E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাপাহার সীমান্ত গলিয়ে আসছে ভারতীয় গরু, দেশীয় খামারীরা বিপাকে

২০১৬ সেপ্টেম্বর ০৪ ১৩:৫৩:৩৪
সাপাহার সীমান্ত গলিয়ে আসছে ভারতীয় গরু, দেশীয় খামারীরা বিপাকে

নওগাঁ প্রতিনিধি :পবিত্র ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে নওগাঁর সাপাহার সীমান্ত গলিয়ে চোরাই পথে আসছে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় গরু। কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে এক শ্রেণির চোরাকারবারী এখন ভারত থেকে চোরাই পথে গরু আনতে যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা প্রতি রাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে গিয়ে রাতের অন্ধকারে গরু নিয়ে আসছে। তবে এজন্য তাদেরকে সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি ও স্থানীয় থানাকে ম্যানেজ করেই গরু আমদানী করতে হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক গরু ব্যবসায়ী জানিয়েছেন।

চোরাই পথে ভারত থেকে আনা দেশী আকৃতির গরুগুলো হাটে পর্যাপ্ত পরিমাণ আমদানী হওয়ায় এবার কোরবানীর পশুর দাম সকলের নাগালের মধ্যেই রয়েছে বলে ক্রেতারা দাবি করছেন। তবে মাথায় হাত উঠেছে দেশীয় খামারীদের। বছরের পর বছর খাইয়ে-পরিয়ে প্রতিপালন করে তাদের গবাদী পশুর ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ তাদের। দেশীয় খামারগুলো এবং গৃহস্থের বাড়িতে প্রতিপালিত যত গবাদিপশু রয়েছে, তাতে ভারত থেকে গরু না আনলেও এবারে কোরবানীতে দেশে পশু ঘাটতি হতো না। হাটে কোরবানীর পশুর দামও নাগালের মধ্যেই থাকতো বলে খামার মালিক ও সরকারী একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, অতীতে সাপাহার সীমান্ত দিয়ে অসংখ্য ভারতীয় গরু বাংলাদেশে আনা হতো। কিন্তু গরু ব্যবসায়ীদের কষ্ট করে সুদুর চাঁপাইনবাগঞ্জ থেকে সরকারী ভ্যাট-ট্যাক্সের কাগজ সংগ্রহ করতে হতো। এ কারনে বিগত ২০১৩ সালে সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি সাপাহার উপজেলার সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের সুবিধার্থে উপজেলার খঞ্জনপুর সীমান্তে একটি বিট করিডোর ব্যবস্থা চালু করেন। এর পর মাত্র ৬ মাসে ওই করিডোর থেকে কয়েক কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব আয় হয়। এর পর কতিপয় অসাধু ব্যক্তি সরকারি রাজস্বের তিন/চার গুণ অধিক টাকা চাঁদা হিসেবে আদায় করা শুরু করে এবং বেশ কয়েকজন রাখাল বিএসএফের গুলিতে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় করিডোরটি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিজিবি সদস্যরাও সীমান্তে কঠোর অবস্থানে থাকায় ভারত থেকে গরু আসা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

বর্তমানে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে বিজিবি-বিএফএস ও স্থানীয় থানা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এক শ্রেণির চোরাকারবারী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আবারো রাতের অন্ধকারে ভারতে গিয়ে গরু আনতে শুরু করে। এখন ভারত থেকে আসা গরুগুলি থেকে সরকারি কোষাগারে কোন অর্থ জমা না পড়লেও সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসনের পকেটে মোটা অংকের টাকা জমা পড়ছে বলে অভিযোগ। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।

বর্তমানে রাত হলেই উপজেলার হাপানিয়া, কলমুডাঙ্গা, পাতাড়ী, বামনপাড়া, সোনাডাঙ্গা ও পত্নীতলার উপজেলার হাটশাওলী, রাধানগর, শীতলমাঠ সীমান্ত এলাকাগুলি চোরাকারবারীদের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হচ্ছে। চোরাকারবারী ও তাদের দোসরদের আনাগোনায় প্রায় সারারাত ওই সব এলাকা মুখরিত হয়ে থাকছে বলে সীমান্তে বসবাসকারী জনগণ জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার ও থানা প্রশাসনের সাথে কথা হলে তারা বিষয়টি সম্পুর্ণ রূপে অস্বীকার করেছেন।

বর্তমানে যে ভাবে চোরাকারবারীগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভারত থেকে গরু পাচার করে আনছে তাতে যে কোন সময় সীমান্ত হত্যা সহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে সীমান্তে বসবাসকারী জনগণ ও অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।




(বিএম/এস/সেপ্টেম্বর০৪,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test