E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

শত বছরেও সরকারি হয়নি রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

২০১৬ আগস্ট ০৬ ১৭:৪০:০৬
শত বছরেও সরকারি হয়নি রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

খুরশিদ আলম শাওন, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) : রাণীশংকৈলের ঐতিহ্যবাহী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির স্বাক্ষর বহন করছে বিদ্যালয়টি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়স্থল হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে। কালের আবর্তে ইতিমধ্যে শত বছর অতিক্রম করেছে এই বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ১৯১৪ সালে রামগঞ্জ বিএন ইন্সটিটিউট নামে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৭৬ সালে পাইলট প্রকল্পের আওতায় এনে নামকরণ করা হয় রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।

২০১৪ সালে আগষ্ট মাসের ১০ তারিখে অনাড়ম্বর আয়োজনে শত বছর পূর্তি উদযাপনের মহোৎসব হয়েছে। প্রাচীন এই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। শহরের প্রাণকেন্দ্র রাজা টংকনাথ জমিদার বাড়ির শেষ সীমানায় কুলিক নদীর তীরে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থান।

উপজেলায় প্রথম প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি জ্ঞান পিপাসুদের একমাত্র ভরসার স্থল ছিল। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ সকলের জন্য উন্মুক্ত। এলাকার বিনোদনের চাহিদা পূরণ করছে ওই মাঠ। তবে পরিচর্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এর দৈন্যদশা চরম আকার ধারণ করেছে। নেই কোন সীমানা প্রাচীর বা গ্যালারীর ব্যবস্থা। জীর্ণশীর্ণ দাঁড়িয়ে রয়েছে পুরনো ভবন। ইটের সুরকি, এমনকি ইটও খসে পড়ছে এসব ভবন থেকে। দেখার কেউ নেই।

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোঃ সোহেল রানা বর্তমানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। শিক্ষার আলো ছড়াতে রাজা টংকনাথ জমিদারের নিজস্ব উদ্যোগে ৮ একর ২৪ শতাংশ জমিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্কুলের উন্নয়ন ও সমস্যা সমাধানের তদারকিতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রাণীশংকৈল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক সইদুল হক।

উপজেলার শিক্ষা সম্প্রসারণে নেতৃত্ব দিচ্ছে অত্র বিদ্যালয়। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক সহ বিভিন্ন পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে এর পরিচিতি উপজেলার সর্বত্র। ১৯৬২ খ্রীষ্টাব্দ থেকে এসএসসি চালু রয়েছে। শুরু থেকেই এসএসসিতে পাশের হার প্রায় ৭৫%। গত বছর এসএসসিতে পাশের হার ছিল ৯৪%। ঐতিহ্যের বাহক এই বিদ্যালয়কে শতভাগ পাশের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। বিদ্যালয়ের কাঠামোগত অবস্থান সুদৃঢ় থাকলেও সুনিপুণ পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর বৃক্ষ পরিবেষ্টিত পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ছাড়াও রয়েছে বড় একটি খেলার মাঠ। তবে নেই খেলার সামগ্রী।

পাঠদানে মানবিক ও বিজ্ঞান বিভাগের পৃথক শাখা চালু রয়েছে। বিজ্ঞানাগারে যন্ত্রপাতি সংকট থাকায় শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪৫০ জন। ২২ জন শিক্ষক কর্মরত। ৪টি ভবনের ১৭টি কক্ষে ক্লাশ চালু রয়েছে। ১টি কম্পিউটার দিয়ে চলছে ল্যাবের কার্যক্রম। স্যানিটেশন আর আসবাবপত্রের উন্নয়ন হয়েছে। নামেমাত্র একটি পাঠাগার থাকলেও পাঠাগারে প্রয়োজনীয় বই সরবরাহের ব্যবস্থা নেই।

বিদ্যালয়ের প্রাক্তণ ছাত্র ঠাকুরগাঁও- ৩ আসনের সাংসদ অধ্যাপক ইয়াসিন আলী বলেন, রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় শত বছর অতিক্রম করেছে। অনেক ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক অত্র প্রতিষ্ঠানটি। পরিতাপের বিষয়, এখনো প্রাচীন এই বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করা হয়নি। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

(কেএএস/এএস/আগস্ট ০৬, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test