E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাণীনগরে শিবির ক্যাডারের লাম্পট্য, বিপাকে ভিকটিম পরিবার

২০১৬ আগস্ট ০৬ ১৬:৩২:৫৬
রাণীনগরে শিবির ক্যাডারের লাম্পট্য, বিপাকে ভিকটিম পরিবার

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরের আতাইকুলা গ্রামে এক শিবির ক্যাডার জোরপূর্বক ঘরে ঢুকে অসহায় এক স্কুলছাত্রীর  শ্লীলতাহানী করার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের আশায় অসহায় দিনমজুর শামসুদ্দিনের পরিবার এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। থানা, আদালত থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কাছে সুবিচার চেয়ে ফিরছেন তিনি। থানায় মামলা করে বিপাকে পড়েছে ভিকটিম পরিবার। আসামী বুক ফুলে এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে ধরতে পারছে না বলে পরিবারের অভিযোগ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আতাইকুলা গ্রামের ৫ম শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্রী। দীর্ঘদিন যাবত এই মেয়ের স্কুলে যাওয়া-আসার পথে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে আসছিল একই গ্রামের প্রভাবশালী সামাদের ছেলে শিবির ক্যাডার বেলাল হোসেন (৩০)।

বিষয়টি বেলালের পরিবারকে বার বার জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। গত ২৮ জুলাই ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা-মা আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ায় মেয়ে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে দুপুরে বাড়িতে আসে। বাড়ির গেট খুলে প্রবেশ করার সময় পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা বেলাল পিছন থেকে মুখ চেপে ধরে জোর করে বাড়ির মধ্যে শয়ন ঘরে নিয়ে যায়। ঘরের ভিতর নিয়ে গিয়ে ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে জোরপূর্বক ওড়না দিয়ে মুখ বেধে ধর্ষণ করার চেষ্টা করতে থাকে এবং এই কথা কাউকে জানালে বেলাল ওই মেয়েকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। স্কুল ছাত্রী লম্পট বেলালের হাত থেকে রক্ষা পাবার চেষ্টা করতে গেলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চাকুর খোঁচা লেগে জখম হয়।

বেলাল যখন জোরপূর্বক মেয়েকে নিয়ে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে, তখন মেয়ের চাচাতো ছোট বোন দেখতে পেয়ে বিষয়টি তার মাকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং টের পেয়ে লম্পট বেলাল বাড়ির প্রাচীর টপকিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়ের মা সুষ্ঠু বিচারের আশায় ওইদিনই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ২৯ জুলাই অভিযোগটি মামলা হিসেবে গৃহিত হয় (মামলা নং ৩৪)। কিন্তু আট দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনো শিবির ক্যাডার লম্পট বেলালকে আটক করতে পারেনি। অথচ বেলাল এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মেয়েসহ মেয়ের পরিবারকে বিভিন্ন রকমের ভয়-ভীতি দেখিয়ে আসছে। এতে অসহায় স্কুল ছাত্রী ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীতায় ভুগছে।

গ্রামবাসী জানান, বেলাল গ্রামে বিগত দিনেও একাধিকবার এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনা ঘটিয়েই সে ভারতে পালিয়ে যায়। তার প্রভাবশালী পরিবারের কাছে বিষয়গুলো জানালে তার পরিবার বিষয়টি দেখবেন বলে জানাতেন। কিন্তু শিবির নেতা বেলাল গ্রামে এই ধরনের কর্মকাণ্ড বারংবার ঘটিয়েই আসছে। আমরা গ্রামবাসী এই লম্পটের কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা চাই। যাতে বেলাল আর কোন দিন কোন মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস না পায়।

মেয়ের মা জানান, আমরা গরীব-অসহায় মানুষ। আমি আমার মেয়ের জন্য সমাজের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই। একাধিকবার বেলালের পক্ষ থেকে অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি মিটমাট করার প্রস্তাব আমাদের কাছে এসেছে। কিন্তু আমরা অর্থ চাই না। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। যাতে আর কোন মেয়ে এই লম্পটের শিকার না হয়। বেলাল এলাকায় প্রকাশ্যে থাকলেও তাকে আটক করে কোন শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে না। বরং বেলালের ভয়-ভীতিতে আমরাই চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফ খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আসামী পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে তাকে গ্রেফতারে জোর তৎপরতা চলছে।

(বিএম/এএস/আগস্ট ০৬, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test