E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সাতক্ষীরায় বিএনপি নেতা অলিউল্লাহ মোল্লা নিহত

২০১৬ জুলাই ১০ ১৩:৫৫:০১
সাতক্ষীরায় বিএনপি নেতা অলিউল্লাহ মোল্লা নিহত

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সাতক্ষীরার শ্যামনগর  উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অলিউল্লাহ মোল্লা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন দু’ পুলিশ সদস্য। রবিবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের গাঙাটি চোরাখাল এলাকার চারাবটতলা  কালভার্টের পাশে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি মোটর সাইকেল, একটি সাটার গান ও বিস্ফোরিত বোমার কিছু অংশ উদ্ধার করেছে।

নিহত অলিউল্লাহ শ্যামনগর উপজেলার জয়নগর গ্রামের এন্তাজ মোল্লার ছেলে ও খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক অণির্বান পত্রিকার শ্যামনগর প্রতিনিধি। অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যায় শ্যামনগর থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী এমআর পরিবহন থেকে দেবহাটার পারুলিয়া বাসস্ট্যান্ড গোয়েন্দা পুলিশ তাকে আটক করে। রবিবার ভোরে তাকে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে পুলিশ মুখের মধ্যে ও মাথায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে হত্যা করেছে।

জেলা পুলিশের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা উপপরিদর্শক কামাল হোসেন খান দাবি করেন, শ্যামনগর থানার উপ পরিদর্শক সুধাংশু শেখর মণ্ডলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রবিবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের গাঙাটি চোরাখাল কালভার্টের উপর টহল দিচ্ছিল। এ সময় একদল লোক মোটর সাইকেলে দ্রুতবেগে যেতে থাকলে পুলিশ তাদের থামতে সংকেত দেয়। তারা সংকেত না মেনে উল্টো তারা পুলিশের উপর বোমা নিক্ষেপ করে ও গুলি ছুঁড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মোটর সাইকেলসহ পড়ে যায়। অন্যরা মোটর সাইকেল ঘুরিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

তিনি জানান, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে শ্যামনগর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে তাকে শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি গ্রামের নাশকতার বহু মামলার পলাতক আসামী অলিউল্লাহ মোল্লা হিসেবে শনাক্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, মাদারিপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি। অলিউল্লাহ একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতা ছিলেন বলেও জানান তিনি।
কামাল হোসেন খান আরও জানান বন্দুকযুদ্ধের সময় সহকারি উপপরিদর্শক ইমরান হোসেন ও সিপাহী শহীদুজ্জামান আহত হন। তাদেরকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোটর সাইকেল, একটি সাটার গান ও বিস্ফোরিত বোমার কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

জয়নগর গ্রামের জহুরুল মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, তার ভাইপো অলিউল্লাহ মোল্লা দীর্ঘদিন যাবত ঢাকায় শ্রমিক সরদারের কাজ করে। সে ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছিল। কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড শংকরপুরের ইউপি সদস্য আব্দুল জলিলের সঙ্গে শনিবার সন্ধ্যায় শ্যামনগর থেকে ছেড়ে যাওয়া এমআর পরিবহনে বাড়ি থেকে খানপুর হয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে তাকে দেবহাটার পারুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে । রাতে শ্যামনগর থানার সেকেন্ড অফিসার নিখিল চন্দ্র অধিকারী তাকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার করেন। তবে কালীগঞ্জ সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মির্জা সালাহউদ্দির আহমেদ তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি অস্বীকার করেন। পুলিশ কথিত বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে অলিউল্লাহ’র মাথায় ও মুখের মধ্যে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক নিখিল চন্দ্র অধিকারী জানান, সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় উপপরিদর্শক শেখর চন্দ্র মণ্ডল বাদি হয়ে রবিবার থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেছেন। ময়না তদন্তের জন্য লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গ্যে পাঠানো হয়েছে।

শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আনিসুর রহমান জানান, নিহত অলিউল্লাহ এর মাথায় ও মুখের মধ্যে গুলি লেগেছে।

(আরকে/পি/জুলাই ১০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test