E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরোধ চরমে

২০১৬ আগস্ট ০৮ ১৬:১১:৪৬
বাগেরহাটে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরোধ চরমে

বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের চিতলমারী এস এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারীকরণের পর প্রধান শিক্ষক ও পরিচলানা কমিটির সভাপতির মধ্যে বিরোধ এখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে এ নিয়ে চলছে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রীয়া ছড়িয়ে পড়ছে শিক্ষার্থী ও অভিবাবক মহলে। ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিদ্যালয় অঙ্গণ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৪০ সালে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক চিতলমারী উপজেলা সদরে তার ফুফু সামছুন নেছা চৌধুরানীর নামে চিতলমারী এস এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বিগত ৭৬ বছর ধরে বিদ্যালয়টি সুনামের সাথে প্রচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে স্কুলে ১৫ জন শিক্ষক, একজন লাইব্রেরীয়ান, ৪ জন কর্মচারী ও ৮৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।

২০১৫ সালের ৩০ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্কুলটি পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনের পর গত ১৩ জুলাই মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর স্কুলটি জাতীয়করণ করা হয়েছে মর্মে চিঠি পাঠায়। আর এরপর থেকে প্রধান শিক্ষক রমেন্দ্র নাথ মল্লিক ও পরিচলানা কমিটির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমানের মধ্যে স্কুলের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধ এখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।

প্রধান শিক্ষক রমেন্দ্র নাথ মল্লিক জানান, গত পহেলা আগষ্ট বিদ্যালয়ের ১৬টি দোকানের ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর সভাপতির বিরুদ্ধে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের লিখিত অভিযোগ করেন। ওই দিনই নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার পারভেজ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গৌতম মন্ডলকে আহবায়ক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মফিজুর রহমান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ ঘোষকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে ২ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন। পরে ২ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে ১৬ জন অভিযোগকারীর লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সভাপতি প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে কটুক্তি করার অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

রমেন্দ্র নাথ মল্লিক আরও জানান, স্কুল সরকারি হলে তিনি আর সভাপতি থাকবেন না। তাই তিনি নানা ভাবে স্কুলের বিভিন্ন ফান্ড থেকে ১০ লাখ টাকা তুলে তার হাতে দেয়ার জন্য বিভিন্ন ভুয়া বিল ভাউচার স্বাক্ষর করতে বলেন। আর স্বাক্ষর না করায় সভাপতি তার উপর প্রতিশোধ নিতে এ বিষোদাগার ছড়াচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে স্কুল ও শিক্ষার্থীদের উপর।

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান শেখ জানান, প্রধান শিক্ষক রমেন্দ্র নাথ মল্লিক প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যর বিরুদ্ধে কটুক্তি করেছেন। যার লিখিত অভিযোগ তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে করেছেন। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্কুলের দোকান ঘর ভাড়াটিয়া অভিযোগকারী মেজবাহ শিকদার, তাপস বাড়ৈ ও লিটন বড়ালসহ ১৬ জন ভাড়াটিয়া জানান, তাদের কাছ থেকে স্কুলের সভাপতি বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে ঘুষ গ্রহণ করছেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিবাবক জানান, সভাপতি তার অপকর্ম চাপা দিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার প্রভাব পড়ছে স্কুল ও শিক্ষাথীদের উপর। চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রীয়া ছড়িয়ে পড়ছে শিক্ষার্থী ও অভিবাবক মহলে। ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিদ্যালয় অঙ্গণ।

তদন্ত কমিটির সদস্য চিতলমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান জানান, সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলছে। দুইদিনের সময় দেয়া হলেও আরও দু’একদিন সময় লাগবে।

চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার পারভেজ জানান, সভাপতি হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগটির তদন্ত চলছে। আর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগটি তিনি নিজেই তদন্ত করবেন।


(এসএকে/এস/আগস্ট০৮,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test