E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মাগুরায় ৩ দিনেও মেলেনি চার যুবকের সন্ধান

২০১৬ জুলাই ১৪ ১৫:৫৪:১৮
মাগুরায় ৩ দিনেও মেলেনি চার যুবকের সন্ধান

দীপক চক্রবর্তী,মাগুরা থেকে :মাগুরা শহর কালী মন্দিরে অনুপ্রবেশকারী সন্দেহভাজন ৪ যুবককে সনাক্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে জেলার পুলিশ। ঘটনার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ সন্দেহভাজনকারীদের কোন সন্ধান পায় নাই। চলছে সার্বক্ষণিক  ভাবে পুলিশী অভিযান। পুলিশের পাশাপাশি চলছে জেলার গ্রামে-গ্রামে, মহল্লায়- মহল্লায় রাতভর পাহারা। আতঙ্কিত জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।

গত সোমবার রাতে ৪ যুবক রিক্সা যোগে মাগুরা শহরের কেন্দ্রীয় কালী বাড়ির সামনে এসে নামে। এদের মধ্যে পায়জামা-পান্জাবী পরা ও মুখে দাড়িয়ালা ব্যাগ হাতে এক যুবক কালিবাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় তার সাথে আসা অপর তিন সঙ্গী মন্দিরের বাইরে অবস্থান করছিলো। মন্দিরের ভেতরে ঢোকা সন্দেহভাজন ওই যুবক তাবিজ ও তদবির নেওয়ার কথা বলে মন্দিরের সামনে থাকা সমর কুমার নামে স্থানীয় এক দর্শনার্থীর কাছে পুরোহিত পরেশ মজুমদারের খোঁজ-খবর নিতে থাকে। এ সময় মন্দিরে উপস্থিতিরা জানান পুরোহিত কোন তাবিজ দেন না। তখন যুবক বলে আমার মায়ের জন্য ফুল বেলপাতা লাগবে। এ সময় লোকজন বলে আপনি কাল সকালে পরিচিত কোন হিন্দু লোক সাথে নিয়ে আসবেন। যুবকটি মন্দিরের বাইরে অপেক্ষামাণ ৩ যুবকদের কাছে গিয়ে হাতে থাকা ব্যাগটি রেখে পুনরায় মন্দিরে প্রবেশ করে পুরোহিত কখন আসবে জানতে চায়। সকালে আসার কথা বললে সে এদিক-ওদিক ঘোরা-ফেরা করে দ্রুত মন্দির থেকে বের হয়ে যায়। তখন উপস্থিত লোকজনের সন্দেহ হয়। তারা এঘটনাটি সাথে-সাথেই থানা পুলিশকে অবহিত করে। যা শহরবাসীর মধ্যে ব্যাপক ভিতি সৃষ্ঠি হয়।

পুলিশ ওই যুবকদের আটককে বিরতীহিন অভিযানে নামে। কিন্তু ঘটনার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও আজও সন্দেহ ভাজন ওই ৪ যুবকের সন্ধান মেলাতে পারেনি পুলিশ।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ সন্দেহ জনক ৩ যুবককে আটক করে। পরে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজের সাথে মিল না থাকায় বহু জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সুত্রে জান গেছে।

পুলিশ সুপার একেএম এহসান উল্লাহ জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ কালিমন্দিরে অনুপ্রবেশকারী সুমন আহম্মেদকে সনাক্ত করে রাত ৮ টার দিকে তার নিজ গ্রাম থেকে আটক করে। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অপর তিন যুবককে সনাক্ত করে মাগুরা শহরের জামরুলতলা এলাকা থেকে সাড়ে ৮ টার দিকে অপর দুইজনকে আটক করে।

অটকদের পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই বাছাই শেষে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অপর দিকে, শালিখা থানা পুলিশ জঙ্গি সন্দেহে আব্দুল নূর (২২) নামে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে আটক করেছে। বুধবার সকালে শালিখা উপজেলার সীমাখালী এলাকা থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। আটক নূর চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকার সৌদি প্রাবাসী আব্দুর রশিদের পুত্র।

শালিখা থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে শালিখার সীমাখালী এলাকা থেকে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুর নূরকে জঙ্গি সন্দেহে আটক করা হয়। সে নড়াইল থেকে ভাড়ায় চালিত মটরসাইকেলে করে সকালেই সিমাখালী এলাকায় আসে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের ছাত্র নূর । বহু জিজ্ঞাসাবাদ করেও তার নিকট থেকে কোন প্রকার তথ্য বের না হওয়ায়, তাকে বৃহস্পতিবার সকালে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মাগুরার কেন্দ্রীয় কালী মন্দিরের ঘটনার পর থেকেই গ্রামে-গ্রামে চলছে পাহারা। রাতের পর রাত পাহারা দিয়ে চলছে হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম গুলিতে। শুধু তাই নয়, জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমনকি জঙ্গী ঘটনায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে পড়েছে সম্প্রদায়ের লোকজনের।


(ডিসি/এস/জুলাই১৪,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test