা করেই ছুটিতে চলে যায়। ওইদিনের পর থেকেই হাসপাতালে জরুরী বিভাগসহ ইনডোর ও আউটডোরের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা চালু রাখতে মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী (সেকমো) সালমা বেগম অতিরিক্তি দায়িত্ব পালন করলেও শনিবার তিনি তাঁর কর্মস্থলে চলে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় কুয়াকাটা হাসপাতাল।

হাসপাতালের ল্যাব এ্যাটেনডেন্ট অসীম চন্দ্র মালী জানান, আজ (শনিবার) হাসপাতালে কেউ নেই (ডাক্তার, কর্মচারী)। স্যারে (ডা. কামরুজ্জামান) ছুটিতে থাকায় এবং কোন কর্মচারী না থাকায় সব বিভাগই বন্ধ। একই কথা জানালেন অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সালমা বেগম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত পাঁচদিন ধরে চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকায় হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে ধুলা-বালির স্তর জমা হয়েছে। ডাক্তার-কর্মচারী না থাকায় প্রতিটি কক্ষে তালা ঝুলছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা খায়রুন বিবি, সালেহা খাতুন বলেন,“ এইরহম আর কয়দিন হাসপাতাল বন্ধ থাকবে। দুইদিন আইয়া এই ফিইর‌্যা যাইতেছি। এই হানে এ্যামনেই চিকিৎসা,ঔষধ পাওয়া যায় না। আর এ্যাহনতো ডাক্তাররা সুযোগ পাইয়া হাসপাতালই বন্ধ কইর‌্যা দেছে”। তাদের মতো অর্ধ শতাধিক রোগী শনিবার কুয়াকাটা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ফিরে গেছে।

কুয়াকাটার বাসিন্দারা জানান, প্রায় ৫০ হাজার মানুষ কুয়াকাটা হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এভাবে হাসপাতাল বন্ধ রেখে কর্মচারী-ডাক্তারদের গনছুাটি ও বদলীর নজির নেই। তাদের অভিযোগ, কলাপাড়া হাসপাতালের শীর্ষ ডাক্তাররা তাদের ভিজিট ওক্লিনিক বানিজ্য আরও বাড়াতে কুয়াকাটা হাসপাতাল বন্ধ হলেও কোন ব্যবস্থা নেয় নি। বরং ডাক্তার কামরুজ্জামান কে ছুটি নিতে তারা উৎসাহ দেওয়ায় বর্তমানে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারী জানান, কুয়াকাটা হাসপাতাল বন্ধ রেখে কেউ ছুটিতে যেতে পারেণা। তিনি কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসকের সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান। পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. সেলিম মিয়া সকালের খবরকে জানান, রোগীর স্বজনদের হাতে এক ডাক্তার লাঞ্চিত হওয়া নিয়ে কুয়াকাটা হাসপাতালে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তবে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রাখা যাবে না। হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বন্ধ আছে কিনা তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক এ কে এম শামিমুল হক সিদ্দিকী জানান, কুয়াকাটা হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছেন। আগামী দুই/তিনদিনের মধ্যেই কুয়াকাটা হাসপাতালে ইনডোর ও আউটডোরে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা চালু সহ শূন্যপদে ডাক্তার-কর্মচারী পদায়ন করা হবে। তবে হাসপাতাল বন্ধ রেখে কেউ ছুটিতে যেতে পারে না।

(এমকেআর/পি/জুন ২৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test