E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শ্রীপুরে হোঁচট খাওয়ার পথে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম!

২০১৬ নভেম্বর ০৫ ১৪:৫৬:৫৯
শ্রীপুরে হোঁচট খাওয়ার পথে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম!

রাজীবুল হাসান, গাজীপুর : গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০ টি প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। জ্যেষ্ঠ সহকারি শিক্ষকরা ওই বিদ্যালয়গুলোতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন । এছাড়া এই উপজেলায় সহকারি শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে ৩১টি। প্রতিনিয়ত শিক্ষক অবসরে যাওয়ায় শূন্য পদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। নিয়োগের হদিস না থাকায় অধিকাংশ স্কুলের দাপ্তরিক ও শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, পৌরসভাসহ ৮টি ইউনিয়নে ১৬৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে প্রাক প্রাথমিকসহ মোট শিক্ষক পদ ১০৫৮টি। এর মধ্যে নব ঘোষিতসহ সরকারি মঞ্জুরিকৃত প্রধান শিক্ষকের পদ ১৫৭ টির মধ্যে ৩০টি, সহকারি শিক্ষকের ৯০১টর মধ্যে ৩১টি পদ র্দীঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও পৌর সভায় শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ১৬৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩টি এবতেদায়ী মাদরাসা, ছোট-বড় প্রায় ২৪৮ টি বেসরকারি কিন্টারগার্টেন স্কুল রয়েছে। এই স্কুলগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ৭টি ক্লাস্টারে ভাগ করে পরিচালনা করা হয়।

পদোন্নতি নিয়ে জটিলতার কারণে ২০০৯ সাল থেকে প্রধান শিক্ষক ও ২০১২ সাল থেকে সারা দেশে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। যার ফলে শিক্ষক সংকটে এখানকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর পড়ালেখা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ২০০৯ সালে সহকারী শিক্ষকদের করা রিটের জের ধরে বন্ধ রয়েছে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ। বার বার হাইকোর্টে রিটের কারণে আটকে গেছে পদোন্নতি। এরই মধ্যে শ্রীপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক প্রধান শিক্ষক নিয়োগের চাহিদাপত্র দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে বিলম্ব হচ্ছে।

গাজীপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মেজবাহ্ উদ্দিন বলেন, প্রায় ৫ বছর যাবৎ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। এক সাথে স্কুলের ক্লাস আর দাপ্তরিক কাজ করতে যেয়ে খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার যেখানে ৬টি ক্লাস করার কথা সেখানে ২টি ক্লাসও অনেক সময় করা সম্ভব হয় না। প্রায়ই রাত ১০টা পর্যন্ত স্কুলের কাজ করতে হয়। তাই এসব কিছু বিবেচনা করে সরকার যদি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দিকে দৃষ্টি দিত তাহলে অনেকাংশে আমাদের কষ্ট কমে আসতো।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী অন্যান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা জানান, আমরা সকাল ৯টা থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচ/ছয় ঘন্টা ক্লাস নেই। এছাড়াও বিদ্যালয় বহির্ভূত রাষ্ট্রীয় কাজ যেমন ভোটগ্রহণ, ভোটার তালিকা প্রণয়ন, শিশু জরিপ আদমশুমারিসহ অফিসিয়াল নানা কাজ করে থাকি। নির্ধারিত ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করতে হয়। একদিকে দাপ্তরিক কাজ আবার অন্যদিকে ক্লাস নেওয়া সব মিলিয়ে খুব কষ্ট হয়।

শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো.হারুন অর রশিদ বলেন, শিক্ষকের অভাবে শিক্ষা কার্যক্রম কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আশা করি নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু হলে এসব সমস্যা থাকবে না। দ্রুত শূন্য পদ পূরণ করা না হলে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম সংকটের মধ্যে পড়বে। প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়ার ফলে এ সংকট কিছুটা হলেও দূর হবে বলে তিনি আশাবাদী।

(আরএইচ/এএস/নভেম্বর ০৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test