E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁয় অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ২

২০১৬ জুলাই ১৫ ১৮:০৫:৩৯
নওগাঁয় অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ২

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দনারায়নপুর গ্রামে অবৈধভাবে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া এবং ১৫দিন পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সেখানে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নারীসহ ২ জন আহত হয়েছে। আহতদের নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার (নওহাটামোড়) চৌমাশিয়া পল্লীবিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রের লাইনম্যান ফিরোজ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বেশ কয়েকটি বাড়িতে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। ১৫ দিনপর সে আরো টাকা দাবি করে না পেয়ে তিন বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিনটি মিটার খুলে নিয়ে যায়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার প্রতিবেশীদের মারপিটে আতিকুর রহমান (২০) ও পাপিয়া বেগম নামে দু’জন মারাত্মকভাবে জখম হয়। স্থানিয়রা জানায়, পূর্বের আবেদনের ভিত্তিতে পল্লী বিদ্যুৎ চৌমাশিয়া অভিযোগ কেন্দ্রর লাইনম্যান ফিরোজ ও তার সহযোগী (অভিযোগ কেন্দ্রের ) দালাল হিসেবে এলাকার লোকজনের কাছে পরিচিত ইলেকট্রিশিয়ান ময়েন গত ঈদের পূর্বে শুক্রবারে খোর্দ্দনারায়নপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আজাদুল ইসলাম আজাদ, শরিফ হোসেনের স্ত্রী পাপিয়া বেগম ও আইনুল ইসলামের স্ত্রী মঞ্জু আরার নামে (সিয়মো) ইস্যু হয়ে আসা মিটারসহ মোট ওই দিন ২১টি মিটার লাগিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। প্রতিটি মিটার সংযোগ দিতে সাথে আসা দালালের মাধ্যমে নামমাত্র কিছু টাকা নিলেও এরমধ্যে সমস্যা থাকায় ৫ থেকে ৬ টি মিটারের গ্রাহকের কাছে থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়ার পর বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে গ্রাহক পাপিয়া বেগমের ভাসুর সাহাদুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার ছোট ভাই শরিফ বিদেশে থাকায় তার স্ত্রী পাপিয়া বেগম মিটারের আবেদন করার পর পাস হয়ে আসে। মিটারটি পুরনো বাড়িতে না লাগিয়ে নির্মানাধীন নতুন বাড়ির একটি দেয়ালে লাগানোর জন্য বলা হলে, লাইনম্যান ফিরোজ প্রথমে ১০ হাজার টাকার দাবি করেন। এক পর্যায়ে ৮ হাজার টাকার বিনিময়ে মিটারটি লাগিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হলেও আরো দুই হাজার টাকার দাবি করে না পেয়ে লাইনম্যান ফিরোজ বৃহস্পতিবার বিকালে বাড়ির লোকজনের অজান্তে মিটার খুলে নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে প্রতিবেশীদের বলে যায় যে পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজনের অভিযোগ থাকায় মিটার খুলে নিয়ে গেলাম।

এসময় লাইনম্যান ফিরোজ পার্শ্ববর্তী রফিকুলের বাড়ির দেয়ালে লাগানো আজাদুল ইসলাম আজাদ ও মন্জুআরা বেগমের মোট ৩ টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিটার খুলে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ স্থানিয়দের । এব্যাপারে রফিকুল ইসলাম বলেন, আজাদের মিটার আমার দেয়ালে লাগানোর জন্যও লাইনম্যান ফিরোজ ৮ হাজার টাকা নিয়েছে তার পরেও বিচ্ছিন্ন করে মিটার খুলে নিয়ে গেছে। অপর গ্রাহক মঞ্জু আরা বেগমের স্বামী আইনুল ইসলাম জানান, বিদ্যুতের পোল থেকে আমার বাড়ি ১ শ’৩০ ফুটের বেশী ২০ ফুট হওয়ায় লাইনম্যান ফিরোজ ৫ হাজার টাকার দাবি করলেও আমি ১ হাজার টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু মাত্র ১৩/১৪ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার লাইনম্যান ফিরোজ এসে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিটার খুলে নিয়ে গেছে।

এব্যাপারে গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ছহির উদ্দীন জানান, চৌমাশিয়া বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন গত ঈদের ৫/৭ দিন আগে গ্রামে বেশকিছু নতুন সংযোগ দিলেও হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবার গ্রামের ৩ টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় গ্রামের লোকজনের মাঝে দ্বন্দের সৃস্টি হয়। সেই দ্বন্দের জেরধরে শুক্রবার সকালে প্রতিপক্ষের মারপিটে মৃত মকছেদ আলীর ছেলে আতিকুর রহমান (২০) ও শরিফ হোসেনের স্ত্রী পাপিয়া বেগম (৩৫) গুরুতর জখম হয়।

এব্যাপারে চৌমাশিয়া অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জের দ্বায়িত্বে থাকা সাব-ষ্টেশনের জুনিয়র ইজ্ঞিনিয়ার রওশন আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, ঘটনাটি পূর্বে জানা ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, ভুল করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছিল, সেই ৩টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বলে শুক্রবার সকালে লাইনম্যান ফিরোজ আমাকে জানিয়েছে। টাকার বিনিময়ে অবৈধ সংযোগ দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমি খোঁজ-খবর নিয়ে বিষয়টি দেখছি।

(বিএম/এএস/জুলাই ১৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test