E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁ-আত্রাই সড়কের মির্জাপুরে পুনঃনির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম-লুটপাটের অভিযোগ

২০১৬ জুলাই ১২ ১৬:০৬:১৬
নওগাঁ-আত্রাই সড়কের মির্জাপুরে পুনঃনির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম-লুটপাটের অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি : গত বছরের বন্যায় বিধ্বস্ত নওগাঁ-আত্রাই সড়কের মির্জাপুর নামক স্থানে ভাঙ্গা অংশ পুনঃনির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজ করার ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমে যে কোন সময় তা  ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ তাদের আবাদি জমির ফসল নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে। নওগাঁ জেলা শহরের সঙ্গে আত্রাই উপজেলাবাসীর যোগাযোগের এটি একমাত্র পথ হওয়ায় এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলায় রাস্তার কাজে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি লাখ লাখ টাকা লোপাট করায় পর পর দুই বছর একই স্থানে রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এলাকাবাসির মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর, মির্জাপুর, রসুলপুর ও হাটকালুপাড়া এলাকায় আত্রাই নদী ও ছোট যমুনা নদীর মোহনা।

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে দুই নদীতে সামান্য পানি বৃদ্ধি পেলেই মূহর্তের মধ্যে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। বিগত ২০১৪ সালের মত গত বছরের ২৩ আগস্ট ভোর রাতে ভয়াবহ বন্যায় আত্রাইয়ের মির্জাপুর নামক স্থানে নওগাঁ-আত্রাই আঞ্চলিক সড়ক ফের ভেঙে এলাকার সমুদয় ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। সেই সঙ্গে এলাকার শত শত পরিবার প্রায় ২ মাস পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে। এতে আত্রাই-রাণীনগর উপজেলার প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। বন্যার পানি শুকিয়ে যাওয়ার ৯ মাস পর সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে ভাঙ্গা স্থানটি মেরামতের জন্য ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

এদিকে সড়কটির দুই পাশে ব্লক দেয়া ও স্লুইচগেট নির্মাণের দাবি জানিয়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ । নিম্নমানের কাজ করার ফলে যে কোন সময় আবারও ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা ব্লক দেয়া ও স্লুইচগেট নির্মাণের কোন উদ্যোগ না নিয়েই টাকা বরাদ্দের পর তড়িঘড়ি করে নাম মাত্র মাটি কেটে রাস্তা মেরামত করে চলে যায়। সড়কটি সঠিক ভাবে মেরামত না করায় সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। এতে আত্রাই-রাণীনগর উপজেলার ৩ লাখ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

মির্জাপুর গ্রামের জাহিদ হাসান জানান, ভাঙ্গনের আগে সড়ক যে উচ্চতায় ছিল তার চেয়ে এ বছর অনেক নিচু করে নির্মান করা হয়েছে। এছাড়া সড়কের একেবারে নীচ থেকে মাটি কেটে সড়কটি মেরামত করা হয়েছে। এতে স্বাভাবিক বৃষ্টিতেই রাস্তার মাটি ধুয়ে খাদের নীচু অংশ পুরন হবে এবং রাস্তায় ধ্বস নামবে। ভবানীপুর গ্রামের আবুল কালাম জানান, ভাঙ্গাস্থানে সড়কের কাজ করার সময় কোন সিডিউল টাঙ্গানো হয়নি এবং সড়কটি সোজা না করে পানির চাপের দিকে বাঁকা করে মেরামত করা হয়েছে। ফলে পানির চাপ সহ্য করতে পারবেনা সড়কটি। গত কয়েক দিনের সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের বেশ কিছু অংশ ধসে গেছে। এ বছরও যে কোন সময় রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শাহাগোলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শামছুল আলম বলেন, ‘আগের বছর একই স্থানে ভাঙ্গনে ৪২ লাখ টাকা খরচ করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বরাদ্দের টাকা লুটপাট করায় গত বছরও সড়কটি ভেঙ্গে যায়। সেই স্থানে এবারে ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ ইসরাফিল আলম জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগকে সঠিক ভাবে সড়কের কাজ করার নির্দেশ দিলেও তারা তা না করে এক-তৃতীয়াংশ কাজ করে বাঁকি টাকা লুটপাট করেছে। ওই স্থানে ব্লক এবং একটি স্লুইচ গেট নির্মাণের দাবি জানানো হলেও তার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

(বিএম/এএস/জুলাই ১২, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test