E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গৌরীপুর সরকারি কলেজে সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ৫১ আসনের ছাত্রাবাস

২০১৬ আগস্ট ০৯ ১৪:৫৫:০৬
গৌরীপুর সরকারি কলেজে সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ৫১ আসনের ছাত্রাবাস

শফিকুল ইসলাম মিন্টু, গৌরীপুর প্রতিনিধি:ময়মনসিংহের গৌরীপুর সরকারি কলেজের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে মাত্র ৫১ সিটের হোস্টেল। তাও আবার সেটি মাত্র ছেলেদের জন্য। আড়াই হাজার ছাত্রীর জন্য নেই কোনো ছাত্রীনিবাস। চার হাজার ছাত্রের জন্য দুটি ছাত্রাবাস থাকলেও আসন সংখ্যা মাত্র ৫১টি। আসন সঙ্কটের কারণে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই সীটের জন্য আবেদন করে না। ফলে তাদের থাকতে হচ্ছে মেসে কিংবা ভাড়া বাড়িতে। এতে করে তাদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটছে এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাস) ছাড়াও ৬টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু রয়েছে। কলেজের সর্বমোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ছয় হাজার। কিন্তু বিশাল শিক্ষার্থীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা। বছর দুয়েক আগে একশত আসন বিশিষ্ট বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীবাস ও আরেকটি পৃথক ছাত্রাবাস নির্মাণের প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত বরাদ্দ হয়নি। ফলে ছাত্রাবাসে আসনের সংকট, অন্যদিকে ভাড়া বাড়িতে মালিকপক্ষের বাড়াবাড়ি সব মিলিয়ে অনেকটাই আবাসন-নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য এস আলী ছাত্রাবাসে ২৭টি ও স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য নূরুল আমিন খান ছাত্রাবাসে ২৪ টি আসন রয়েছে। কিন্তুু এই দুটি ভবন অত্যন্ত জরাজীর্ণ। প্রতি কক্ষে ৩/৪ জন শিক্ষার্থী থাকলেও ফ্যান রয়েছে একটি করে। সিলিং ও টিনের চালে ভাঙ্গাচোরা। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে শিক্ষার্থীদের বই খাতা-জামাকাপড় নষ্ট হয়। কক্ষগুলোর দরজা-জানালাগুলো নষ্ট থাকার কারণে প্রায়ই ছাত্রাবাসে স্থানীয় ছিচকে চোরের দল মোবাইল ও টাকা চুরি করে নিয়ে বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী।

এস আলী ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মোঃ বরকত উল্লাহ বলেন, ছাত্রাবাসে সিট নিলে বছরে ভাড়া লাগে ২৮শত টাকা। মেসে সিট নিলে বছরে ভাড়া প্রায় ১০ হাজার টাকা। তাই সেবার মান খারাপ হলেও টাকা বাঁচাতে কষ্ট করেই এখানে থাকতে হচ্ছে। জরাজীর্ণ ভবনের বিষয় জানেত চাইলে কলেজ কতৃপক্ষ জানান, চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় ছাত্রাবাস সংস্কার করা যাচ্ছে না।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, অনেক শিক্ষার্থী গৌরীপুরের বাইরে থেকে এসে কলেজে পড়াশোনা করেন। কিন্তুু আবাসন সঙ্কটের কারণে দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থী পৌর শহরের বালুয়াপাড়া, শান্তিবাগ, খেলারমাঠ, ছয়গগন্ডা, কলাবাগান, গোলকপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় মেস ভাড়া করে থাকে। ভাড়া বেশি হওয়ায় মেসের ছোট একটি কক্ষে তিন থেকে চারজন থাকতে হয়। এ ছাড়াও বাড়ির মালিকদের নিয়মের কড়াকড়ির কারণে বেশির ভাগ মেসে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেক মেসে পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে থাকেন মালিকগণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থী বলেন, ভাড়া বাড়িতে থাকতে গেলে নানা রকম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ভাড়াটিয়ার আতœীয় ও স্থানীয় বখাটেরা প্রায়ই উত্যক্ত করে। ফলে সব সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগতে হয়।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সম্মাণ ২য় বর্ষের ছাত্রী পূজা সাহা বলেন, কলেজের অনেক মেয়ে শিক্ষার্থী গৌরীপুরের বাইরের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে এখানে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তুু ছাত্রীবাস না থাকার তাদের নানা রকম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

গৌরীপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, ছাত্রাবাস ও ছাত্রীবাস নির্মাণের জায়গা নির্ধারণ করে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে জোর তদবির না থাকার কারণে বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। দ্রুত বরাদ্দ পেতে আমাদের নব-নির্বাচিত এমপি মহোদয়ের তদবিরের পাশাপাশি সহযোগিতা প্রয়োজন।

গৌরীপুর আসনের নবনির্বাচিত এমপি নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, কলেজের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সব ধরণের সহযোগিতার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


(এসআইএম/এস/আগস্ট০৯,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test